কলকাতা, 26 মে : আমফান আছড়ে পড়ার পর ছ'দিন কেটে গেছে । কিন্তু, এখনও বিদ্যুৎ আসেনি দক্ষিণ কলকাতার নেতাজি নগরের একাংশে । অভিযোগ, প্রশাসনের কোনও সহায়তা মেলেনি । ফলে আজ সকাল থেকেই নেতাজি নগর মোড়ে NSC বোস রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা । অবরোধে শামিল হন 80 বছরের এক বৃদ্ধাও ।
নেতাজি নগরের এই অংশটি কলকাতা পৌরনিগমের 97 ও 98 নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত । বিদ্যুৎহীন হয়ে থাকার জেরে চূড়ান্ত দুর্ভোগের সম্মুখীন হচ্ছেন বাসিন্দারা । তাই এই বিক্ষোভ বলে জানিয়েছেন তাঁরা । 80 বছরের বৃদ্ধা কল্যাণী মিত্র বলেন, " সকাল থেকে এখানে বসে আছি । বাড়িতে আমার কেউ নেই । গত 20 মে সন্ধ্যা থেকে বিদ্যুৎ, জল নেই । প্রশাসন, পুলিশ, নেতা কারও কাছ থেকে কোনও সাহায্য পাইনি । উপায় নেই । বাধ্য হয়ে আজ সাত দিনের দিন রাস্তায় এসে বসেছি । যতক্ষণ না কাজ হবে, যতক্ষণ না বিদ্যুৎ আসবে ততক্ষণ আমরা রাস্তাতেই বসে থাকব । "
স্থানীয় এক বাসিন্দা বাবলু ভট্টাচার্য বলেন, " পুলিশ প্রশাসনের কাছে যাওয়া হয়েছে । তবে, আমাদের কথা শোনার জন্য কেউ নেই । সেজন্য আমরা NSC বোস রোডে অবস্থান করে থাকব, যতক্ষণ না বিদ্যুৎ আসে । " স্থানীয় অন্য এক বাসিন্দা জয়দীপ রায় বলেন, "ছ'দিন ধরে আমরা বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছি । ছ'দিন ধরে আমরা দেখছি ৷ যাঁরা অবরোধ করছেন, সেখানে বিদ্যুৎ চলে আসছে । এটা থেকে আমরা কী শিখছি, জোর যেখানে সেখানে বিদ্যুৎ চলে আসবে । আমরা সবাই সামাজিক দূরত্ব মানছিলাম ৷ আজ সেটাও ভেঙে গেল । প্রশাসনের কাছে আমরা বার বার গেছি ৷ কিন্তু হতাশ হয়ে ফিরে আসতে হয়েছে । সকাল থেকে আমরা রাস্তায় রয়েছি ৷ প্রশাসনের যে কোনও অস্তিত্ব রয়েছে তা আমরা কেউ বুঝতেই পারিনি । আমরা কষ্টে আছি প্রশাসন কবে বুঝতে পারবে জানি না । " স্থানীয় অন্য এক বাসিন্দার অভিযোগ, " CESC বলছে আমরা প্রায়োরিটি লিস্টে নেই । আমরা বুঝতে পারছি না প্রায়োরিটির এই লিস্ট কারা তৈরি করেছেন । যিনি প্রায়োরিটি লিস্ট তৈরি করছেন, তাঁর কাছে আমাদের অনুরোধ, আমাদের প্রায়োরিটি লিস্টে ফেলুন । ছ'দিন ধরে বাচ্চা, বয়স্কদের নিয়ে আমরা দুর্ভোগের মধ্যে আছি । "
স্থানীয় এক বাসিন্দা রুমা ঘোষ দস্তিদার বলেন, " প্রত্যেকের বাড়িতে বাচ্চা, বয়স্করা রয়েছেন । অন্ধকারে জানালা খুললে মশার মধ্যে থাকতে হচ্ছে । অনলাইনে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে রয়েছে । বিদ্যুৎহীন অবস্থায় থাকার ফলে সবথেকে বড় সমস্যা হল জল পাচ্ছি না । " তনুশ্রী ঘোষ দস্তিদার নামে আর একজন বলেন, " যেদিন ঝড় হয়েছে, সেদিন বিকাল সাড়ে 5 টা থেকে বিদ্যুৎ চলে গেছে । আলো, জল ছাড়া কীভাবে আমরা আছি, বুঝতেই পারছেন । বলে বলে আমরা ক্লান্ত । কেউ আমাদের কোনও সাহায্য করছে না । বাধ্য হয়ে আজ আমরা রাস্তায় বসেছি । "