কলকাতা, 4 এপ্রিল : প্রধানমন্ত্রীর বাড়ির আলো নিভিয়ে বাতি বা প্রদীপ জ্বালানোর বার্তা বৈজ্ঞানিক নয় । এমনই দাবি করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে চিঠি দিলেন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (IIEST) শিবপুরের 53 জন গবেষক এবং পড়ুয়া।
গতকাল এক ভিডিয়ো বার্তায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা করেছিলেন যে, কোরোনার অন্ধকার মুছতে আগামীকাল রাত ন'টায় ন'মিনিটের জন্য দেশবাসী নিজেদের বাড়ির বৈদ্যুতিন আলো নিভিয়ে মোমবাতি বা প্রদীপ জ্বালাবেন ।
আজ প্রধানমন্ত্রীর এই বার্তাকে অবৈজ্ঞানিক বলে দাবি করেন শিবপুরের পড়ুয়ারা । তাঁদের বক্তব্য, "যদি দেশ তথা রাজ্যের প্রচুর সংখ্যক মানুষ উক্ত সময়ে ঘরের সমস্ত বৈদ্যুতিক যন্ত্র এবং আলো বন্ধ করেন তাহলে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যবহার হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যাবে। তাই পাওয়ার গ্রিডগুলির উপর মাত্রাতিরিক্ত চাপ পড়বে । এতে পাওয়ার গ্রিড ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর জেরে রাজ্য তথা দেশে বিদ্যুৎ সংকট দেখা দিতে পারে। যখন রাজ্য সরকার কোরোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ছে, তখন এই বিদ্যুৎ সংকট আবার নতুন করে বিপদ ডেকে আনতে পারে ।তাই প্রধানমন্ত্রীর বার্তার কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।"
তাঁরা জানান, এই কর্মসূচি ঘোষণার মাধ্যমে দেশের মানুষের বৈজ্ঞানিক চেতনার ক্ষতি করছেন মোদি। কোরোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিজ্ঞান নয়, কুসংস্কারের আশ্রয় নিচ্ছেন। ঠিক রাত 9টায় 9মিনিটের জন্য মোমবাতি, প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখলে কী হবে? কোরোনা ভাইরাস মোকাবিলায়, ভারতের ভঙ্গুর স্বাস্থ্যব্যবস্থা, পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশা, ইত্যাদি সংকট নিরসনে মোমবাতি জ্বালানো কীভাবে সাহায্য করবে? কেন নয় মিনিটের জন্য রাত নটায় এই কর্মসূচি পালন করতে হবে, এই সমস্ত প্রশ্নের কোনো উত্তর ভারত সরকারের তরফে দেওয়ার চেষ্টাও করা হয়নি।
আজ এই মর্মেই একটি চিঠি লিখে মুখ্যমন্ত্রী ও বিদ্যুৎমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠান তাঁরা । তাঁদের প্রত্যাশা, এর মাধ্যমে সচেতন হবেন মানুষজন ।