ভাঙড়, 26 জুলাই: পঞ্চায়েত নির্বাচনের আবহে বারবার অশান্ত হয়ে উঠেছে ভাঙড়। অশান্তি নিয়ন্ত্রণে নয়া ভাবনা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ভাঙড়কে এবার কলকাতা পুলিশের আওতায় এনে নয়া ডিভিশনের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী । মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের এই প্রস্তাবকে সাধুবাদ জানিয়েছেন ভাঙড়ের বিধায়ক তথা আইএসএফ প্রধান নওশাদ সিদ্দিকী ।
বুধবার আলিপুর বডিগার্ড লাইনের একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে ভাঙড়কে কলকাতা পুলিশের আওতায় আনার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনকী অনুষ্ঠানে উপস্থিত কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করার নির্দেশও দেন মুখ্যমন্ত্রী । যার প্রেক্ষিতে এদিন নওশাদ সিদ্দিকী বলেন, "আমরা বারবার বারুইপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানিয়েছিলাম যে ভাঙড়ে তৃণমূল বহিরাগত লোক এনে এলাকায় দুষ্কৃতীরা চালাচ্ছে। এলাকায় সন্ত্রাস কিছুতেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না বারুইপুর পুলিশ। কার্যত বিরোধীদের সেই অভিযোগকেই সিলমোহর দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।"
সারাবছরই প্রায় উত্তপ্ত থাকে ভাঙড়। বোমা-গুলি লেগেই আছে এলাকায় । পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হতেই কার্যত অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয় সেখানে। নির্বাচনের সময় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের পরও রোখা যায়নি প্রাণহানি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও ভোট ‘হিংসা’ নিয়ে বলতে গিয়ে ভাঙড়ের কথা উল্লেখ করেন। নাম না-করে পরোক্ষে ভাঙড়ে অশান্তির দায় ‘হাঙর’ আইএসএফের উপর চাপান তিনি। আর এদিন সেই আইএসএফের প্রধান নওশাদ বলেন, "মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই । এতে ভাঙড়বাসীর সুবিধা হবে। কিন্তু পুলিশকে দিয়ে ভাঙড়বাসীর উপর যদি অত্যাচার হয়, তাহলে আমি চুপ করে বসে থাকব না। আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।"
একইসঙ্গে বিধায়ক অভিযোগের সুরে জানান, ভাঙড়ে যে এলাকাগুলি কলকাতা পুলিশের অধীনে ছিল, সেই এলাকাতেই সব থেকে বেশি তিনি আক্রান্ত হয়েছেন। পুলিশকে কাজ করতে দিচ্ছে না শাসক দল শুধুমাত্র বিরোধী কণ্ঠকে রোধ করার জন্য পুলিশকে ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন নওশাদ। তিনি বলেন, "সম্প্রতি 144 ধারা অজুহাত দেখিয়ে বারবার পুলিশ আমাকে আটকেছে। ভাঙড়ের জনপ্রতিনিধি হিসাবে আমি এলাকায় ঢুকতে পারব না ! পুলিশকে শুধুমাত্র ব্যবহার করা হচ্ছে বিরোধী কণ্ঠকে রোধ করার জন্য।"
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত নিয়ে আলোচনা চাইছে তৃণমূলও, বিধানসভায় জানালেন পরিষদীয় মন্ত্রী
সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত ভোটের পর এবার অশান্ত ভাঙড়কে শান্ত করতে নয়া ভাবনা মুখ্যমন্ত্রীর। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ভাঙড়কে কলকাতা পুলিশের আওতায় আনার ভাবনা। নয়া ডিভিশন চালুর কথাও এদিন জানান মুখ্যমন্ত্রী। সূত্রের খবর, ওই ডিভিশনে মোট আটটি থানা থাকবে। থাকবেন আট জন ওসি। তবে ভাঙড়ের কোন এলাকা কোন থানার আওতায় থাকবে, তা এখনও জানা যায়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবনা বাস্তবায়নের সমস্ত দায় রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্যকে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।