ETV Bharat / state

Mamata Banerjee: পায়ে চোটের জেরে দিল্লি-ধরনায় মমতা অনিশ্চিত! তবু নেত্রী 'আনপ্রেডিক্টেবল', মত দলের একাংশের - মমতা

চিকিৎসকের পরামর্শে তৃণমূলের দিল্লি-ধরনায় অনিশ্চিত মমতা ৷ মমতা বিহীন কর্মসূচি কেন্দ্রের উপরে প্রভাব ফেলতে পারবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে ৷ তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিধায়ক বলেন, "মানুষের স্বার্থের প্রশ্ন যেখানে জড়িয়ে সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিরকাল আনপ্রেডিক্টটেবল।"

ফাইল ছবি
Mamata Banerjee
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Sep 25, 2023, 2:04 PM IST

Updated : Sep 25, 2023, 2:13 PM IST

কলকাতা, 25 সেপ্টেম্বর: একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে 2 অক্টোবরের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানিয়েছিলেন রাজ্যের দাবি-দাওয়া নিয়ে এই ধরনায় থাকবেন তিনিও। এবার পায়ের চোটের কারণে দিল্লি-ধরনায় মমতার থাকা অনিশ্চিত হয়ে পড়ল। এখনও পর্যন্ত যা খবর তাতে বিদেশ সফরের ধকল এবং অতিরিক্ত হাঁটা-চলার কারণে পুরনো চোট আবারও বেগ দিচ্ছে মমতাকে। আগামী 10 দিন মুখ্যমন্ত্রীকে বিশ্রামের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। এই অবস্থায় দিল্লি-ধরনায় মমতার যোগদান প্রশ্নচিহ্নের মুখে।

কারণ চিকিৎসকের পরামর্শ মানলে 4 অক্টোবর পর্যন্ত গৃহবন্দি থাকতে হবে মুখ্যমন্ত্রীকে। যেতে পারবেন না নবান্নেও। সেদিক থেকে 2 অক্টোবর, গান্ধি জয়ন্তীতে রাজঘাটে প্রার্থনা এবং পরের দিন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রীর অফিসের দলীয় ধরনায় দেখতে পাওয়া যাবে না নেত্রীকে। এই নিয়ে দলের এক শীর্ষ নেতা বলেন, "সাধারণ মানুষের দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলনে বরাবরই সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। এক্ষেত্রে তিনি চেয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা 100 দিনের কাজ-সহ রাজ্যের বকেয়া নিয়ে আন্দোলনে উপস্থিত থাকতে। কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁকে যে পরামর্শ দিয়েছেন তাও গুরুত্বপূর্ণ। ফলে চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী তিনি হাজির হতে না-পারলেও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই কর্মসূচিকে নেতৃত্ব দেবেন।"

এদিকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত 2 এবং 3 অক্টোবর তৃণমূলের কর্মসূচি নিয়ে অনুমতি দেয়নি দিল্লি পুলিশ। তবে দিল্লির এই কর্মসূচি নিয়ে অনড় তৃণমূল। ইতিমধ্যেই জেলায় জেলায় প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। মন্ত্রী থেকে শুরু করে সাংসদ ও বিধায়করা দিল্লি যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছেন। একইসঙ্গে জেলায় জেলায় দিল্লির সমান্তরাল ধরনা কর্মসূচির প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।

রাজ্যস্তরে কলকাতার গান্ধি মূর্তিতে কর্মসূচি হবে। দিল্লি এবং গান্ধি মূর্তির ধরনার ছবি জায়ান্ট স্ক্রিনের মাধ্যমে প্রত্যেক জেলায় জেলায় পৌঁছে দেওয়ার প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। কিন্তু তৃণমূলের একাংশ মনে করছে শেষ মুহূর্তে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লির ধরনায় অংশগ্রহণ করতে না-পারলে জাতীয় ক্ষেত্রে আন্দোলনের ততটা প্রভাব পড়বে নাও পড়তে পারে। রাজ্যের সাংসদ, বিধায়ক, জেলা সভাপতিদের এই আন্দোলন শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকারের উপর কতটা চাপ তৈরি করতে পারবে তাও নিয়ে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

কারণ মমতার নেতৃত্বে কোনও কর্মসূচি আর তাঁকে ছাড়া কোনও কর্মসূচি দুইয়ের মধ্যে অনেক তফাৎ রয়েছে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। প্রসঙ্গত, এই নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল রাজনৈতিক বিশ্লেষক তথা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক রাজু রায়কে। তিনি বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি থাকলে কর্মসূচির যে প্রভাব পড়বে সেটা তাঁর অনুপস্থিতিতে সম্ভব নয়। দিল্লির কর্মসূচিতে মমতার উপস্থিতি কেন্দ্রের উপর বাড়তি চাপ তৈরির জন্য দরকারি ছিল। কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি উপস্থিত না-হতে পারলে কী আর করা যাবে?"

অন্যদিকে, রাজনৈতিক বিশ্লেষক তথা শিক্ষাবিদ অমল মুখোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি ঘোষণা না-করলেও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেই তাঁর রাজনৈতিক উত্তরাধিকারী হিসেবে বেছে নিয়েছেন। ফলে এটা বোঝাই যাচ্ছে দিল্লিতে এই কর্মসূচির নেতৃত্ব দেবেন অভিষেকই। কিন্তু মমতার উপস্থিতিতে কেন্দ্রের উপর যতটা চাপ তৈরি করবে, ততটা অভিষেকের উপস্থিতিতে হবে না।" এদিকে এই অনিশ্চয়তা নিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল বিধায়ক বলেন, "কর্মসূচিতে মুখ্যমন্ত্রীর হাজিরা নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে। কিন্তু মানুষের স্বার্থে প্রশ্ন যেখানে জড়িয়ে সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিরদিন আনপ্রেডিক্টটেবল। শেষ পর্যন্ত চিকিৎসকদের নিষেধ উপেক্ষা করে তিনি যে দিল্লি পৌঁছে যাবেন না সে কথা এখন থেকে বলা যায় না!

আরও পড়ুন: স্পেন সফরে ফের চোট বাঁ-পায়ে, মুখ্যমন্ত্রীকে 10 দিন

কলকাতা, 25 সেপ্টেম্বর: একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে 2 অক্টোবরের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানিয়েছিলেন রাজ্যের দাবি-দাওয়া নিয়ে এই ধরনায় থাকবেন তিনিও। এবার পায়ের চোটের কারণে দিল্লি-ধরনায় মমতার থাকা অনিশ্চিত হয়ে পড়ল। এখনও পর্যন্ত যা খবর তাতে বিদেশ সফরের ধকল এবং অতিরিক্ত হাঁটা-চলার কারণে পুরনো চোট আবারও বেগ দিচ্ছে মমতাকে। আগামী 10 দিন মুখ্যমন্ত্রীকে বিশ্রামের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। এই অবস্থায় দিল্লি-ধরনায় মমতার যোগদান প্রশ্নচিহ্নের মুখে।

কারণ চিকিৎসকের পরামর্শ মানলে 4 অক্টোবর পর্যন্ত গৃহবন্দি থাকতে হবে মুখ্যমন্ত্রীকে। যেতে পারবেন না নবান্নেও। সেদিক থেকে 2 অক্টোবর, গান্ধি জয়ন্তীতে রাজঘাটে প্রার্থনা এবং পরের দিন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রীর অফিসের দলীয় ধরনায় দেখতে পাওয়া যাবে না নেত্রীকে। এই নিয়ে দলের এক শীর্ষ নেতা বলেন, "সাধারণ মানুষের দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলনে বরাবরই সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। এক্ষেত্রে তিনি চেয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা 100 দিনের কাজ-সহ রাজ্যের বকেয়া নিয়ে আন্দোলনে উপস্থিত থাকতে। কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁকে যে পরামর্শ দিয়েছেন তাও গুরুত্বপূর্ণ। ফলে চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী তিনি হাজির হতে না-পারলেও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই কর্মসূচিকে নেতৃত্ব দেবেন।"

এদিকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত 2 এবং 3 অক্টোবর তৃণমূলের কর্মসূচি নিয়ে অনুমতি দেয়নি দিল্লি পুলিশ। তবে দিল্লির এই কর্মসূচি নিয়ে অনড় তৃণমূল। ইতিমধ্যেই জেলায় জেলায় প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। মন্ত্রী থেকে শুরু করে সাংসদ ও বিধায়করা দিল্লি যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছেন। একইসঙ্গে জেলায় জেলায় দিল্লির সমান্তরাল ধরনা কর্মসূচির প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।

রাজ্যস্তরে কলকাতার গান্ধি মূর্তিতে কর্মসূচি হবে। দিল্লি এবং গান্ধি মূর্তির ধরনার ছবি জায়ান্ট স্ক্রিনের মাধ্যমে প্রত্যেক জেলায় জেলায় পৌঁছে দেওয়ার প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। কিন্তু তৃণমূলের একাংশ মনে করছে শেষ মুহূর্তে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লির ধরনায় অংশগ্রহণ করতে না-পারলে জাতীয় ক্ষেত্রে আন্দোলনের ততটা প্রভাব পড়বে নাও পড়তে পারে। রাজ্যের সাংসদ, বিধায়ক, জেলা সভাপতিদের এই আন্দোলন শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকারের উপর কতটা চাপ তৈরি করতে পারবে তাও নিয়ে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

কারণ মমতার নেতৃত্বে কোনও কর্মসূচি আর তাঁকে ছাড়া কোনও কর্মসূচি দুইয়ের মধ্যে অনেক তফাৎ রয়েছে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। প্রসঙ্গত, এই নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল রাজনৈতিক বিশ্লেষক তথা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক রাজু রায়কে। তিনি বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি থাকলে কর্মসূচির যে প্রভাব পড়বে সেটা তাঁর অনুপস্থিতিতে সম্ভব নয়। দিল্লির কর্মসূচিতে মমতার উপস্থিতি কেন্দ্রের উপর বাড়তি চাপ তৈরির জন্য দরকারি ছিল। কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি উপস্থিত না-হতে পারলে কী আর করা যাবে?"

অন্যদিকে, রাজনৈতিক বিশ্লেষক তথা শিক্ষাবিদ অমল মুখোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি ঘোষণা না-করলেও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেই তাঁর রাজনৈতিক উত্তরাধিকারী হিসেবে বেছে নিয়েছেন। ফলে এটা বোঝাই যাচ্ছে দিল্লিতে এই কর্মসূচির নেতৃত্ব দেবেন অভিষেকই। কিন্তু মমতার উপস্থিতিতে কেন্দ্রের উপর যতটা চাপ তৈরি করবে, ততটা অভিষেকের উপস্থিতিতে হবে না।" এদিকে এই অনিশ্চয়তা নিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল বিধায়ক বলেন, "কর্মসূচিতে মুখ্যমন্ত্রীর হাজিরা নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে। কিন্তু মানুষের স্বার্থে প্রশ্ন যেখানে জড়িয়ে সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিরদিন আনপ্রেডিক্টটেবল। শেষ পর্যন্ত চিকিৎসকদের নিষেধ উপেক্ষা করে তিনি যে দিল্লি পৌঁছে যাবেন না সে কথা এখন থেকে বলা যায় না!

আরও পড়ুন: স্পেন সফরে ফের চোট বাঁ-পায়ে, মুখ্যমন্ত্রীকে 10 দিন

Last Updated : Sep 25, 2023, 2:13 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.