কলকাতা, 9 জানুয়ারি: প্রতি বছরের মতো এবারও বাবুঘাট থেকে গঙ্গাসাগর মেলার উদ্বোধন করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । একইসঙ্গে বৃহস্পতিবার দেশের প্রথম ইলেকট্রিক ভেসেল উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "আজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে 17 জানুয়ারি পর্যন্ত গঙ্গাসাগরে এই মেলা চলবে। 8 থেকে 17 জানুয়ারি পর্যন্ত মেলা প্রাঙ্গণে আসা তীর্থযাত্রী এবং সাংবাদিকদের জন্য জীবনবীমা-সহ ইতিমধ্যে প্রশাসনের তরফে একগুচ্ছ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। যারা বিভিন্ন রাজ্য থেকে গঙ্গাসাগর মেলায় আসছেন তারা ধীরে ধীরে আসুন এখান থেকে ট্রেন বা বাসের মাধ্যমে গঙ্গাসাগরে যান ৷ পুণ্যস্নান করে ফিরে আসুন । প্রতি বছরের মতো সরকার বাবুঘাট থেকে শুরু করে গঙ্গাসাগর বিভিন্ন জায়গায় তীর্থযাত্রীদের জন্য হেল্প ডেস্ক তৈরি করেছে ।"
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী গঙ্গাসাগর মেলায় যা ব্যবস্থা থাকছে :
- মেলায় যাতায়াতের যাতে অসুবিধা না হয় মুড়িগঙ্গা ড্রেসিং করে গঙ্গার গভীরতা বাড়ানো হয়েছে ৷ যার ফলে এখন 24 ঘণ্টার মধ্যে 20 ঘণ্টায় লঞ্চ চলাচল সম্ভব হচ্ছে । পুণ্যার্থীদের জন্য 2250টি সরকারি বাস, 250টি বেসরকারি বাসে, ন'টি বার্জ, 32টি ভেসেল ব্যবস্থা করা হয়েছে । এছাড়া 100টি লঞ্চ, 21টি জেটি ব্যবহার করা হচ্ছে ৷ সব ভেসেল, বার্জ ও লঞ্চে জিপিএস ট্র্যাকিং ও স্যাটেলাইট ট্র্যাকিংয়ের ব্যবস্থা থাকছে । যাতে কুয়াশার কারণে তীর্থযাত্রীদের নদী পার হতে অসুবিধা না হয় তার জন্য ফগ লাইটের ব্যবস্থাও করা হয়েছে । যে কোনও সমস্যায় সাহায্যের জন্য, 2500 ভলান্টিয়ার নিয়োগ করা হচ্ছে ।
- এছাড়া অসুস্থ হয়ে গেলে চিকিৎসার জন্য 515টি বেডের ব্যবস্থা করা হয়েছে সাগরে । এছাড়া নিরাপত্তার কথা ভেবে সিসিটিভিও থাকছে জায়গায় । থাকছেন পর্যাপ্ত পরিমাণে ডাক্তার নার্স এবং প্যারামেডিক্যাল স্টাফ । অসুস্থ হয়ে গেলে যাতে রোগীকে দ্রুত কলকাতায় নিয়ে আসা যায় তার জন্য একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, চারটি ওয়াটার অ্যাম্বুলেন্স এবং 61টি অ্যাম্বুলেন্স ছাড়াও ক্রিটিক্যাল রোগীর জন্য গ্রিন করিডোরের ব্যবস্থা থাকছে ।
- গঙ্গাসাগর মেলা চলাকালীন 5/6 জন প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি থাকবেন । 10 জন মন্ত্রীর গঙ্গাসাগরে চার পাঁচ জন থাকবেন বাকিরা লট এইট কচুবেড়িয়াতে । সরকারের লক্ষ্য গঙ্গাসাগরকে পরিবেশবান্ধব মেলা হিসেবে তৈরি করা । যার জন্য পুজো সামগ্রী বহনে বায়ো-ডিগ্রেডেবল ক্যারি ব্যাগ দেওয়া হবে ।
- তীর্থযাত্রীদের মেলা প্রাঙ্গণে আগুন না জ্বালানোর জন্য অনুরোধ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । এতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা । যেহেতু সিসিটিভির নজরদারি এবং ভলান্টিয়ারদের উপস্থিতি থাকছে তাই মেলার মাঠে আগুন ধরানোর ঘটনা চোখে পড়লে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার যে ইলেকট্রিক ভেসেল উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী সেটি তৈরি করতে মূলত সাড়ে 13 কোটি টাকা খরচ হয়েছে রাজ্য সরকারের । এই ইলেকট্রিক ভেসেল তৈরি করেছে গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্স । এই ই-ভেসেলটিতে এসি এবং নন এসি দুই ধরনের পরিষেবা থাকছে । এসিতে যেতে পারবেন 30 জন যাত্রী এবং নন এসিতে 62 জন যাত্রী নেওয়া যাবে । পরিবহণ দফতর সূত্রে যতটুকু জানা যাচ্ছে, তাতে আপাতত মিলেনিয়াম পার্ক থেকে বেলুড় মঠ হয়ে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত যাবে এই ইলেকট্রনিক ভেসেল । পরিবেশ দূষণ কমাতে বিশেষভাবে সাহায্য করবে বিদ্যুৎচালিত এই ভেসেল । আগামী দিনে আরও 12টি ই-ভেসেল এবং 12টি বার্জ চালানো হবে । এজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে ।