দুর্গাপুর, 8 ফেব্রুয়ারি: এপার বাংলায় সরকারি হাসপাতালের পোস্টারে ওপার বাংলার ম্যাপ ৷ ঘটনাটি ঘটেছে শিল্পাঞ্চল দুর্গাপুরে ৷ কেন এমন হল, সেটা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার ৷ তবে এই ঘটনার সমালোচনা করেছে বিজেপি ও তৃণমূল ৷ বিজেপি এই নিয়ে তদন্তের দাবি তুলেছে ৷ তবে তৃণমূল এই ঘটনার নেপথ্যে চক্রান্ত দেখছে ৷ তাদের মতে, শান্ত বাংলাকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে কেউ কেউ ৷
ঘটনাটি ঠিক কী ? দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের আইসিইউ-এর ঠিক পাশে রয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বীকৃতি দেওয়া ক্যাঙারু মাদার কেয়ারের পোস্টার । সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর সেই সন্তানকে কীভাবে পরিচর্যা করা প্রয়োজন, সেই নিয়েই সচেতনতার কথা লেখা থাকে এই পোস্টারে । সরকারি বেসরকারি সমস্ত হাসপাতালেই দেওয়া হয় এই পোস্টার ।
কিন্তু দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে সেই পোস্টারের বাংলাদেশ সরকারের লোগো ব্যবহার করা হয়েছে । যাকে ঘিরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক । সেই পোস্টারের মধ্যে যে লোগো ব্যবহার করা হয়েছে, সেটি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের । অথচ বিষয়টি দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার ড. ধীমান মণ্ডল জানেনই না । তিনি বলেন, "বিষয়টি আমি জানি না । তবে এই ধরনের লোগো ব্যবহার করা যেতে পারে না । কে বা কারা লাগিয়েছে ? কেন লাগানো হয়েছে ? আমি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি ।"
সমালোচনায় সরব হয়ে বর্ধমান সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "স্বাধীন রাষ্ট্র ভারতবর্ষ । এখানে যেকোনও সরকারি হাসপাতাল বা সরকারি দফতরে কোনও পোস্টার দিতে সেখানে ভারত সরকার বা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পোস্টার দেওয়া উচিত । দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের একটি পোস্টারে বাংলাদেশের লোগো ব্যবহার করা হল । আমরা তীব্র বিরোধিতা করছি । এই বিষয়টি কেন করা হল দেখা দরকার সরকারের প্রতিনিধিদের । যারা এই কাজ করল তাদের কঠোর শাস্তিরও দরকার ।"
পালটা জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, "বাংলাদেশে অস্থির পরিস্থিতির পর থেকে এ রাজ্যকেও অশান্ত করার চেষ্টা করছে কেউ কেউ । সরকারি হাসপাতালের ভেতরেও চক্রান্ত করে কেউ বাংলাদেশের লোগো লাগিয়ে দিয়েছে । আমরা সুপারকে থানায় অভিযোগ জানানোর জন্য বলব । যে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তার বিরুদ্ধে করা আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও পুলিশকে জানানো হবে ।"
বাংলাদেশ সরকারের লোগো সম্বলিত এই পোস্টার দেওয়ার কারণে বিজেপির পক্ষ থেকে শনিবার দুপুরে সরকারি হাসপাতের বাইরে বিক্ষোভ দেখানো হয় । দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে । এদিকে এই নিয়ে সমালোচনা করেছেন রোগীর আত্মীয়রা ৷ রাহুল রায় নামে রোগীর এক আত্মীয় এই ঘটনাটিকে লজ্জাজনক বলে উল্লেখ করেন ৷