কলকাতা, 27 মার্চ: সন্তান লাভের আশাতেই নাবালিকাকে গলা কেটে নৃশংসভাবে হত্য়া করা হয়েছে। তিলজলার এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত এই তথ্যই প্রাথমিকভাবে সামনে এসেছে বলে দাবি পুলিশের। তবে অভিযুক্তের বয়ানে একাধিক অসঙ্গতি থাকায় খুনের প্রকৃত কারণ সম্পর্কে এখনই নিশ্চিত হতে পারছে না পুলিশ ৷ (Tiljala Minor Girl Murder Case)
তিলজলা কাণ্ডে ধৃত অলোক কুমার বিহারের সমস্তিপুর এলাকার বাসিন্দা ৷ পুলিশ সূত্রে খবর, গ্রেফতারের পর তদন্তকারীদের সে জানিয়েছে, বিহারের একজন ব্যক্তির কথাতেই সে এই জঘন্য অপরাধ করেছে। যদিও ধৃতের বক্তব্যই সঠিক, নাকি এই খুনের পিছনে অন্য় কোনও কারণ আছে তা তদন্ত সাপেক্ষ বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা ৷ পাশাপাশি অভিযুক্তের প্রতিটি বক্তব্য়ের দিকে বিশেষভাবে খেয়াল রাখছেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, জেরায় অলোক কুমার পুলিশকে জানিয়েছে, নবরাত্রি চলাকালীন কোনও শিশুকে যদি গলা কেটে হত্য়া করা যায় তবে সে সন্তান লাভ করতে পারবে বলে জানিয়েছিল তান্ত্রিক। যদিও এই ঘটনার সত্যতা এখনও পর্যন্ত যাচাই করেনি লালবাজার।
সেইসঙ্গে, এই ঘটনায় আরও কেউ যুক্ত আছে কি না, তাও খতিয়ে দেখছে তদন্তকারীরা। প্রসঙ্গত, অভিযুক্ত অলোক কুমার সন্তানহীন। সন্তানলাভের আশাতেই তিনি সাত বছরের ওই শিশুকন্য়াকে খুন করেছে বলেও প্রাথমিকভাবে মনে করছে পুলিশ ৷ রবিবার ঘটনা প্রকাশ্য়ে আসার পরই এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়। রাতে উত্তাল হয়ে ওঠে তিলজলা থানা চত্বর।
উন্মত্ত জনতা পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে থানার ভিতরে ঢোকার চেষ্টা চালায়। পুলিশ বাধা দিলে তারা আরও উন্মত্ত হয়ে ওঠে। তিলজলা থানার মূল ফটকে ধাক্কা দিয়ে খুলে ফেলার চেষ্টা করেন উন্মত্ত জনতা। তাদের থামানোর জন্য ঘটনাস্থলে আসে লালবাজারের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরাও ৷ নামানো হয় সশস্ত্র পুলিশকে। গভীর রাতে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ ৷ তদন্তে প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই নাবালিকাকে প্রথমে যৌন নিগ্রহ করা হয় ৷ এরপর ঠান্ডা মাথায় খুন করা হয় তাকে। ইতিমধ্যেই তিনটি পৃথক মামলা দায়ের করে মামলা শুরু করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হাইকোর্টে
অপহরণ, খুন, পক্সো আইনে মামলার পাশাপাশি তিলজখানা থানায় হাঙ্গামা এবং পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের বিরুদ্ধে স্বতপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে পুলিশ ৷ অন্য়দিকে, এই ঘটনায় পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর এবং থানায় হামলা করার অভিযোগে ইতিমধ্যেই তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃত অলোক কুমারের বয়ানও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। লালবাজার সূত্রে খবর, তার বয়ান যদি সত্যি হয়, সেক্ষেত্রে বিহারে সমস্তিপুরের পুলিশের সঙ্গেও যোগাযোগ করবে লালবাজার ৷