কলকাতা, 31 জুলাই: খারিজি মাদ্রাসাগুলিকে স্বীকৃতি দিতে চায় পশ্চিমবঙ্গ সরকার ৷ তাই রাজ্যজুড়ে খারিজি মাদ্রাসাগুলির পরিকাঠামো নিয়ে সমীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সরকারের তরফে ৷ সোমবার বিধানসভায় এই কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তিনি জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার এই নিয়ে একটি উচ্চ-পর্যায়ের কমিটি তৈরি করছে ৷ ওই কমিটি আগামী ছ’মাসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেবে ৷ তার পর এই নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সরকার ৷
এ দিন বিধানসভার বাদল অধিবেশনে এই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলেন, ‘‘আমি যেটা বলতে চাই ৷ আমার সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যস্তরের একটি উচ্চ-পর্যায়ের কমিটি তৈরি করা হবে ৷ তারা পশ্চিমবঙ্গে খারিজি মাদ্রাসা সম্পর্কে সমীক্ষা করবে ৷ লক্ষ্য থাকবে - সেখানে শিক্ষার পরিকাঠামো উন্নয়ন করা, পড়ুয়াদের সামগ্রিক মানোন্নয়ন ৷ এই কমিটিতে বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ, সরকারি প্রতিনিধি ও স্থানীয় মুসলিম সমাজের প্রতিনিধিরা থাকবেন ৷ ছ’মাসের মধ্যে কমিটি রিপোর্ট পেশ করবে ৷ রাজ্য সরকার চাইছে সবাই যাতে রেজিস্ট্রেশন করতে পারে ৷’’
খারিজি মাদ্রাসা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য: এ দিন বিধানসভায় সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতর সংক্রান্ত একাধিক প্রশ্নের উত্তর দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷ সংখ্যালঘুদের উন্নয়ন নিয়ে একাধিক কথা বলেন ৷ সেই সময়ই এই খারিজি মাদ্রাসার প্রসঙ্গ তোলেন ৷ তিনি জানান, পশ্চিমবঙ্গে অনেক খারিজি মাদ্রাসা আছে ৷ এই মাদ্রাসাগুলি সরকারের আওতাভুক্ত নয় ৷ তারা নিজেদের পয়সায় নিজেরা চলে ৷
আরও পড়ুন: ডেঙ্গি নিয়ে বিধানসভায় বিবৃতি মুখ্যমন্ত্রীর, মুলতুবি প্রস্তাবে আলোচনা চেয়ে ওয়াক আউট বিজেপির
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান যে কিন্তু রাজ্য সরকার চাইছে যে চারিদিকে সবকিছু যখন আধুনিক হচ্ছে, তখন এই মাদ্রাসাগুলিও সেই সুযোগ পাক ৷ এখানে যে প্রায় 5 লক্ষ পড়ুয়া আছে, তারাও সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার সুযোগ পাক ৷ এর পরই মুখ্যমন্ত্রী উচ্চ-পর্যায়ের কমিটি তৈরির বিষয়টি উল্লেখ করেন ৷ পাশাপাশি এটাও বুঝিয়ে দেন যে কেন রাজ্য সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৷
বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলেন, ‘‘রেজিস্ট্রেশন না থাকলে কন্যাশ্রী, ঐক্যশ্রী, স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ পাচ্ছে না ৷ সুতরাং আমরা যদি সমীক্ষা করে দেখি যে এগুলোকে আমরা শিক্ষার দিক থেকে পড়ুয়াদের সাহায্য করতে পারি, তাহলে আমরা এটা নিশ্চয় করব ৷’’
আন-এডেড মাদ্রাসা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য: একই সঙ্গে রাজ্যের আন-এডেড মাদ্রাসা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী একটি ঘোষণা করেন ৷ তিনি জানান, রাজ্য সরকার চাইছে আন-এডেড মাদ্রাসাকে স্বীকৃতি দিতে চাইছে, যারা নিয়ম মেনে স্বীকৃতির জন্য আবেদন করেছে ৷ সরকার 235টি মাদ্রাসাকে মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে নিয়ে এসেছে ৷ শিক্ষকরাও অনুদান পাচ্ছেন ৷ আরও প্রায় 700 মাদ্রাসা রয়েছে, যারা স্বীকৃতির সমস্ত মাপকাঠি মেনেছে, কিন্তু এখনও অপেক্ষা করছে ৷ সরকার ঠিক করেছে অবিলম্বে এই মাদ্রাসাগুলিকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে ৷
আরও পড়ুন: 'আমার হৃদয় ব্যথিত', মণিপুর নিয়ে কেন্দ্রকে বিঁধে বার্তা মমতার