কলকাতা, 30 মে: এখন তিনি তৃণমূল কংগ্রেস নেতা ৷ সাগরদিঘি উপনির্বাচনে সিপিএম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাস সোমবার অভিষেকের হাত থেকে তৃণমূলের পতাকা তুলে নিয়েছেন ৷ এই ঘটনায় বাইরনকে আক্রমণ করলেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী ৷ তিনি বলেন, "বাইরনের বিধায়ক পদ ছেড়ে আরেকবার ভোটে জিতে আসা উচিত ৷"
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশের মতে, এই মুহূর্তে রাজ্য বিধানসভায় বাইরন বিশ্বাস খাতায়কলমে কংগ্রেসের একমাত্র বিধায়ক ৷ তাই দলত্যাগের পর তাঁর বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর করা যায় না ৷ এখন তাঁকে তৃণমূল বিধায়ক বলতে আইনত কোনও বাধা নেই ৷ মানে চলতি বিধানসভায় বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া বিধায়কদের ক্ষেত্রে যে জটিলতা আছে এখানে সেটা নেই।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ জোট বেঁধেছিল ৷ সেই ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের বিধায়ক নওশাদ ভাঙড়ের বিধায়ক ৷ শোনা যায়, সাগরদিঘি উপনির্বাচনে বাইরন বিশ্বাসের প্রার্থী হওয়ার নেপথ্যে তাঁর একটি বড় ভূমিকা আছে ৷ তবে মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি উপ-নির্বাচনের সময় তিনি কারাবন্দি ছিলেন ৷ ওয়াকিবহাল মহল মনে করে, তাঁকে 42 দিন ধরে জেলে রাখার ফল প্রভাবিত করেছিল সাগরদিঘি উপনির্বাচনকে ৷
আরও পড়ুন: টুইটে মোদি'কে বিঁধলেন মমতা, পালটা মাঠে নামল বিজেপি নেতারাও
বাইরনের দল বদলের ঘটনায় নওশাদ বলেন, "বাইরন বিশ্বাস তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন ৷ তাঁকে আর কিছু বলার নেই ৷ কিন্তু যাঁরা তাকে জিতিয়ে বিধানসভায় এনেছিলেন, তাঁরা কিন্তু তৃণমূলের বিরুদ্ধেই ভোট দিয়েছিলেন ৷ এই পরিস্থিতিতে বাইরনের বিধায়ক পথ ছেড়ে দিয়ে আরও একবার ভোটে জিতে আসা উচিত ৷" তাঁর প্রশ্ন, এই ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকলে মানুষ আর কাদের উপর ভরসা রাখবে ?
তৃণমূলকে কটাক্ষ করে আইএসএফ বিধায়ক জানান, রাজনীতির কারবারিরা এমনিতেই নিজেদের নানা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে দূষিত করে তুলেছে ৷ এরপর মানুষ যাঁদের উপর ভরসা রাখছেন, তাঁরা বারবার দল বদলে সেই ভরসাও ভেঙে দিচ্ছেন ৷ সাগরদিঘির মানুষ শাসকদলের বিপক্ষে গিয়ে তাদের অত্যাচার-অনাচারের বিরুদ্ধে যোগ্য জবাব দিয়েছিল ৷ বিধায়কের আক্ষেপ, দুঃখের বিষয় সাগরদিঘির মানুষ যাঁকে সেনাপতি হিসেবে নির্বাচিত করেছিলেন, তিনি আজ মানুষের কাছ থেকে সরে গেলেন ৷ কেন গিয়েছেন ? কোন শর্তে গিয়েছে ? এর কারণ তাঁর জানা নেই ৷ তবে এই মুহূর্তে বাইরন বিশ্বাসের উপযুক্ত কাজ ফের নির্বাচনে দাঁড়িয়ে মানুষের জনমত নেওয়া ৷ এ নিয়ে নওশাদের সন্দেহ, তিনি কি সেই সাহস দেখাতে পারবেন ?
আরও পড়ুন: বাইরনের বিশ্বাসঘাতকতায় শক্তি ক্ষয় হবে না, বিশ্বাস মুর্শিদাবাদ কংগ্রেস নেতৃত্বের
সাগরদিঘি উপনির্বাচনে সিপিএম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী বাইরন বিশ্বাসের জয় বাংলার শাসকদল তৃণমূলের জন্য বড় চিন্তা হয়ে দেখা দিয়েছিল ৷ এতে সংখ্যালঘু ভোটারদের মতামত প্রতিফলিত হয়েছিল ৷ সংখ্যালঘু ভোটারদের একাংশ শাসকের থেকে মুখ ফিরিয়ে জনমত দিয়েছিল বাম-কংগ্রেস জোটের পক্ষে ৷ তৃণমূলের কংগ্রেসের জন্য তা মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল ৷ দলের অন্দরে এই নিয়ে কাটাছেঁড়া চলছিল ৷ এরই মধ্যে উপ-নির্বাচনের তিন মাস যেতে না যেতেই 29 মে তৃণমূল কংগ্রেসে নাম লেখালেন সাগরদিঘিতে কংগ্রেসের টিকিটে জিতে আসা বাইরন বিশ্বাস ৷