কলকাতা, 18 নভেম্বর: নিজে পেশায় চিকিৎসক । অথচ তিনিই নাকি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে হুমকির চিঠি দেওয়ায় ধৃত চিকিৎসক অরিন্দম সেনকে নিয়ে এবার এমনই তথ্য সামনে এল ।
অরিন্দমকে নিয়ে ইতিমধ্যেই একাধিক চিকিৎসক এবং মনোবিদের সঙ্গে কথা বলেছেন কলকাতা পুলিশের তদন্তকারীরা । তাতে অরিন্দম প্যারানয়েড ডিসঅর্ডারে ভুগছেন বলে সামনে এসেছে । একজন রোগী কী ভাবে এই রোগে আক্রান্ত হন, রোগীদের মধ্যে কী কী উপসর্গ দেখা যায়, তা নিয়ে বিশিষ্ট মনোবিদ ওমপ্রকাশ সিংয়ের সঙ্গে কথা বলে ইটিভি ভারত । তিনি জানিয়েছেন, একজন সামাজিক মানুষই ধীরে ধীরে এই রোগী আক্রান্ত হন ।
আরও পড়ুন: Crime : কুলটিতে নাতনির জন্মদিনের পার্টিতে শূন্যে গুলি, ভাইরাল ভিডিয়ো
ওমপ্রকাশ জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত হতে হতে এই রোগের কবলে পড়েন একজন রোগী । তাঁর মনে হতে শুরু করে যে, সমাজকে অনেক কিছু দিলেও বিনিময়ে কিছুই পাননি । পূরণ হয়নি তাঁর কোনও আশা-আকাঙ্খাই । পাননি প্রাপ্য মর্যাদা । এই চিন্তাভাবনাই ক্রমশ তাঁর স্নায়ুকে গ্রাস করে । দীর্ঘদিন ধরে মনের মধ্যে পুষে রাখা এই যন্ত্রণাই তাঁকে অসামাজিক এবং বিকারগ্রস্ত করে তোলে ।
আলাপনকে হুমকির চিঠি পাঠানো এই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করছেন ওমপ্রকাশ । সরকারি আধিকারিক, নেতা-মন্ত্রী তো বটেই, প্রধানমন্ত্রী অথবা রাষ্ট্রপতিকেও চিঠি লিখতে পারেন এমন রোগী । উচ্চস্তরে চিঠি পাঠানোর আসল উদ্দেশ্য হল, সরকার থেকে প্রশাসনে তোলপাড় করে দেওয়া । যাতে সকলের নজর এসে পড়ে তাঁর উপর । এই ধরনের হুমকির চিঠি থেকে সমাজে যে প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়, তাতে আনন্দ পান রোগীরা ।
আরও পড়ুন: Journalists Agitation : বিহারে সাংবাদিক হত্যায় আসানসোলে প্রতিবাদ, জেলাশাসককে স্মারকলিপি
ওমপ্রকাশের মতে, এই ধরনের রোগীদের ঘটনায় প্রথমে রোগীর মেডিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ড জানা দরকার । তা নিয়ে লালবাজারের তদন্তকারীরা ইতিমধ্যেই এগোতে শুরু করেছেন । তদন্তে নেমে জেরা শুরু হতেই ধৃতের বয়ান শুনেই মনোবিদের সাহায্য নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা । আগামী দিনেও মনোবিদের সুপারিশ মেনেই অরিন্দমকে নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ।