কলকাতা, 28 জুন: নিজের নয় । মামার বন্ধু । সেই হিসেবেই পরিচয় । তপন সাহাকে অরিন্দম ধর ডাকতেন মামা বলেই । এমনকী নেপালে নিজের ক্যাসিনোতে উচ্চপদে চাকরিও দিয়েছিলেন । পুলিশ জেনেছে, সেই 'মামা'ই অপহরণ করতে চেয়েছিল 'ভাগ্নে'কে । টাকা হাতাতে জুটিয়ে ছিল ভাড়াটে অপরাধী । তাদের কথা দিয়েছিল, কাজ হাসিল হলে 200 কোটির 40% দেওয়া হবে ।
বাটানগর ব্রিজের কাছে যখন অরিন্দমকে অপহরণ করা হয় তখনই তিনি দেখতে পান তপনকে । বুঝে যান, এই অপহরণের পেছনে রয়েছে নিজের লোকেরাই । অরিন্দম বলেন, নিউ আলিপুরে ভ্রমণ সংস্থার অফিসে গেলে কিছু টাকা তিনি তখনই দিয়ে দিতে পারেন । অফিসে যাবার পর নিরাপত্তা কর্মীরা বেহালার সঞ্জয় রায় ওরফে লেবু সঞ্জয়কে ধরে ফেলেন । এই ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় তপন, সাহাপুর এলাকার কুখ্যাত দুষ্কৃতী রাজা দত্ত, শম্ভু সনি এবং পরিমল রায়কে ।
রাজাকে পাকড়াও করার পর পুলিশ চিনতে পেরে যায় তাকে । নিউ আলিপুর থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে সাহাপুরে থাকে রাজা। সে কুখ্যাত তোলাবাজ। গুন্ডা দমন শাখার অফিসাররা তাকে জেরা করে জানতে পারেন, কমিশনের বিনিময়ে তাকে ভাড়া করেছিল তপন। এরপর তপনকে জেরা শুরু করে গোয়েন্দারা । সামনে আসে পিছনের পুরো গল্পটাই ।
নেপালে একটি ক্যাসিনো চালান অরিন্দম । সেখানে মামা তপনকে উচ্চ পদে নিয়োগ করেছিলেন । তপন জানতে পারেন অরিন্দমের 800 কোটি টাকা লগ্নি করা আছে নেপালে । ছয় মাস সেখানে চাকরি করার পর দেশে ফিরে আসেন তপন । তারপর কিছুটা হলেও তপন এবং অরিন্দমের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয় । এরই মাঝে নিউ আলিপুরে ভ্রমণ সংস্থার অফিস খোলেন অরিন্দম । নতুন দুটি গাড়ি কেনেন । তখনই অরিন্দমকে অপহরণের ছক করে তপন ।
প্রথমেই তপন যোগাযোগ করে রাজার সঙ্গে। রাজাকে তপন জানায়, অরিন্দম এর কাছে সে 200 কোটি টাকা পায় । সেই টাকা উদ্ধার করা গেলে তার 40% টাকা রাজাকে দেবে । তৈরি হয় ছক । বাকিদের ভাড়া করে রাজাই । পরিকল্পনা মতো সেনার পোশাক পড়ে কলকাতা পুলিশের সন্ত্রাস দমন শাখার স্টিকার গাড়িতে লাগিয়ে করতে যায় অপহরণ । গোটা ঘটনায় ছিল আরও কয়েকজন । তাদের খুঁজছে পুলিশ । ধৃত 5 জনকে আলিপুর আদালতে তোলা হলে 4 জুলাই পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।