কলকাতা, 14 মার্চ: স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় (Bengal Recruitment Scam) গ্রেফতার হয়ে এখন জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় (Partha Chatterjee) ৷ নিরাপত্তার কারণে তাঁকে আদালতে বিশেষ আসতে হয় না ৷ এজলাসে ভার্চুয়ালিই তাঁকে পেশ করা হয়৷ সেই পার্থ এবার আদালতে আসতে চান ৷ অনেক কিছু বলতেও চান ৷ মঙ্গলবার কলকাতার ব্য়াংকশাল কোর্টে শুনানি চলাকালীন এমনটাই জানিয়েছেন তিনি ৷
ওই আদালতে এদিন পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় ও তাঁর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের (Arpita Mukherjee) জামিন সংক্রান্ত বিষয়ের শুনানি ছিল ৷ সেখানে দু’জনেই ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন ৷ বিচারকের উদ্দেশ্যে পার্থ বলেন, "আমার শরীর ভালো নেই । পা ফুলে গিয়েছে । জেলে সেই পরিকাঠামো নেই ।’’ তার পর প্রশ্ন তোলেন, ‘‘যদি মরেই যাই তাহলে আর বিচার করে লাভ কি ?’’
এর পরই এজলাসে উপস্থিত সকলকে কার্যত চমকে দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি অনেক কিছু বলতে চাই । আদালতে আসতে চাই । আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে জানাব । আট মাস হয়ে গেল ৷ এভাবে আর কতদিন চলবে ?" যদিও এদিন তাঁর জামিনের আবেদন আদালতে করা হয় ৷ আদালত এই মামলায় পরবর্তীর শুনানির দিন ধার্য করেছে আগামী 19 এপ্রিল ৷
অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের তরফেও আদালতে জামিনের আবেদন করা হয়নি ৷ তবে তিনিও ভার্চুয়ালি উপস্থিত হয়ে কেঁদে ফেলেন ৷ তিনি বলেন, ‘‘নির্দোষ হওয়া সত্ত্বেও আট মাস জেলে আটকে রাখা হয়েছে । আপনার কি মনে হয় না, একজন মহিলাকে আটকে রেখে তাঁর সামাজিক সম্মান নষ্ট করা হচ্ছে ! আমি অত্যন্ত উচ্চবংশের মেয়ে । মা অসুস্থ ৷ তাঁর পাশে থাকতে হবে ।" কিন্তু বিচারক বলেন, "আপনার আইনজীবীকে জামিনের আবেদন আগে দিতে বলুন৷ তারপর দেখছি ৷"
তবে এদিন ওই শুনানিতে সবচেয়ে বেশি সওয়াল জবাব চলে মানিক ভট্টাচার্যকে (Manik Bhattacharya) নিয়ে ৷ এদিন তাঁরও জামিন মামলার শুনানি ছিল ৷ তিনি বিচারকের কাছে দাবি করেন, তিনি ছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি । কিন্তু প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি ছাড়াও অন্যান্য সমস্ত নিয়োগ দুর্নীতিতেই ইডি তাঁর নাম যুক্ত করে দিতে চাইছে ৷ এদিন তিনি বিচারককে অনুরোধ করেন, যাতে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয় । কারণ, তিনি কোনও দোষ করেননি । একই সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে ইডি ও সিবিআই অসহযোগিতার যে অভিযোগ করছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা বলেও জানিয়েছেন তিনি ।
মানিক ভট্টাচার্যর আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত বলেন, "10 অক্টোবর থেকে মানিক ভট্টাচার্য হেফাজতে রয়েছেন । উনি নাকি সহযোগিতা করেননি বলেই গ্রেফতার করা হয়েছে । অথচ সুপ্রিম কোর্টে সিবিআই বলেছে উনি সহযোগিতা করছেন । ইডি কৌশল নিয়েছে 15 দিন, এক মাস করে সময় নষ্ট করার । শুনানিতে সময় নিচ্ছে । সেই জন্য মামলাটি কিছুটা শুনানি করার পর ফের আগামী মঙ্গলবার রাখা হয়েছে শুনানির জন্য ।" 21 মার্চ ফের শুনানি করা হবে এই মামলার ।
উল্লেখ্য, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ-সহ বিএড, ডিএলএড কলেজের অনুমোদন দেওয়ার দাবিতে কোটি কোটি টাকা তুলেছিলেন মানিক ভট্টাচার্য বলে অভিযোগ ৷ তাঁর ছেলে সৌভিক ও স্ত্রী শতরূপাও জেল হেফাজতে৷ অভিযোগ, এই দুর্নীতির বিষয়ে তাঁরা সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল ছিলেন ৷
আরও পড়ুন: টাকার বিনিময়ে চাকরি! পার্থর পাশে তৃণমূলের না থাকার বার্তা ফিরহাদের