কলকাতা, 24 অক্টোবর: ঘুম জড়ানো চোখে ঘরের দরজা খুলতেই অবাক উত্তর কলকাতার একাধিক শতাব্দী প্রাচীন বাড়ির বাসিন্দা (Community Love)। বাড়ির বারান্দায়, বাইরের অংশে আলপনা (Spreading Love Via Alpana) এঁকে গিয়েছেন কেউ । উত্সবের আবহে আলপনা দেখে যতটা অবাক হয়েছেন, ঠিক ততটাই খুশি হয়েছেন ওই সমস্ত বাড়ির বাসিন্দারা ।
রত্নাবলী ঘোষ । সত্তরোর্ধ্ব প্রাক্তন স্কুল শিক্ষিকা থাকেন দক্ষিণ কলকাতার দেশপ্রিয় পার্ক সংলগ্ন এক আবাসনে । সেখান শনিবার সকালে বন্ধু মুদ্দার পাথেরিয়ার সঙ্গে গাড়িতে চেপে রওনা দেন উত্তর কলকাতায় । শ্যামবাজার, আমহার্স্ট স্ট্রিট এলাকায় একাধিক বাড়িতে আলপনা আঁকেন রত্নাবলী ঘোষ । বাড়ির মালিককে না জানিয়েই । যার মধ্যে একটি বাড়ির বয়স 142 বছর এবং অপর বাড়ির বয়স 112 বছর । রত্নাবলী ঘোষ বললেন, "শনিবার উত্তর কলকাতার দশটি ও রবিবার দক্ষিণ কলকাতার দশটি বাড়িতে আলপনা (Diwali Alpana) এঁকেছি । আমি আপ্লুত বন্ধু মুদ্দার আমাকে এই কাজে উৎসাহিত করেছেন ।"
না জানিয়ে কারও বাড়িতে আলপনা আঁকতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হননি ? প্রশ্নের উত্তরে একমুখ হাসি নিয়ে রত্নাবলী ঘোষ বলেন "যতটা বাধা পেয়েছি, তার থেকে কয়েকগুণ বেশি আনন্দ পেয়েছি । এত সকালে যাঁর বাড়িতে আলপনা এঁকেছি, তাঁরা হয়তো ঘুম থেকেই ওঠেননি । কিন্তু পথচলতি অনেক মানুষ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আমার কাজ দেখেছেন । একজন বয়স্ক লোক প্রথমে বারান্দা থেকে সরে যেতে বলেছিলেন । পরে তিনিই আবার হাসিমুখে আলপনার ছবি তোলেন । আমরা নাম-পরিচয়-ধর্ম না জেনেই আলপনা এঁকেছি । কারণ, যে কোনও উত্সব বা ভালো কাজের শুরুতে আলপনা দেওয়া হয় । সেটাই করেছি । যাতে আলপনা নিয়ে হাসিমুখে আলোচনার পরিধি বাড়ে ।"
আরও পড়ুন: 4 হাজারেরও বেশি মাটির প্রদীপ ও 6 টন বালিতে কালী প্রতিমা বানালেন সুদর্শন
রত্নাবলী ঘোষ জানালেন, তিনি তাঁর মায়ের থেকেই আলপনা আঁকা শিখেছেন । তারপর থেকেই আজও কালী পুজো-সহ একাধিক উত্সবে আলপনা আঁকেন । তবে, যেভাবে অজানা, অচেনা বাড়ির বান্দায় আলপনা আঁকলেন, তাতে উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতার মধ্যে সেতুবন্ধন হয়েছে ৷ তেমনই ঘুম থেকে উঠেই নিজের বাড়িতে এত সুন্দর আলপনা দেখে সবার মন যে ভালো হয়ে গিয়েছে তাতে কোনও সন্দেহ নেই ৷