কলকাতা, 26 মার্চ : 1 বৈশাখ ৷ এই দিনটা দিয়েই বাঙালির তেরো পার্বণের শুরু ৷ সেজেগুজে নতুন জামা পরে নতুন বছরকে স্বাগত জানায় বাঙালি ৷ এর প্রস্তুতি শুরু হয় এক মাস আগে থেকে ৷ অর্থাৎ চৈত্র মাস, চৈত্র সেল থেকে ৷
এই একটা মাস তিলোত্তমাকে এক অন্যরূপে দেখতে পায় শহরবাসী ৷ রাস্তায় থইথই করছে মানুষ ৷ দোকানে দোকানে উপছে পড়া ভিড় ৷ কোথাও এক ঝাঁক পড়ুয়া রাস্তায় কানের দূল বাছতে ব্যস্ত ৷ কোথাও খাবার দোকানে লম্বা লাইন ৷ ট্রামলাইনের উপর ট্রাম নয়, সারি সারি মানুষের ঢল ৷ তাঁদের উদ্দেশ্য একটাই, চৈত্র সেলের কেনাকাটা ৷ এই একটা উপলক্ষেতেই মিলেমিশে যায় গড়িয়াহাট, হাতিবাগান ৷
তবে, এ বছর ছবিটা একদমই আলাদা ৷ না রাস্তায় মানুষের ঢল, না গাড়ির ব্যস্ততা ৷ সুনসান, ফাঁকা পড়ে আছে শহরটা ৷ নিত্যপ্রয়োজনীয় ছাড়া খোলা নেই কোনও দোকানও ৷ মোড়ে মোড়ে রয়েছে ব্যারিকেড ৷ গাড়ি দেখলেই দাঁড় করিয়ে চেক করছে পুলিশ ৷ প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বেরোনোতে নিষেধাজ্ঞা ৷ কোরোনা যেন বদলে দিল সব কিছু ৷ মানুষের চোখে মুখে আতঙ্ক স্পষ্ট ৷
প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা ঘরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন ৷ জরুরি পরিষেবা ছাড়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সব কিছু ৷ তারই ছাপ পড়েছে দোকানগুলিতেও ৷ বন্ধ শহরের সব ক'টি শপিংমল ৷ মাথায় হাত দোকানদারদের ৷ সারা বছরের বেশি আয় যে এখনই করেন তাঁরা ৷
কোরোনায় বিশ্বে মৃত্যু মিছিল । লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা । আর এইসব কিছু থেকে বাঁচতে বিভিন্ন দেশের সরকার বেছে নিয়েছে লকডাউনকে । কেমন যেন থমকে গিয়েছে গোটা বিশ্ব । আসলে সব নতুনের আগে বিদায় নিতে হয় পুরোনোকে । যেমনটা বৈশাখে নতুন বর্ষকে আগমনের আগে চৈত্রে করে থাকি আমরা । চৈত্র সেলের মাধ্যমে একটা বছরের বিদায়কেই তো উদযাপন করি আমরা ।