কলকাতা, 28 সেপ্টেম্বর : কখনও পরিজনরা হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই সুস্থ হয়ে ওঠা কোরোনা রোগীকে ছুটি দিয়ে দেওয়ার অভিযোগ । কখনও আবার নাম বিভ্রাটের জেরে মৃত কোরোনা রোগীর সৎকারে বিপত্তির অভিযোগ । এমনই একের পর এক অভিযোগ উঠছে কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বিরুদ্ধে ।
কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা ওই রোগী কলকাতার বাগমারি অঞ্চলের বাসিন্দা । 42 বছরের এই ব্যক্তিকে 18 সেপ্টেম্বর কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভরতি করানো হয় । এরপর 24 সেপ্টেম্বর তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হবে বলে পরিজনদের জানানো হয় । সেই মতো 24 সেপ্টেম্বর বিকেলে কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পৌঁছান পরিজনরা । তাঁরা অপেক্ষা করতে থাকেন । অভিযোগ, হাসপাতালে খোঁজ নিলে তাঁদের জানানো হয় কিছুক্ষণ পর তাঁদের রোগীকে ছুটি দেওয়া হবে । তবে অপেক্ষা করার চার ঘণ্টা পর হাসপাতাল থেকে জানানো হয় রোগীকে অনেকক্ষণ আগে ছুটি দেওয়া হয়েছে । অ্যাম্বুলেন্সেে তাঁকে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে । পরিজনরা এরপরে বাড়িতে ফোন করে জানতে পারেন তিনি বাড়ি ফেরেননি । এরপরেই তাঁর খোঁজ শুরু করেন তাঁরা । অবশেষে মানিকতলা বাসস্টপে তাঁকে দেখতে পাওয়া যায় ৷ তাঁর পরিজনদের অভিযোগ, বাড়ির সদস্যরা হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই কীভাবে তাঁকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হল। তাঁর নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন পরিজনরা । তাঁদের অভিযোগ, সুস্থ হয়ে ওঠা রোগী হাসপাতাল থেকে হেঁটে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন । অসুস্থ বোধ করায় মাঝ রাস্তায় তিনি বসে পড়েন । হাসপাতালে দায়ের করা অভিযোগে পরিজনরা জানিয়েছেন, এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ কীভাবে করতে পারে হাসপাতাল । ওই রোগীর কোনও বিপদ হলে কী হত ? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানা গিয়েছে , অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
অন্যদিকে, কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে শনিবার বিকেলে এক কোরোনা রোগীর মৃত্যু হয় ৷ রোগীর মৃতদেহ যাতে প্রশাসন সৎকার করতে পারে তার জন্য গাইডলাইন অনুযায়ী পরিজনদের সম্মতির প্রয়োজন । পরিজনরা এই সম্মতিপত্রে সই করতে চাননি । মৃত এই রোগী পশ্চিম মেদিনীপুরের বাসিন্দা ৷ 5 সেপ্টেম্বর তাঁকে এই হাসপাতালে ভরতি করানো হয় । 26 সেপ্টেম্বর বিকেলে রোগীর মৃত্যু হয়। পরিজনদের অভিযোগ, তাঁরা জানতে পারেন, হাসপাতালের নথিতে এই রোগীর নাম অন্য লেখা রয়েছে ৷ এরপর তাঁরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেন , নাম ঠিক করে না নেওয়া দেওয়া পর্যন্ত মৃতদেহ সৎকারের জন্য তাঁরা সম্মতিপত্র সই করবেন না । পরিজনদের অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে তাঁদের জানানো হয়, সম্মতিপত্রে সই করে দেওয়া হোক পরে নাম ঠিক করে দেওয়া হবে । কিন্তু তাঁরা তাঁদের সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন ৷ হাসপাতাল সূত্রে খবর, অবশেষে রোগীর মৃত্যুর 20 ঘণ্টা পরে দেহ সৎকারের জন্য সম্মতিপত্রে সই করেন পরিজনরা । হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানা গিয়েছে , ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়ার সময় মৃত রোগীর নাম ঠিক করে দেওয়া হবে।
এই দুই অভিযোগের বিষয়ে কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিকেল সুপারিনটেনডেন্ট তথা ভাইস প্রিন্সিপাল (MSVP) ইন্দ্রনীল বিশ্বাসের বক্তব্য জানতে চেয়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয় । তবে তাঁর কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।