কলকাতা, 26 জানুয়ারি: রাজ্যপালের হাতে খড়ি নিয়ে ফের একবার কটাক্ষের সুর শোনা গেল সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিমের গলায় (Md Salim on Governor Hate Khori) ৷ বৃহস্পতিবার এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "যা হচ্ছে, সেটা আড়ম্বর ছাড়া আর কিছুই নয় ৷" তাঁর মতে, বর্তমান সময় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, সকলেই লোক দেখানো আড়ম্বর করছেন !
উল্লেখ্য, বুধবার থেকে শুরু হয়ে গিয়েছে সরস্বতীপুজো (Saraswati Puja 2023) ৷ পুজো দেওয়ার সময়সীমা ছিল বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ৷ বাঙালি রীতি অনুসারে, সরস্বতীপুজোতেই হাতে খড়ি হয় কচিকাঁচাদের ৷ হাতে খড়ির পর আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় পড়াশোনা, অক্ষরজ্ঞানের পালা ৷ বাংলার বর্তমান রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের কর্মজীবন শুরু হয়েছিল শহর কলকাতায় ৷ কিন্তু, তিনি বাংলা ভাষা জানেন না ৷ আর এখন সেই তিনিই এই রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান ৷ তাই রাজ্যপালের ইচ্ছা, তিনি বাংলা শিখবেন ৷ সেই পাঠ শুরু করার আগে রাজ্যপালের হাতে খড়ি হবে বলে স্থির করা হয় ৷ এখনও পর্যন্ত যা খবর, সেই অনুসারে, বৃহস্পতিবার বিকেল 5টায় রাজভবনে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে এই রীতি পালন করা হবে ৷
আরও পড়ুন: রাজ্যপালের হাতে খড়ি নিয়ে মতভেদ বিজেপিতে, গেরুয়া শিবিরকে কটাক্ষ তৃণমূলের
এদিন এই বিষয়টি নিয়েই সেলিমকে প্রশ্ন করা হয় ৷ জবাবে প্রবীণ বামনেতা বলেন, "যা হচ্ছে, সেটা বাংলার কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অপমান ৷ হাতে খড়ি তাদেরই হয়, যাদের অক্ষরজ্ঞান থাকে না ৷ কিন্তু, আমাদের রাজ্যপাল তো উচ্চশিক্ষিত ৷ তিনি বাংলা শিখতেই পারেন ৷ কিন্তু, তার জন্য হাতে খড়ির কী প্রয়োজন ? যেকোনও একটি ভাষায় শিক্ষিত যেকোনও মানুষ চাইলেই অন্য ভাষা শিখতে পারেন ৷ আমরা যখন বাংলা শিখি, ইংরেজি শিখি, তার জন্য কি আলাদা আলাদা ভাষায় আলাদা আলাদাভাবে হাতে খড়ি দিতে হয় !"
একইসঙ্গে, সেলিম বলেন, "ভালো হত, যদি জেলে গিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের কাছে হাতে খড়ি নিতেন রাজ্যপাল ৷ তাহলে বাংলার শিক্ষাব্যবস্থার হাল কী, সেটা তিনি বুঝতে পারতেন !"
প্রসঙ্গত, রাজ্যপালের এই হাতে খড়ি দেওয়া নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই রাজনৈতিক আলোচনা, সমালোচনা চলছে ৷ যদিও তৃণমূল কংগ্রেস সেসব পাত্তা দিতে নারাজ ৷ তাদের বক্তব্য, জগদীপ ধনকড়ের আমলে রাজভবনের সঙ্গে নবান্নের যে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল, আজ তা অতীত ৷ সেক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে রাজ্যপালের হাতে খড়ি সর্বস্তরে ইতিবাচক বার্তা দেবে বলেই দাবি করছে ঘাসফুলশিবির ৷