ETV Bharat / state

চরম ক্ষতির শিকার কলকাতা টেলিফোনস

author img

By

Published : Oct 10, 2020, 10:06 PM IST

Updated : Oct 16, 2020, 4:50 PM IST

কয়েক বছর আগেও কলকাতা টেলিফোনসের নিয়ন্ত্রণে ছিল সাড়ে 13 লাখ ল্যান্ড লাইন সংযোগ । পরিষেবা না পেয়ে অথবা দুর্বল পরিষেবার জন্য এখন ল্যান্ড লাইন সংযোগের সংখ্যা চার লাখেরও কম । বলছিলেন BSNL-র সার্কেল সভাপতি শিশির রায় । অবিলম্বে কলকাতা টেলিফোনসকে আগের জায়গায় ফিরিয়ে দিতে হবে । এই দাবিতে আগামী মঙ্গল এবং বুধবার সারাদিনব্যাপী অবস্থান-বিক্ষোভ করবে কলকাতা টেলিফোনস ঠিকা মজদুর ইউনিয়ন ।

Kolkata Telephone
Kolkata Telephone

কলকাতা, 10 অক্টোবর : এই মুহূর্তে কলকাতার টেলিফোনসের নিয়ন্ত্রণে থাকা 58 হাজার ল্যান্ড লাইন সংযোগ বিকল হয়ে রয়েছে। ছয় হাজার ব্রডব্যান্ড সংযোগ বিচ্ছিন্ন । 600-র বেশি সার্ভার বিকল হয়ে রয়েছে । কর্মী সংগঠন ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে ঘনঘন বৈঠক করছেন । অলিখিতভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আপাতত কর্মচারী না থাকায় বিকল টেলিফোন সচল হবার কোন সম্ভাবনা নেই । বিভিন্ন সরকারি ভবনের একাধিক টেলিফোন বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে । জরুরী পরিষেবা যেমন থানা, সরকারি অফিস, হাসপাতাল এবং বিশিষ্ট ব্যক্তির বাড়ির টেলিফোন সংযোগ দ্রুততার সঙ্গে সচল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তরফে ।

কয়েক বছর আগেও কলকাতা টেলিফোনসের নিয়ন্ত্রণে ছিল সাড়ে 13 লাখ ল্যান্ড লাইন সংযোগ । পরিষেবা না পেয়ে অথবা দুর্বল পরিষেবার জন্য এখন ল্যান্ড লাইন সংযোগের সংখ্যা চার লাখেরও কম । বলছিলেন BSNL-র সার্কেল সভাপতি শিশির রায় । অবিলম্বে কলকাতা টেলিফোনসকে আগের জায়গায় ফিরিয়ে দিতে হবে । এই দাবিতে আগামী মঙ্গল এবং বুধবার সারাদিনব্যাপী অবস্থান-বিক্ষোভ করবে কলকাতা টেলিফোনের ঠিকা মজদুর ইউনিয়ন ।

ক্ষতির শিকার কলকাতা টেলিফোনস ৷

একদিকে নদীয়ার কল্যাণী , অন্যদিকে হুগলি জেলার গঙ্গার তীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকায় BSNL-র একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল । ল্যান্ডলাইন টেলিফোন ব্যবহার করতেন মানুষ । তারপর মোবাইল সংযোগ সস্তায় পাওয়ায় ল্যান্ডলাইন পরিষেবা ছেড়েছেন অনেকেই । কিন্তু যারা একবার ল্যান্ডলাইন টেলিফোন ব্যবহার করেছেন তাঁরা অনেকেই ছাড়তে চাননি সেই টেলিফোন । এখনও সাড়ে চার লাখের কিছু কম মানুষ ল্যান্ডলাইন পরিষেবা পেয়ে থাকেন । গভীর অসুখ BSNL-র । চুক্তিভিত্তিক কর্মীরা গত 17 মাস বেতনহীন । সমগ্র দেশে 80 হাজার চুক্তিভিত্তিক কর্মী ছিলেন । এখন সংখ্যাটা কমে হয়েছে 30 হাজার । তাঁরাও বেতন পাচ্ছেন না । এরাজ্যে কলকাতা টেলিফোনের নিয়ন্ত্রণে 4200 চুক্তিভিত্তিক কর্মী রয়েছেন যারা বেতন পাচ্ছেন না ।

ঠিকা কর্মী লোকনাথ ঘোষ পরিবার নিয়ে বিপন্ন । দীর্ঘদিন বেতন না পাওয়ায় সংসারের চাকা ঘুরছে না । সন্তান, স্ত্রী, বাবা, মা'কে নিয়ে তাঁর পূর্ণ সংসার । তিনি জানান, গত বছরের জুন মাসের টাকা কয়েকদিন আগে পেয়েছেন । চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের বেতন 16542 টাকা । অথচ তাঁর দাবি, উল্লেখিত বেতনের অনেক কম পেয়েছেন তিনি । অর্থাৎ সরকার ঘোষিত টাকা পাচ্ছেন না কর্মীরা ।

কলকাতা টেলিফোনের কর্মী সংগঠনের নেতা শিশির রায় বলেন, "গত ছয় মাস ধরে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বাড়ির টেলিফোনটি বিকল হয়ে রয়েছে । এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে আমাদের পরিষেবার কী অবস্থা । প্রতিযোগিতার বাজারে সরকারি সাহায্য পেলে BSNL দেশজুড়ে খুব ভালোভাবে কাজ করতে পারত । এই সরকার কর্পোরেটদের সুযোগ-সুবিধা দেওয়ায় নিজস্ব পরিকাঠামো ধ্বংস করে ফেলছে । ইতিমধ্যেই চলতি বছরের 31 জানুয়ারি 79 হাজার কর্মীকে VRS নিতে বাধ্য করেছে সরকার । BSNL-র জন্য 4G স্পেক্ট্রাম টেন্ডার হল । দেশের সরকার তা বাতিল করে দিল চিনের ওপর দোষারোপ করে । অথচ বেসরকারি সংস্থাগুলো ফাইবার কিনে আনল চিন থেকে । তাঁরা চিনের প্রযুক্তি ব্যবহার করল । সরকার নীরব । এটাই হচ্ছে আত্মনির্ভর ভারত ।"

দীর্ঘ মাস বেতন না পেয়ে এখনও পর্যন্ত বিনা চিকিৎসায় মারা গিয়েছেন দুজন । এবং আত্মহত্যা করেছেন 11 জন BSNL-র চুক্তিভিত্তিক কর্মী । সরকারের বেসরকারিকরণের মনোভাব ও কর্মী ছাঁটাইয়ের ফলে চূড়ান্ত লোকসানের মুখে এবং অনিবার্য পতনের মুখে BSNL । কলকাতা টেলিফোনের অবস্থাও ভাল নয় । যদিও কর্মীরা আশায় বুক বাঁধছে । হয়তো সত্যিই "আচ্ছে দিন" আসবে ।

কলকাতা, 10 অক্টোবর : এই মুহূর্তে কলকাতার টেলিফোনসের নিয়ন্ত্রণে থাকা 58 হাজার ল্যান্ড লাইন সংযোগ বিকল হয়ে রয়েছে। ছয় হাজার ব্রডব্যান্ড সংযোগ বিচ্ছিন্ন । 600-র বেশি সার্ভার বিকল হয়ে রয়েছে । কর্মী সংগঠন ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে ঘনঘন বৈঠক করছেন । অলিখিতভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আপাতত কর্মচারী না থাকায় বিকল টেলিফোন সচল হবার কোন সম্ভাবনা নেই । বিভিন্ন সরকারি ভবনের একাধিক টেলিফোন বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে । জরুরী পরিষেবা যেমন থানা, সরকারি অফিস, হাসপাতাল এবং বিশিষ্ট ব্যক্তির বাড়ির টেলিফোন সংযোগ দ্রুততার সঙ্গে সচল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তরফে ।

কয়েক বছর আগেও কলকাতা টেলিফোনসের নিয়ন্ত্রণে ছিল সাড়ে 13 লাখ ল্যান্ড লাইন সংযোগ । পরিষেবা না পেয়ে অথবা দুর্বল পরিষেবার জন্য এখন ল্যান্ড লাইন সংযোগের সংখ্যা চার লাখেরও কম । বলছিলেন BSNL-র সার্কেল সভাপতি শিশির রায় । অবিলম্বে কলকাতা টেলিফোনসকে আগের জায়গায় ফিরিয়ে দিতে হবে । এই দাবিতে আগামী মঙ্গল এবং বুধবার সারাদিনব্যাপী অবস্থান-বিক্ষোভ করবে কলকাতা টেলিফোনের ঠিকা মজদুর ইউনিয়ন ।

ক্ষতির শিকার কলকাতা টেলিফোনস ৷

একদিকে নদীয়ার কল্যাণী , অন্যদিকে হুগলি জেলার গঙ্গার তীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকায় BSNL-র একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল । ল্যান্ডলাইন টেলিফোন ব্যবহার করতেন মানুষ । তারপর মোবাইল সংযোগ সস্তায় পাওয়ায় ল্যান্ডলাইন পরিষেবা ছেড়েছেন অনেকেই । কিন্তু যারা একবার ল্যান্ডলাইন টেলিফোন ব্যবহার করেছেন তাঁরা অনেকেই ছাড়তে চাননি সেই টেলিফোন । এখনও সাড়ে চার লাখের কিছু কম মানুষ ল্যান্ডলাইন পরিষেবা পেয়ে থাকেন । গভীর অসুখ BSNL-র । চুক্তিভিত্তিক কর্মীরা গত 17 মাস বেতনহীন । সমগ্র দেশে 80 হাজার চুক্তিভিত্তিক কর্মী ছিলেন । এখন সংখ্যাটা কমে হয়েছে 30 হাজার । তাঁরাও বেতন পাচ্ছেন না । এরাজ্যে কলকাতা টেলিফোনের নিয়ন্ত্রণে 4200 চুক্তিভিত্তিক কর্মী রয়েছেন যারা বেতন পাচ্ছেন না ।

ঠিকা কর্মী লোকনাথ ঘোষ পরিবার নিয়ে বিপন্ন । দীর্ঘদিন বেতন না পাওয়ায় সংসারের চাকা ঘুরছে না । সন্তান, স্ত্রী, বাবা, মা'কে নিয়ে তাঁর পূর্ণ সংসার । তিনি জানান, গত বছরের জুন মাসের টাকা কয়েকদিন আগে পেয়েছেন । চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের বেতন 16542 টাকা । অথচ তাঁর দাবি, উল্লেখিত বেতনের অনেক কম পেয়েছেন তিনি । অর্থাৎ সরকার ঘোষিত টাকা পাচ্ছেন না কর্মীরা ।

কলকাতা টেলিফোনের কর্মী সংগঠনের নেতা শিশির রায় বলেন, "গত ছয় মাস ধরে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বাড়ির টেলিফোনটি বিকল হয়ে রয়েছে । এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে আমাদের পরিষেবার কী অবস্থা । প্রতিযোগিতার বাজারে সরকারি সাহায্য পেলে BSNL দেশজুড়ে খুব ভালোভাবে কাজ করতে পারত । এই সরকার কর্পোরেটদের সুযোগ-সুবিধা দেওয়ায় নিজস্ব পরিকাঠামো ধ্বংস করে ফেলছে । ইতিমধ্যেই চলতি বছরের 31 জানুয়ারি 79 হাজার কর্মীকে VRS নিতে বাধ্য করেছে সরকার । BSNL-র জন্য 4G স্পেক্ট্রাম টেন্ডার হল । দেশের সরকার তা বাতিল করে দিল চিনের ওপর দোষারোপ করে । অথচ বেসরকারি সংস্থাগুলো ফাইবার কিনে আনল চিন থেকে । তাঁরা চিনের প্রযুক্তি ব্যবহার করল । সরকার নীরব । এটাই হচ্ছে আত্মনির্ভর ভারত ।"

দীর্ঘ মাস বেতন না পেয়ে এখনও পর্যন্ত বিনা চিকিৎসায় মারা গিয়েছেন দুজন । এবং আত্মহত্যা করেছেন 11 জন BSNL-র চুক্তিভিত্তিক কর্মী । সরকারের বেসরকারিকরণের মনোভাব ও কর্মী ছাঁটাইয়ের ফলে চূড়ান্ত লোকসানের মুখে এবং অনিবার্য পতনের মুখে BSNL । কলকাতা টেলিফোনের অবস্থাও ভাল নয় । যদিও কর্মীরা আশায় বুক বাঁধছে । হয়তো সত্যিই "আচ্ছে দিন" আসবে ।

Last Updated : Oct 16, 2020, 4:50 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.