কলকাতা, 23 অক্টোবর: এশিয়ার বৃহত্তম যৌনপল্লি হিসাবে পরিচিত সোনাগাছি । প্রতি বছর এই এলাকার পুজোতে কিছু না কিছু নতুনত্ব থাকেই । সঙ্গে থাকে 'নবমীর বিশেষ ভোগ' ৷ সোমবার দুর্গা পুজোর নবমীতে বৃষ্টি উপেক্ষা করে কলকাতার 12টি যৌনপল্লিতে চলল সেই নবমীর ভোগ বিতরণ । বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিতরণ করা হয় খিচুড়ি, সবজি ও পায়েস ।
যৌনকর্মীদের সংগঠন দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটির সম্পাদিকা বিশাখা লস্কর বলেন, "রাত দু'টো থেকে ভোগ রান্না শুরু হয়। চলে সকাল সাড়ে আটটা পর্যন্ত । সকাল 9টা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত সেই ভোগ বিতরণ করা হয়েছে । বৃষ্টি উপেক্ষা করে 400 কেজি চাল ও 400 কেজি ডাল দিয়ে তৈরি হয়েছে 'নবমীর ভোগ' ও পায়েস ৷ বাড়ি বাড়ি গিয়ে আমাদের ছেলেরা সেই ভোগ বিতরণ করেছে । শুধুমাত্র আমাদের যৌনপল্লিতে নয়, পথ চলতি সাধারণ মানুষকেও সোনাগাছির 'নবমীর ভোগ' খাওয়ানো হয়েছে।"
এশিয়ার বৃহত্তম যৌনপল্লীতে গত দশ বছর ধরে দুর্গোৎসব আয়োজিত হয় । এবার 11তম বর্ষের পুজোয় ধরা পড়ে সর্বধর্ম সমন্বয়ের ছবি । সোনাগাছির দুর্গৎসবে হিন্দু, মুসলিম, শিখ নানা সম্প্রদায়ের সাত জন ধর্মগুরু পুজোর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে হাজির হন । উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তী পুজো কমিটির সভাপতি তথা কামারহাটি তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র ।
এবারে তাঁদের পুজোর থিম ছিল, 'আমাদের পুজোয় আমরাই মুখ'। রাজ্যে যৌনপল্লি রয়েছে মোট 56টি । তারমধ্যে কলকাতা ও জেলা মিলিয়ে মোট 5টি জায়গায় দুর্গাপুজোর আয়োজন করা হয় । যৌনকর্মীদেরই টাকায়-উদ্যোগে সোনাগাছি, আসানসোল, দুর্গাপুর, জলপাইগুড়ি ও বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে পুজো হয় । মদন মিত্রও জানান, দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটিকে তিনি মন থেকে সমর্থন করেন ৷
আরও পড়ুন: মণ্ডপে বেআইনি বিদ্যুৎ সংযোগ! কয়েক লক্ষ টাকার জরিমানা বিদ্যুৎ পর্ষদের
দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটির সম্পাদিকা বিশাখা লস্কর ইটিভি ভারতকে বলেন, "যৌনকর্মীদের মধ্যে হিন্দু, মুসলিম ভেদাভেদ নেই । জাতপাত নিয়েও টানাটানি নেই । কারণ, এখানে প্রত্যেকটা ধর্ম-জাতের মহিলারা আছেন । আমরা যৌন কর্মীরা জাত বলতে পুরুষ ও মহিলা বুঝি । ফলে, আমাদের পুজোয় সমস্ত ধর্মের মানুষ আসলে আমাদের ভালো লাগে ।"