কলকাতা, 23 অক্টোবর: পূর্ব কলকাতা সংলগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকার জলাভূমি ভরাটের (Wetland filling) অভিযোগ করলেন বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী (Nawsad Siddique)। দীর্ঘদিন ধরে শাসকদলের ছত্রছায়াতেই ভাঙড় বিধানসভা এলাকায় জলাভূমি ভরাট চলছে বলে অভিযোগ তাঁর । এ বিষয়ে স্থানীয় থানা, জেলা প্রশাসনকে জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি বলে দাবি করেন নওশাদ । এমনকী এই জলাভূমি ভরাট রোধে স্থানীয় বিধায়ক হিসেবে পরিবেশ মন্ত্রী ও পূর্ব কলকাতা জলাভূমি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (East Kolkata Wetlands Management Authority) চেয়ারপার্সনকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন তিনি ।
নওশাদ বলেছেন, "জলাভূমি ভরাট নিয়ে বিধানসভার ভেতরে পরিবেশমন্ত্রী ও স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি । পাশাপাশি লেদার কমপ্লেক্স থানায় এফআইআর করেছি । ডিএম, কলকাতা পুলিশ কমিশনার, ডিআইজি, রাজ্যের পরিবেশমন্ত্রী ও মুখ্যসচিবকেও জানিয়েছি । কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় কোনও ফল হয়নি । নতুন করে বেআইনিভাবে জলাভূমি বোজানোর কাজ চলছে । তা বন্ধ না হলে কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রককে জানাতে বাধ্য হব ৷"
নওশাদ আরও বলেন, "ভাঙড় বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত পূর্ব কলকাতা সংলগ্ন বিস্তীর্ণ রামসার সাইটের অন্তর্ভূক্ত যে জলাভূমি আছে, সেই জলাভূমি বেআইনি ও পরিবেশ বিরুদ্ধ ভাবে ভরাট করা নিয়ে আমরা বারংবার সোচ্চার হয়েছি । কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে ভরাটের কাজ বন্ধ রাখলেও শাসকদলের ছত্রছায়ায় থাকার সুবাদে পুনরায় ভরাট শুরু করা হয়েছে । ভাঙড় 2 নম্বর ব্লকের বামনঘাটা, কুলবেড়িয়া, হাটগাছা, তাড়দহ, হাতিশালার বিস্তীর্ণ এলাকার জলাভূমি বুজিয়ে মাটি মাফিয়ারা দখল করছে । স্থানীয় কৃষিজমি ও মেছোভেড়ী থেকে বেআইনিভাবে তারা মাটি কেটে এই জলাভূমি বুজিয়ে দিচ্ছে । এটি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে সংরক্ষিত এলাকা হিসাবে বিবেচিত । কিন্তু এখানে সে সবের তোয়াক্কা না করে ভরাটের মতো বেআইনি ও পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করার মতো কাজ করা হচ্ছে শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের মদতে । এ বিষয়ে আশু কড়া ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় বিধায়ক হিসেবে পরিবেশ মন্ত্রী ও পূর্ব কলকাতা জলাভূমি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের চেয়ারপার্সনকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি ।"
আরও পড়ুন: বেআইনি জলাভূমি ভরাট সংক্রান্ত মামলায় কড়া অবস্থান হাইকোর্টের
কীভাবে পুলিশ প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে এ রকম অপরাধমূলক কাজ দিনের পর দিন চলতে পারে সেই প্রশ্ন তুলেছেন নওশাদ সিদ্দিকী ৷ তাঁর দাবি, "একজন বিধায়কের অভিযোগ ও পর্যাপ্ত তথ্যও এদের প্রভাবিত করে না যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে । তাহলে কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রককে এ বার সবিস্তারে এই ঘটনার কথা জানানো হবে । এইরকম অপরাধমূলক কার্যকলাপ চললে বাইরের দুনিয়ার কাছে দেশের মাথা হেঁট হয়ে যায় । ব্যাপক প্রভাব পড়ে পরিবেশের উপর । বাস্তুতন্ত্র ও মানুষের জীবিকাও তছনছ হয়ে যায় ।"
এ বিষয়ে গতকাল পুনরায় কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি । এ বার অন্তত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি দখল হওয়া ও ক্ষতিগ্রস্ত জলাভূমি পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে আসা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি ।