ETV Bharat / state

Adivasi Bangla Bandh: কুড়মিদের দাবির প্রতিবাদে বাংলা বনধ পালিত আদিবাসীদের, অবরোধ জেলায় জেলায় - undefined

কুড়মিরা এসটি তালিকার অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য যে আন্দোলন চালাচ্ছে, তার বিরোধিতা করে বাংলা বনধ পালন করল আদিবাসী সমাজ ৷ বনধের সমর্থনে জেলায় জেলায় চলল পথ অবরোধ ৷

Adivasi Bangla Bandh
Adivasi Bangla Bandh
author img

By

Published : Jun 8, 2023, 6:11 PM IST

কুড়মিদের দাবির প্রতিবাদে বাংলা বনধ পালিত আদিবাসীদের

কলকাতা, 8 জুন: কুড়মিরা যখন এসটি-র দাবিতে জোরদার আন্দোলন করছে, ঠিক সেই সময়ই তাদের তফশিলি উপজাতিভুক্ত করা যাবে না, এই দাবিতে 12 ঘণ্টা বাংলা বনধের ডাক দিয়েছিল 25টি আদিবাসী গণ সংগঠনের যৌথ মঞ্চ । বৃহস্পতিবার সেই বনধের মিশ্র প্রভাব পড়েছে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ৷ বনধের সমর্থনে বিক্ষোভে শামিল হন আদিবাসী সমাজের মানুষজন ৷ এর ফলে রাস্তাঘাটে যানজটের সৃষ্টি হয় ৷ ভোগান্তির মুখে পড়তে হয় মানুষকে ৷ সরকারের পক্ষ থেকে যদি কুড়মি সম্প্রদায়কে তপশিলি উপজাতিভুক্ত করা হয়, তাহলে গোটা রাজ্যজুড়ে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষেরা আরও বৃহত্তর আন্দোলন করবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বনধ সমর্থকরা ।

পূর্ব বর্ধমান

পূর্ব বর্ধমানের মেমারিতে আদিবাসী সমাজ শিক্ষণ ও সাংস্কৃতিক সমিতির ডাকে পথ অবরোধ করা হয় । বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই মেমারি চেকপোস্টে অবরোধ শুরু হয় । তার জেরে রাস্তায় বাস ও অন্যান্য যানবাহন আটকে পড়ে । ভোগান্তিতে পড়তে হয় মানুষকে ৷

পশ্চিম বর্ধমান

শিল্প শহর দুর্গাপুরেও আদিবাসী সম্প্রদায়ের এই বনধের প্রভাব পড়ল । দোকানপাট বন্ধ না হলেও আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষেরা দুর্গাপুরের বেশ কয়েকটি ব্যস্ততম রাস্তা সকাল থেকেই অবরোধ করেন । আদিবাসী মহিলাদেরও আন্দোলনে শামিল হতে দেখা গেল । দুর্গাপুরের কমলপুর, হেতেডোবা, জব্বরপল্লি, রঘুনাথপুর, পলাশডিহা-সহ বহু জায়গায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন চালান আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষজন।

আদিবাসী সম্প্রদায়ের নেতা দুর্গা দাস বাস্কে বলেন, "আমরা বিগত বেশ কয়েক মাস ধরে লক্ষ্য করছি, কুড়মি সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষেরা আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত হওয়ার জন্য রেল অবরোধ থেকে শুরু করে রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করছেন । তাঁরা কোনওভাবেই তপশিলি উপজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত হতে পারবেন না । কারণ আদিবাসী তালিকাভুক্ত হতে যে সমস্ত বিশেষ বিশেষ পাঁচটি লক্ষণ থাকা জরুরি , তার কোনওটির মধ্যেই কুড়মি সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষেরা পড়ে না । উলটে তারা লাগাতার সরকারকে চাপ সৃষ্টি করে যাচ্ছে । আমরা তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতেই আজ বাংলা বনধ ডেকেছি ।"

আরও পড়ুন: একাধিক দাবিতে আদিবাসী ফোরামের ডাকা বনধ জঙ্গলমহলে, ব্রাত্য কুড়মিরা

হুগলি

হুগলির বিভিন্ন জায়গাতেও বনধের সমর্থনে রাস্তা অবরোধ করেন আদিবাসীরা । পান্ডুয়া জিটি রোডের কালনা মোড়ে ও বলাগর ফুলপুকুরে টানা চার ঘণ্টা ধরে অবরোধ চলে । তার জেরে বিজেপির সর্বভরাতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ অসম লিঙ্ক রোড ধরে যাওয়ার সময় আটকে পড়েন ৷ বেশ কিছুক্ষণ আদিবাসীদের দাবি শোনেন তিনি । তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাসও দেন । পরে তিনি কৃষ্ণনগরের দিকে রওনা দেন ।

পশ্চিম মেদিনীপুর

এ দিন সকাল থেকেই আদিবাসীদের ডাকা বনধের জেরে কার্যত স্তব্ধ হয়ে গেল জঙ্গলমহলের জনজীবন । ঝাড়গ্রাম জেলার 16টি জায়গায় পথ অবরোধ করেন আদিবাসী সমাজের মানুষেরা । রাজ্য সড়কের পাশাপাশি কলকাতা-মুম্বই 6 নম্বর জাতীয় সড়কেও অবরোধ করা হয় । দোকানবাজারও ছিল বন্ধ । ঝাড়গ্রাম শহরের জুবলি মার্কেট, কোর্ট রোড, সবজি মার্কেট, মাছ মার্কেট ছাড়াও মেইন রোডের উপরের সমস্ত দোকান বন্ধ । খোলা আছে কেবলমাত্র ওষুধের দোকানগুলি ।

ঝাড়গ্রাম শহরের প্রাণকেন্দ্র পাঁচ মাথার মোড়ে যেখানে সকাল হলেই দূরপাল্লার বাসের লাইন লেগে যায়, সেখানে সকালে একটি মাত্র সরকারি বাস দেখা গেলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাও অমিল হয়ে যায় । ঝাড়গ্রাম শহরে প্রবেশের মুখে সারদাপীঠ মোড়ে ব্যারিকেড রেখে রাস্তা অবরোধ করেন আদিবাসীরা । বিনপুর 1 নম্বর ব্লকের দহিজুড়ি, লালগড়, রামগড়ে রাস্তা অবরুদ্ধ থাকে দীর্ঘ সময় । বিনপুর 2 নম্বর ব্লকের শিলদা, বেলপাহাড়ি , চাকাডুবা এছাড়াও জামবনি ব্লকের বিভিন্ন রাস্তায় অবরোধ চলে । অপরদিকে সাঁকরাইল, গোপীবল্লভপুরেও অবরোধ করে আদিবাসী সমাজ । কলকাতা-মুম্বই 6 নম্বর জাতীয় সড়কের ফেকোঘাট ও গজাশিমূলেও অবরোধ করা হয়েছে । যার জেরে রাস্তার দুই পাশে সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে দূরপাল্লার বহু পণ্যবাহী লরি ।

আদিবাসী কল্যাণ সমিতির ঝাড়গ্রাম শাখার চেয়ারপার্সন মনোজকুমার মান্ডি বলেন, "ক্ষত্রিয় কুড়মিদের সরকার চক্রান্ত করে এসটি করতে চাইছে, তার প্রতিবাদে আমাদের সমস্ত আদিবাসীদের সংগঠন একত্রিত হয়ে 12 ঘণ্টা বাংলা বনধের ডাক দিয়েছে । আজ সকাল থেকে বনধের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে । জরুরি পরিষেবাগুলিকে আমরা ছাড় দিয়েছি, যেমন অ্যাম্বুলেন্স, জলের গাড়ি ও দুধের গাড়ি ৷"

আরও পড়ুন: কুড়মিদের আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত না-করার দাবি, বুধবার আদিবাসী সংগঠনের ডাকে বাংলা বনধ

চন্দ্রকোনার ক্ষীরপাইয়ের হালদারদিঘির মোড়ে রাজ্য সড়ক অবরোধ করে ভারত জাকাত মাঝি পরগনা মহল । সকাল থেকে ঘাটাল-চন্দ্রকোনা ও ক্ষীরপাই-আরামবাগ রাজ্যসড়কের সংযোগস্থল ক্ষীরপাইয়ের হালদারদিঘি মোড়ে ব্যারিকেড করে পথ অবরোধে শামিল হয় তারা । এ ছাড়াও পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনির বেশ কয়েকটি এলাকা, মেদিনীপুর সদরের কেরানিচটি, খড়গপুরের চৌরঙ্গী,ডেবরার বেশকিছু এলাকা, নারায়ণগড়,কেশিয়াড়ী পিংলা-সহ বিভিন্ন স্থানে আদিবাসীদের বনধের সমর্থনে পথ অবরোধ হয় ৷

পুরুলিয়া

আদিবাসীদের বনধের প্রভাব পড়ে পুরুলিয়াতেও ৷ ভারত জাকাত মাঝি পরগণা মহলের অন্যতম নেতা রাজেশ্বর টুডু জানিয়েছেন, "জেলার মোট 19টি জায়গায় এই বনধকে সফল করার ডাক দেওয়া হয়েছে । ভোটের রাজনীতির স্বার্থে যদি কুড়মি সমাজের সিআরআই রিপোর্ট নিয়ে ভুল তথ্য পরিবেশিত হয়, তাহলে কিন্তু তার ফল ভালো হবে না । তাদের সিআরআই রিপোর্ট কেন্দ্র থেকে তিনবার ফেরত পাঠিয়ে দেওয়ার পরও কেন এটা নিয়ে নানা রাজনৈতিক নেতা কুড়মিদের হয়ে সওয়াল করছেন, এই সব কিছুর প্রতিবাদেই আমাদের এই বনধ ।"

জেলার কয়েকটি জায়গায় এ দিন বিক্ষিপ্তভাবে কিছু দোকানপাট খুললেও পথে যানবাহন সংখ্যায় কম চলেছে ৷ আদিবাসী সংগঠনগুলির দাবি,বনধে যথেষ্ট ভালো সাড়া মিলেছে | এ দিন যেহেতু জেলার কোনও রুটেই বাস চলাচল করেনি, তাই জনতাকে দুর্ভোগের শিকার হতে হয় ।

দার্জিলিং

সারা রাজ্যের পাশাপাশি শিলিগুড়ি মহকুমাতেও আদিবাসীদের ডাকা বনধের প্রভাব পড়ল ৷ শিলিগুড়ি সংলগ্ন ফাঁসিদেওয়া ব্লকের ঘোষপুকুরে এশিয়ান হাইওয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় আদিবাসী ইউনাইটেড ফোরাম । আদিবাসীদের পথ অবরোধের জেরে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় । তীর ধনুক, ধামসা মাদল নিয়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন আদিবাসীরা । খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ফাঁসিদেওয়ার বিশাল পুলিশ বাহিনী । উপস্থিত হন ডিএসপি ( গ্রামীণ) অচিন্ত্য গুপ্ত, ফাঁসিদেওয়ার বিডিও সঞ্জু গুহ মজুমদার। পরে পুলিশ প্রশাসনের তরফে আশ্বাস দেওয়া হলে প্রায় তিন ঘণ্টা পর বনধ তুলে নেওয়া হয় ।

এই বিষয়ে পরেশ হেমব্রম বলেন, "আদিবাসীদের ইতিহাস বিকৃত করা হচ্ছে । কুড়মিদের কোনওভাবে আদিবাসী তালিকাভুক্ত করা যাবে না । এই দাবিতে আমাদের বনধ ও রাস্তা অবরোধ ।" বিডিও সঞ্জু গুহ মজুমদার বলেন, "তাঁদের দাবি জেলাশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে । তাঁদের আশ্বাস দেওয়া হলে তাঁরা পথ অবরোধ তুলতে রাজি হন ।"

কুড়মিদের দাবির প্রতিবাদে বাংলা বনধ পালিত আদিবাসীদের

কলকাতা, 8 জুন: কুড়মিরা যখন এসটি-র দাবিতে জোরদার আন্দোলন করছে, ঠিক সেই সময়ই তাদের তফশিলি উপজাতিভুক্ত করা যাবে না, এই দাবিতে 12 ঘণ্টা বাংলা বনধের ডাক দিয়েছিল 25টি আদিবাসী গণ সংগঠনের যৌথ মঞ্চ । বৃহস্পতিবার সেই বনধের মিশ্র প্রভাব পড়েছে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ৷ বনধের সমর্থনে বিক্ষোভে শামিল হন আদিবাসী সমাজের মানুষজন ৷ এর ফলে রাস্তাঘাটে যানজটের সৃষ্টি হয় ৷ ভোগান্তির মুখে পড়তে হয় মানুষকে ৷ সরকারের পক্ষ থেকে যদি কুড়মি সম্প্রদায়কে তপশিলি উপজাতিভুক্ত করা হয়, তাহলে গোটা রাজ্যজুড়ে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষেরা আরও বৃহত্তর আন্দোলন করবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বনধ সমর্থকরা ।

পূর্ব বর্ধমান

পূর্ব বর্ধমানের মেমারিতে আদিবাসী সমাজ শিক্ষণ ও সাংস্কৃতিক সমিতির ডাকে পথ অবরোধ করা হয় । বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই মেমারি চেকপোস্টে অবরোধ শুরু হয় । তার জেরে রাস্তায় বাস ও অন্যান্য যানবাহন আটকে পড়ে । ভোগান্তিতে পড়তে হয় মানুষকে ৷

পশ্চিম বর্ধমান

শিল্প শহর দুর্গাপুরেও আদিবাসী সম্প্রদায়ের এই বনধের প্রভাব পড়ল । দোকানপাট বন্ধ না হলেও আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষেরা দুর্গাপুরের বেশ কয়েকটি ব্যস্ততম রাস্তা সকাল থেকেই অবরোধ করেন । আদিবাসী মহিলাদেরও আন্দোলনে শামিল হতে দেখা গেল । দুর্গাপুরের কমলপুর, হেতেডোবা, জব্বরপল্লি, রঘুনাথপুর, পলাশডিহা-সহ বহু জায়গায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন চালান আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষজন।

আদিবাসী সম্প্রদায়ের নেতা দুর্গা দাস বাস্কে বলেন, "আমরা বিগত বেশ কয়েক মাস ধরে লক্ষ্য করছি, কুড়মি সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষেরা আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত হওয়ার জন্য রেল অবরোধ থেকে শুরু করে রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করছেন । তাঁরা কোনওভাবেই তপশিলি উপজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত হতে পারবেন না । কারণ আদিবাসী তালিকাভুক্ত হতে যে সমস্ত বিশেষ বিশেষ পাঁচটি লক্ষণ থাকা জরুরি , তার কোনওটির মধ্যেই কুড়মি সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষেরা পড়ে না । উলটে তারা লাগাতার সরকারকে চাপ সৃষ্টি করে যাচ্ছে । আমরা তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতেই আজ বাংলা বনধ ডেকেছি ।"

আরও পড়ুন: একাধিক দাবিতে আদিবাসী ফোরামের ডাকা বনধ জঙ্গলমহলে, ব্রাত্য কুড়মিরা

হুগলি

হুগলির বিভিন্ন জায়গাতেও বনধের সমর্থনে রাস্তা অবরোধ করেন আদিবাসীরা । পান্ডুয়া জিটি রোডের কালনা মোড়ে ও বলাগর ফুলপুকুরে টানা চার ঘণ্টা ধরে অবরোধ চলে । তার জেরে বিজেপির সর্বভরাতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ অসম লিঙ্ক রোড ধরে যাওয়ার সময় আটকে পড়েন ৷ বেশ কিছুক্ষণ আদিবাসীদের দাবি শোনেন তিনি । তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাসও দেন । পরে তিনি কৃষ্ণনগরের দিকে রওনা দেন ।

পশ্চিম মেদিনীপুর

এ দিন সকাল থেকেই আদিবাসীদের ডাকা বনধের জেরে কার্যত স্তব্ধ হয়ে গেল জঙ্গলমহলের জনজীবন । ঝাড়গ্রাম জেলার 16টি জায়গায় পথ অবরোধ করেন আদিবাসী সমাজের মানুষেরা । রাজ্য সড়কের পাশাপাশি কলকাতা-মুম্বই 6 নম্বর জাতীয় সড়কেও অবরোধ করা হয় । দোকানবাজারও ছিল বন্ধ । ঝাড়গ্রাম শহরের জুবলি মার্কেট, কোর্ট রোড, সবজি মার্কেট, মাছ মার্কেট ছাড়াও মেইন রোডের উপরের সমস্ত দোকান বন্ধ । খোলা আছে কেবলমাত্র ওষুধের দোকানগুলি ।

ঝাড়গ্রাম শহরের প্রাণকেন্দ্র পাঁচ মাথার মোড়ে যেখানে সকাল হলেই দূরপাল্লার বাসের লাইন লেগে যায়, সেখানে সকালে একটি মাত্র সরকারি বাস দেখা গেলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাও অমিল হয়ে যায় । ঝাড়গ্রাম শহরে প্রবেশের মুখে সারদাপীঠ মোড়ে ব্যারিকেড রেখে রাস্তা অবরোধ করেন আদিবাসীরা । বিনপুর 1 নম্বর ব্লকের দহিজুড়ি, লালগড়, রামগড়ে রাস্তা অবরুদ্ধ থাকে দীর্ঘ সময় । বিনপুর 2 নম্বর ব্লকের শিলদা, বেলপাহাড়ি , চাকাডুবা এছাড়াও জামবনি ব্লকের বিভিন্ন রাস্তায় অবরোধ চলে । অপরদিকে সাঁকরাইল, গোপীবল্লভপুরেও অবরোধ করে আদিবাসী সমাজ । কলকাতা-মুম্বই 6 নম্বর জাতীয় সড়কের ফেকোঘাট ও গজাশিমূলেও অবরোধ করা হয়েছে । যার জেরে রাস্তার দুই পাশে সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে দূরপাল্লার বহু পণ্যবাহী লরি ।

আদিবাসী কল্যাণ সমিতির ঝাড়গ্রাম শাখার চেয়ারপার্সন মনোজকুমার মান্ডি বলেন, "ক্ষত্রিয় কুড়মিদের সরকার চক্রান্ত করে এসটি করতে চাইছে, তার প্রতিবাদে আমাদের সমস্ত আদিবাসীদের সংগঠন একত্রিত হয়ে 12 ঘণ্টা বাংলা বনধের ডাক দিয়েছে । আজ সকাল থেকে বনধের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে । জরুরি পরিষেবাগুলিকে আমরা ছাড় দিয়েছি, যেমন অ্যাম্বুলেন্স, জলের গাড়ি ও দুধের গাড়ি ৷"

আরও পড়ুন: কুড়মিদের আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত না-করার দাবি, বুধবার আদিবাসী সংগঠনের ডাকে বাংলা বনধ

চন্দ্রকোনার ক্ষীরপাইয়ের হালদারদিঘির মোড়ে রাজ্য সড়ক অবরোধ করে ভারত জাকাত মাঝি পরগনা মহল । সকাল থেকে ঘাটাল-চন্দ্রকোনা ও ক্ষীরপাই-আরামবাগ রাজ্যসড়কের সংযোগস্থল ক্ষীরপাইয়ের হালদারদিঘি মোড়ে ব্যারিকেড করে পথ অবরোধে শামিল হয় তারা । এ ছাড়াও পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনির বেশ কয়েকটি এলাকা, মেদিনীপুর সদরের কেরানিচটি, খড়গপুরের চৌরঙ্গী,ডেবরার বেশকিছু এলাকা, নারায়ণগড়,কেশিয়াড়ী পিংলা-সহ বিভিন্ন স্থানে আদিবাসীদের বনধের সমর্থনে পথ অবরোধ হয় ৷

পুরুলিয়া

আদিবাসীদের বনধের প্রভাব পড়ে পুরুলিয়াতেও ৷ ভারত জাকাত মাঝি পরগণা মহলের অন্যতম নেতা রাজেশ্বর টুডু জানিয়েছেন, "জেলার মোট 19টি জায়গায় এই বনধকে সফল করার ডাক দেওয়া হয়েছে । ভোটের রাজনীতির স্বার্থে যদি কুড়মি সমাজের সিআরআই রিপোর্ট নিয়ে ভুল তথ্য পরিবেশিত হয়, তাহলে কিন্তু তার ফল ভালো হবে না । তাদের সিআরআই রিপোর্ট কেন্দ্র থেকে তিনবার ফেরত পাঠিয়ে দেওয়ার পরও কেন এটা নিয়ে নানা রাজনৈতিক নেতা কুড়মিদের হয়ে সওয়াল করছেন, এই সব কিছুর প্রতিবাদেই আমাদের এই বনধ ।"

জেলার কয়েকটি জায়গায় এ দিন বিক্ষিপ্তভাবে কিছু দোকানপাট খুললেও পথে যানবাহন সংখ্যায় কম চলেছে ৷ আদিবাসী সংগঠনগুলির দাবি,বনধে যথেষ্ট ভালো সাড়া মিলেছে | এ দিন যেহেতু জেলার কোনও রুটেই বাস চলাচল করেনি, তাই জনতাকে দুর্ভোগের শিকার হতে হয় ।

দার্জিলিং

সারা রাজ্যের পাশাপাশি শিলিগুড়ি মহকুমাতেও আদিবাসীদের ডাকা বনধের প্রভাব পড়ল ৷ শিলিগুড়ি সংলগ্ন ফাঁসিদেওয়া ব্লকের ঘোষপুকুরে এশিয়ান হাইওয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় আদিবাসী ইউনাইটেড ফোরাম । আদিবাসীদের পথ অবরোধের জেরে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় । তীর ধনুক, ধামসা মাদল নিয়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন আদিবাসীরা । খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ফাঁসিদেওয়ার বিশাল পুলিশ বাহিনী । উপস্থিত হন ডিএসপি ( গ্রামীণ) অচিন্ত্য গুপ্ত, ফাঁসিদেওয়ার বিডিও সঞ্জু গুহ মজুমদার। পরে পুলিশ প্রশাসনের তরফে আশ্বাস দেওয়া হলে প্রায় তিন ঘণ্টা পর বনধ তুলে নেওয়া হয় ।

এই বিষয়ে পরেশ হেমব্রম বলেন, "আদিবাসীদের ইতিহাস বিকৃত করা হচ্ছে । কুড়মিদের কোনওভাবে আদিবাসী তালিকাভুক্ত করা যাবে না । এই দাবিতে আমাদের বনধ ও রাস্তা অবরোধ ।" বিডিও সঞ্জু গুহ মজুমদার বলেন, "তাঁদের দাবি জেলাশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে । তাঁদের আশ্বাস দেওয়া হলে তাঁরা পথ অবরোধ তুলতে রাজি হন ।"

For All Latest Updates

TAGGED:

adibasi
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.