কলকাতা, 22 এপ্রিল: আবারও সমস্যার সৃষ্টি হল রানিকুঠির জিডি বিড়লা স্কুলে । কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে এই সপ্তাহ থেকে সমস্ত পড়ুয়ারা আবার স্কুলে ফিরেছে । তবে স্কুল ফি-এর ভিত্তিতে বৈষম্যের সৃষ্টি করা হচ্ছে পড়ুয়াদের মধ্যে (GD Birla school fees Problem)। এমনটাই অভিযোগ এক শ্রেণির অভিভাবকদের ।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার কোনও কারণ ছাড়াই ছাত্রীদের উপহার দেওয়া হয় । তবে যে ছাত্রীদের অভিভাবকরা 100 শতাংশ বেতন মিটিয়েছেন, শুধু তাঁদের সন্তানরাই পেয়েছে সেই উপহার । এই নিয়ে আবারও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে । সাধারণত শিশু দিবস, টিচার্স ডে, ও যখন বার্ষিক পরীক্ষার পর মার্কশিট দেওয়া হয়, তখন স্কুলের তরফে পড়ুয়াদের ছোট উপহার দেওয়া হয় । তবে গতকাল কোনও কারণ ছাড়াই উপহার দেওয়া হয় ছাত্রীদের । আদালতের নির্দেশ মেনে যে অভিভাবকরা 80 শতাংশ ফি দিয়েছেন তাঁদের সন্তানরা স্কুলে এলেও, যারা 100 শতাংশ ফি মিটিয়েছে তাদেরকেই শুধু একটি পেন উপহার দেওয়া হয় ।
আরও পড়ুন : রাতারাতি বন্ধ জিডি বিড়লা স্কুল, চিন্তায় অভিভাবকরা
80 শতাংশ ফি দেওয়া অভিভাবক মৌমিতা চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, "আদালতের নির্দেশ মেনে 19 এপ্রিল স্কুলের তরফে একটি নোটিস দিয়ে জানানো হয় যে 20 এপ্রিল থেকে সবার জন্য স্কুল খুলে যাচ্ছে । এরপর অভিভাবকদের মার্কশিট দেওয়া হলে দেখা যায় যে মার্কশিটের একেবারে নিচে স্কুলের বেতন মেটাবার আবেদন জানানো হয়েছে (requested to clear all dues)। এভাবে রিপোর্ট কার্ডে ফি সংক্রান্ত কথা লেখা যায় না । সেদিন আর কিছু না বলে আমরা রিপোর্ট কার্ড নিয়ে আসি। এরপর গতকাল স্কুলে রোলকল করে ছাত্রীদের একটি করে পেন উপহার দেওয়া হয় । তবে যাদের অভিভাবকরা স্কুলের পুরো বেতন মেটাননি, সেই সব বাচ্চারা তালিকা থেকে বাদ পড়ে । বাচ্চাদের মধ্যে এভাবে ভেদাভেদ সৃষ্টি করা হচ্ছে কেন ?"
তিনি আরও জানান, একটি বাচ্চা তার ক্লাস টিচারকে জিজ্ঞেস করায় ক্লাস টিচার জানান, কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত যে যারা পুরো বেতন দিয়েছে শুধুমাত্র তাদেরকেই উপহার দেওয়া হবে । এভাবে কি কোনও বাচ্চাকে বলা উচিত ? এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকরা ।
আরও পড়ুন : কৃত্তিকার মৃত্যুতে মৌন মিছিল অভিভাবকদের
হাইকোর্টের নির্দেশে লেখা ছিল যে, যদি স্কুলের তরফে অভিভাবকদের আবার কোনও সমস্যা হয় বা অভিভাবকদের তরফ থেকে স্কুলের কোনওরকম সমস্যা সৃষ্টি হয়, তাহলে দুই পক্ষই বিষয়টি স্থানীয় থানায় জানাবে । সেই মতো আজ পুরো বিষয়টি লিখিতভাবে গল্ফগ্রিন থানায় জানিয়েছেন অভিভাবকরা ।
গতকালের এই উপহার নিয়ে ভেদাভেদের বিষয়ে বিস্মিত ফি মেটানো অভিভাবকরাও । এমনই এক অভিভাবক সঞ্জয় ভট্টাচার্য বলেন, "ফি-এর ভিত্তিতে বাচ্চাদের মধ্যে ভেদাভেদ করা একেবারেই উচিত নয় । ক্লাসে এরা সবাই পাশাপাশি বসে । একজন উপহার পেল আর তার পাশের জন পেল না ৷ ফলে সেই বাচ্চাটির মনের উপর একটা চাপ সৃষ্টি হয়। পড়ুয়ারা কি দোষ করেছে ? তারা তো এত জটিলতা বোঝে না। ফি-এর জটিলতা বোঝে না । ফি দেওয়ার ভিত্তিতে এভাবে বৈষম্য সৃষ্টি করা কখনই কাম্য নয় ।"
অন্যদিকে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয় যে, এই বিষয়ে বাইরের কারওর সঙ্গে কথা বলতে তারা রাজি নন । কোনও অভিভাবকের যদি সমস্যা হয়, তাহলে তিনি যেন সরাসরি স্কুলে এসে কথা বলেন ।