কলকাতা, 22 জুলাই : একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে মোদি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে জোটবদ্ধ হওয়ার বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । বিরোধীদের সঙ্ঘবদ্ধ করতে এবার দলের তিন শীর্ষ নেতা উদ্যোগী হলেন । বৃহস্পতিবার দিল্লি গিয়েছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় । তার সঙ্গে গিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর এবং দলের নেতা মুকুল রায় । অভিষেক-মুকুলদের পর আগামী 26 তারিখ দিল্লি যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । বৈঠক করতে পারেন জাতীয় এবং আঞ্চলিক দলের বিভিন্ন নেতা এবং নেত্রীর সঙ্গে । তার আগে বিরোধী জোটের কতটা জমি তৈরি করতে সক্ষম হবেন অভিষেক, মুকুল এবং পিকে ? সেটাই এখন প্রশ্ন ।
আজ দিল্লিতে দলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের বাড়িতে দলের অপর দুই শীর্ষ নেতা মুকুল রায় এবং যশবন্ত সিনহার সঙ্গে বৈঠকে বসেন অভিষেক । মূলত এই বৈঠক দিল্লিতে দলনেত্রীর সফরের জন্য জমি প্রস্তুতের জন্যই । তৃণমূল সূত্রে খবর, এই বৈঠক থেকেই দলের বিস্তার কর্মসূচি থেকে শুরু করে জোট কৌশল সব নিয়ে আলোচনা হয়েছে । বিশেষ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাইছেন, বিরোধীদের মধ্যে বোঝাপড়া বাড়াতে এখন থেকেই ময়দানে নেমে জোটবদ্ধ লড়াই শুরু করতে । যাতে দেশের মানুষের কাছে এই বিরোধী জোটের প্রতি একটা বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি হতে পারে । সেটাই এখন বিরোধী দলগুলোকে বোঝানোর চেষ্টা করতে হবে তৃণমূলকে ।
বৈঠকে তৃণমূলের অন্যতম শীর্ষ নেতা তথা দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি যশবন্ত সিনহাকে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ আলোচনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে । একই দায়িত্ব পেয়েছেন আরও এক শীর্ষ নেতা মুকুল রায়ও । এক্ষেত্রে অভিষেক মুকুলের যুগলবন্দিতে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে একটা শক্ত সংগঠন তৈরি করতে চাইছে তৃণমূল । আজকের আলোচনায় সেই বিষয়টিও উঠেছে । সবচেয়ে বড় কথা, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী মাসের গোড়ার দিকে ত্রিপুরা যাবেন অভিষেক । সেই সময় তার সফর সঙ্গী হতে পারেন মুকুল রায়ও ।
আরও পড়ুন : Sand Mining Policy : খাদান থেকে পাচার রুখতে বালি-নীতি ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
দিল্লি গিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল, কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধি, এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারদের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন । ইতিমধ্যেই কৃষক আন্দোলনে পাশে দাঁড়িয়ে চণ্ডীগড় যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ পেয়েছেন মমতা । তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা অনুসারে এবারের দিল্লি সফরে তার পক্ষে চণ্ডীগড়ে গিয়ে কৃষক নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা সম্ভব নয় । তবে তিনি জানিয়েছেন, কৃষি আন্দোলনের প্রতি তার পূর্ণ সমর্থন আছে । এক্ষেত্রে কৃষক নেতারা যদি দিল্লিতে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান তাহলে তিনি প্রস্তুত ।
মোটের উপর মুখ্যমন্ত্রীর এবারের দিল্লি সফর শুধু রাজ্য রাজনীতির জন্য নয়, জাতীয় রাজনীতির জন্যও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে । এখন দেখার যে বিরোধী জোটের কথা একুশের মঞ্চ থেকে তিনি বলেছেন, বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে সেই বিরোধী জোট 2024-এর লোকসভাকে মাথায় রেখে এখন থেকেই তৈরি করা সম্ভব হয় কিনা ।