কলকাতা, 27 জুলাই: 2011 সালে নির্বাচনে জয়ী হয়ে পরিষদীয় মন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই প্রত্যেকদিন নিয়মিত ডব্লিউবি 10-0006 নম্বর প্লেটের গাড়িটিকেই ব্যবহার করতেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee returns his car to the assembly) । বাংলার জনগণ এই গাড়ির সামনের বাঁদিকের আসনটিতেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে দেখতে অভ্যস্ত । মঙ্গলবার পড়ন্ত বিকেলে আচমকাই গাড়িটিকে বিধানসভা চত্বরে দেখে অনেকেরই সন্দেহ হয় । যে মানুষটি এই মুহূর্তে ইডি হেফাজতে রয়েছে, দফায় দফায় জেরা চলছে । দল তাঁকে মহাসচিব কিংবা মন্ত্রিপদ কোনওকিছু থেকেই সরায়নি । তাহলে এই গাড়ি কেন বিধানসভায় !
পরে জানা যায়, পার্থবাবুর ইচ্ছামতোই এই গাড়ি ফেরত এসেছে বিধানসভায় । পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গাড়ি চালক এদিন গাড়িটিকে বিধানসভার গ্যারেজে রেখে যান । গাড়ির চাবি তুলে দেওয়া হয় বিধানসভা কর্তৃপক্ষের হাতে । চালক জানিয়েছেন, পার্থবাবু নিজেই তাঁকে এই গাড়ি বিধানসভায় ফিরিয়ে দিয়ে যাওয়ার জন্য বলেছেন । আর সেই কারণেই গাড়ি বিধানসভায় জমা করলেন তিনি ।
আরও পড়ুন : পার্থ-অর্পিতার ফোনে 'বিশেষ নম্বর' থেকে কল, মালিকের খোঁজ চালাচ্ছে ইডি
পার্থবাবুর এই সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে । সোমবার দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পার্থ-অর্পিতার টাকার পাহাড়ের সঙ্গে তাঁর নাম জড়িয়ে নিয়ে যেভাবে প্রচার চলছে তার কড়া প্রতিবাদ করেন । সেখানে তিনি এও বলেন, "কেউ চোর-ডাকাত হলে তাকে ছেড়ে কথা বলি না । সে মন্ত্রী হলেও নয় । অন্যায় প্রমাণিত হলে, দোষী হলে তাঁর যাবজ্জীবন সোজা হোক । কিন্তু অযথা যেন তাঁকে নিয়ে কুৎসা না-করা হয় । তাৎপর্যপূর্ণভাবে হলেও এটা সত্যি গোটা বিষয়টিতে কোথাও তাঁর দলের মহাসচিব তাঁর দলের শিল্প ও পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম তিনি উল্লেখ করেননি । দলনেত্রীর এই অবস্থান কি পার্থ চট্টোপাধ্যায় ভালোভাবে নিতে পারেননি ।
এদিন বিমানবন্দরে যদিও পার্থ বলেছেন, "দলনেত্রী যা বলেছেন ঠিক বলেছেন ।" তারপরেও কি মনের কোনও সুপ্ত কোণে একটা যন্ত্রণা রয়েছে । ইডি-র তল্লাশি হওয়ার পর থেকে বারবার যেভাবে ফোন করেও দলনেত্রীকে পাননি তাতে কি তিনি বুঝতে পেরেছেন পাশে থাকার কথা বললেও ক্রমেই তাঁর সঙ্গে দূরত্ব বাড়াচ্ছে দল । আর সেই কারণেই প্রথমেই গাড়ি ছেড়ে তিনি বুঝিয়ে দিতে চাইলেন । এবার হয়তো মন্ত্রিত্ব ছাড়ছেন তিনি !