কলকাতা, 15 জুলাই: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সাংসদ পদ খারিজের দাবিতে এবার লোকসভার অধ্যক্ষকে চিঠি দিলেন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ ৷ একই সঙ্গে, লোকসভার অধ্যক্ষকে চিঠিতে বিজেপি সাংসদ জানিয়েছেন, সাংসদদের সংবিধানের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকা উচিৎ ৷ কলকাতা হাইকোর্টের উদ্দেশে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য ভারতের সংবিধানের পাশাপাশি বিচার ব্যবস্থার প্রতিও অবমাননার সামিল বলেও জানান তিনি ৷ এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ারও আর্জি জানিয়েছেন সৌমিত্র খাঁ ৷
শুক্রবার এসএসকেএম হাসপাতালে আক্রান্ত দলীয় কর্মীদের দেখতে গিয়ে বিচারব্যবস্থার বিরুদ্ধে নজিরবিহীন আক্রমণ শানান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷ এমনকী কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতির উদ্দেশে অভিযোগ করে অভিষেক জানান, সমাজবিরোধীদের কার্যত রক্ষাকবচ দিচ্ছে আদালত ৷ সেই বক্তব্যের প্রেক্ষিতেই এবার সরাসরি লোকসভার অধ্যক্ষের কাছে একগুচ্ছ অভিযোগ-সহ তৃণমূল সাংসদের সদস্যপদ খারিজের আবেদন জানালেন সৌমিত্র খাঁ ৷
সেই চিঠি টুইটে পোস্ট করে সৌমিত্র লেখেন, "সংসদ সদস্য হিসেবে আমাদের কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলা উচিত। যেভাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মহামান্য হাইকোর্ট সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছেন, এটা আমাদের বিচারবিভাগ বা আমাদের সংবিধানের জন্য অপমানজনক।" একইসঙ্গে, লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লাকে চিঠি দিয়ে তিনি অভিষেকের বিরুদ্ধে সঠিক পদক্ষেপের জন্যও আবেদন জানিয়েছেন ৷
সৌমিত্র খাঁয়ের দাবি, ভারতের গণতন্ত্র দাঁড়িয়ে রয়েছে বিচারব্যবস্থার উপর। সেই বিচারব্যবস্থাকে কার্যত আঘাত করতে চেয়েছেন অভিষেক। আগামী সোমবার এই বিষয়ে সৌমিত্র এফআইআর দায়ের করবেন বলেও জানিয়েছেন। এদিন লোকসভার স্পিকারকে চিঠিতে বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ লিখেছেন, "পশ্চিমবঙ্গে সংবিধানকে জোর জবরদস্তি দমন করছে তৃণমূল সরকার। সংবিধানের অস্তিত্ব আক্রান্ত হচ্ছে। শুক্রবার ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক হাইকোর্টের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছেন, যা অবমাননাকর। এইভাবে অভিষেক কলকাতা হাইকোর্ট এবং সংবিধানকে অবমাননা করেছেন ৷"
আরও পড়ুন: 32 হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি আছে কি না? 7 জুলাই শীর্ষ আদালতের নির্দেশে ধন্দ
যেদিন সৌমিত্র অভিষেকের বিরুদ্ধে চিঠি দিয়েছেন, সেদিনই ফের রাজ্যের শাসকদলের পক্ষ থেকে আরও একবার রাজ্যের বিচারব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। শনিবার বালি এসে একইভাবে আদালতের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন। তিনি বলেন, "রাজ্যে বিচারব্যবস্থা যে পদ্ধতিতে চলছে তাতে গণতন্ত্রের তৃতীয় স্তম্ভের নিরপেক্ষতা বজায় আছে কি না, তাই প্রশ্নের মুখে। দেশ তথা রাজ্যের বিচারব্যবস্থার আচার-আচরণ, কথাবার্তা যেভাবে বলা হচ্ছে তাতে সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন উঠছে ৷"