কলকাতা , 23 মে : আমফানের জেরে বিপর্যস্ত শহর কলকাতা । এখনও তার প্রভাব শহরের সর্বত্র ।কোথাও জমে আছে হাঁটু জল । কোথাও আবার সেই জলের জন্যই হাহাকার । এখনও বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন শহরের বহু অংশে। সব মিলিয়ে আমফানের চার দিন পরেও বিপর্যস্ত নগর জীবন । ফলে ধৈর্যের বাঁধ ভাঙছে । মানুষ পথে নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন । কোথাও হচ্ছে অবরোধ।
আজ সকালেই সিঁথির মোড়ে বিক্ষোভ দেখায় স্থানীয় জনতা । তারপর এই বিক্ষোভ শুরু হয় নেতাজি নগরের টেগোর পার্কে । এই এলাকায় এখনও পর্যন্ত বিদ্যুৎ আসেনি । মিলছে না কর্পোরেশনের জল । ফলে শৌচাগারে ব্যবহারের জল নেই । পানীয় জলের জন্য রয়েছে তীব্র হাহাকার । তার জেরে আজ পথ অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা । অবরোধকারীদের একজন সৌরভ গুহ-র মা বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ । মূত্রাশয়ের সমস্যা আছে বলে জানালেন তিনি । কিন্তু এখন জল না থাকায় রীতিমতো বিপর্যস্ত অবস্থা গুহ পরিবারের । চারতলা আবাসনের কোনও ঘরে জল নেই । বিদ্যুৎ না থাকায় পাম্প চালানো যাচ্ছে না ।
সৌরভ বলেন, “ কর্পোরেশনকে বারবার জানিয়েছি । খবর দেওয়া হয়েছে নেতাজি নগর থানায় । CESC- র অফিসে গিয়েও অনুরোধ করা হয়েছে দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার জন্য । কিন্তু কোনও কাজ হয়নি । স্থানীয় কাউন্সিলর আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন । কিন্তু কাজের কাজ হচ্ছে না । যতক্ষণ পর্যন্ত না বিদ্যুৎ আসবে আমরা রাস্তাতেই বসে থাকব ।" অবশ্য পরে নেতাজি নগর থানার পুলিশ এসে বুঝিয়ে তাঁদের বাড়ি পাঠায় ।
একই ছবি বেহালাতেও । জল এবং বিদ্যুতের দাবিতে বেহালার বকুলতলাতে তিন ঘণ্টা ধরে রাস্তা অবরোধ করে রাখেন বাসিন্দারা । কসবার হালতুতে একই ঘটনা । EM বাইপাস লাগোয়া আনন্দপুর এলাকার বাসিন্দারা আজ VIP মার্কেট ক্রসিংয়ে রাস্তা অবরোধ করেন । ফলে বাইপাস অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে । তীব্র যানজট গোটা এলাকায় । মধ্য কলকাতার বউবাজার এলাকা এখনও পর্যন্ত বিদ্যুতহীন । সেখানেও তীব্র জল কষ্ট । CESC-কে বারবার বলা হয়েছে । কিন্তু কাজের কাজ হয়নি । তার প্রতিবাদে হ্যারিকেন নিয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা ।
খিদিরপুর ভূ-কৈলাশ রোডে আবার এখনও জল থৈ থৈ অবস্থা । প্রতিটি বাড়িতে আমফানের পর থেকে হাঁটু সমান জল দাঁড়িয়ে রয়েছে । কর্পোরেশনকে বারবার অনুরোধ করার পরেও কেউ উদ্যোগ নেয়নি । এদিকে এখনও পর্যন্ত বিপর্যস্ত অবস্থা লেক গার্ডেন্স, যোধপুর পার্ক ও যাদবপুরের ।
আবার পানীয় জলের তীব্র কষ্টের মধ্যে শুরু হয়েছে কালোবাজারি । 50 টাকার কুড়ি লিটারের জার বিক্রি হচ্ছে 200 টাকায় । এমনটাই অভিযোগ উঠেছে । তারপরেও নাকি সেই জল পাওয়া যাচ্ছে না । এদিকে কলকাতা পুলিশের তরফে গাছ সরানোর প্রক্রিয়া এখনও পর্যন্ত জারি রয়েছে ।