কলকাতা, 12 এপ্রিল: নির্বাচনের নির্ঘণ্ট এখনও প্রকাশিত না-হলেও পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে ইতিমধ্যেই ময়দানে নেমে পড়েছে শাসকবিরোধী সব পক্ষ ৷ তবে রাজ্য প্রশাসনের তৎপরতায় এটা স্পষ্ট যে, নির্বাচন ঘোষণা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা ৷ বুধবার পঞ্চায়েত স্তরে পড়ে থাকা কাজ দ্রুত শেষ করার নিদান দিলেন রাজ্যের মুখ্য সচিব ৷ অন্যদিকে, চলতি মাসের শেষেই রাজ্য সরকারের সবকটি দফতরের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেও ৷ রাজ্য প্রশাসনের তৎপরতায় অনেকেই মনে করছেন, আগামী মাসের মাঝামাঝি সময়ে ঘোষণা হতে পারে রাজ্যের পঞ্চেয়েত ভোটের নির্ঘণ্ট ৷
দরজায় কড়া নাড়ছে পঞ্চায়েত ভোট। যে কোনও দিন নির্বাচন ঘোষণা হয়ে যেতে পারে। এই অবস্থায় বুধবার জেলাশাসক, মহকুমা শাসক ও ব্লক ডেভেলপমেন্ট আধিকারিক (বিডিও)-দের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী ৷ নবান্ন সূত্রে খবর, বৈঠকে পঞ্চায়েত স্তরে পড়ে থাকা কাজ আগামী মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। যার জেরে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, আগামী মে মাসেই রাজ্যের পঞ্চেয়েত ভোটের দামামা বাজতে চলেছে ৷
অন্যদিকে, নির্বাচনের আগে বিভিন্ন দফতরের বকেয়া কাজ নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠকের ডাক দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে আগামী 26 তারিখ এই বৈঠক হওয়ার কথা আছে। মুখ্যমন্ত্রীর এই পর্যালোচনা বৈঠকে রাজ্যের যাবতীয় দফতরের সচিব এবং মন্ত্রীদের উপস্থিত থাকারও নির্দেশ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি বিভিন্ন দফতরের যুগ্ম সচিবদেরও এই বৈঠকে থাকতে হবে বলেও নির্দেশে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এই বৈঠকের আগেই কোন প্রকল্পের কাজ কত দূর হয়েছে, তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলির একটি রিপোর্টও জমা করতে বলা হয়েছে সরকারের তরফে।
আগামী 19 এপ্রিলের মধ্যে দফতরগুলিকে এই রিপোর্ট জমা দিতে হবে। 26 তারিখের এই পর্যালোচনা বৈঠকে সেই রিপোর্টকে সামনে রেখেই মুখ্যমন্ত্রী আলোচনা করবেন বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে। আগের পর্যালোচনা বৈঠক থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, সরকারের তরফ থেকে বিভিন্ন দফতরকে দেওয়া কোনও বরাদ্দই ফেলে রাখা যাবে না। সূত্রের খবর, কোন দফতরে কত অর্থ বরাদ্দ হয়েছিল, উন্নয়ন খাতে সেই টাকার কতটা ব্যবহৃত হয়েছে, কোন প্রকল্পে কত টাকা খরচ হয়েছে, তার যাবতীয় তথ্য সংশ্লিষ্ট দফতরকে ওই বৈঠক জানতে হবে। পাশাপাশি নবান্নের তরফে জানা গিয়েছে, দফতর কোনও কাজ শুরু করেছে কিন্তু এখনও শেষ হয়নি, তাও বৈঠকে জানতে চাওয়া হবে।
আরও পড়ুন: দেশের সবচেয়ে 'গরিব' মুখ্যমন্ত্রী মমতা, সম্পত্তির শীর্ষে জগনমোহন
মোটের উপর সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন আসছে, ভোটের আগে সরকারি কাজে কোনওরকম ঢিলেমি চাইছেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। আর সে কারণেই জেলা স্তর থেকে সরাসরি রাজ্য প্রশাসনের উচ্চ স্তর পর্যন্ত হিসাব নিতে চাইছে সরকার ৷ আর সে কারণেই মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যের মুখ্যসচিব পৃথকভাবে বৈঠক করে রূপরেখা তৈরি করতে চাইছেন ৷