কলকাতা, 19 জানুয়ারি: অধিবেশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ দিনেও অনুপস্থিত থাকছেন কাউন্সিলররা। অবস্থা এমন যে অধিবেশন শুরু করতে দরকারি কোরাম সংখ্যাই জোগাড় করতে বেগ পেতে হচ্ছে। মেয়র এসে বসে রয়েছেন। চেয়ারপার্সন সভায় আসতেও পারছেন না। বুধবার এই অবস্থা দেখে কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করলেন চেয়ারপার্সন মালা রায় (Mala Roy) থেকে শুরু করে মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। অন্যদিকে, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাউন্সিলরদের আচরণ ও নানা অভিযোগ নিয়ে সরব হলেন মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার।
বুধবার প্রায় ফাঁকা অধিবেশন কক্ষে মেয়র এসে বেশ কিছু সময় বসে থাকলেও কাউন্সিলরদের পাত্তা ছিল না। 144 জন কাউন্সিলরের হাতেগোনা কয়েক জন এসেছিলেন। এই পরিস্থিতিতে অধিবেশন চালু হলে মাঝ পথেই মেয়র বলেন, "মাসে একবার মাত্র অধিবেশন হয়। এটাকে গুরুত্ব দিন। 'কোরাম' না-হওয়ায় অধিবেশন শুরু হতে দেরি হয় ওইদিন। নিয়ম অনুসারে, নির্দিষ্ট সংখ্যক প্রতিনিধি না-থাকলে অধিবেশন শুরু করা যায় না। চেয়ারপার্সন 'কোরাম' না-হওয়ায় অধিবেশনে আসতে পারছেন না। অধিবেশন শুরু করা যাচ্ছে না। আপনাদের থেকে এমনটা কাম্য নয়। আপানাদের অনুরোধ, অধিবেশন শুরুর অন্তত 15 মিনিট আগে আসুন। পাশাপাশি, কাউন্সিলরদের প্রশ্নের গুণমান নিয়েও এদিন ক্ষোভ জানিয়েছেন চেয়ারপার্সন মালা রায়।
অন্যদিকে, ওইদিন শহরের কম্প্যাক্টর স্টেশনগুলির রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে প্রস্তাব তোলেন 95 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তপন দাশগুপ্ত। সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে একাংশ কাউন্সিলরদের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ জানান মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার। ডিসেম্বর থেকে শহরে উৎসেই জঞ্জাল পৃথকীকরণের জন্য বাড়ি বাড়ি সবুজ এবং নীল বালতি বিলি শুরু হয়েছে। 33 লক্ষ বালতি কেনা হয়েছে। কিন্তু অনেক ওয়ার্ডে সেই বালতিগুলি এখনও পর্যন্ত বিলি করা হয়নি। কাউন্সিলরদের একাংশ অনীহা দেখাচ্ছেন। কাজে ঢিলেমি দিচ্ছেন। বুধবার এমনই অভিযোগ করেন দেবব্রতবাবু।
আরও পড়ুন: অ্যাম্বুলেন্স ও শববাহী গাড়ি নিয়ে সরগরম পৌরনিগমের মাসিক অধিবেশন
তিনি বলেন, "কাউন্সিলররা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে থাকছেন তাই বালতি দিতে বাধা দিচ্ছে কর্মীদের। কাউন্সিলরের কাজ নয় এটা। অনেকেই বলেন, তার ওয়ার্ডে কর্মী আধিকারিক তাঁকে না-জানিয়ে কাজ করছেন। এটাই স্বাভাবিক। তাঁরা আপনাকে বলতে বাধ্য নয়। কোনও কিছু বলার মতো থাকলে নিশ্চই জানাবেন। কিন্তু সব জানিয়ে কাজ করবেন এমনটা নয়।" পাশাপাশি পৌর কর্মীদের নিয়ে অনেক কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণেরও অভিযোগ করেছেন তিনি।
তিনি আরও স্পষ্ট করে বলেন, "কাছের লোক নয়। কাজের লোক বাছুন। কেউ কাজ না-করলে সরিয়ে দিন। এভাবে দীর্ঘদিন চলতে পারে না। শ্রমিক ময়লা তোলার কাজ করবে। কাউন্সিলরের কাছের লোক বলে কোনও শ্রমিক সুপারভাইজারের কাজ করবেন, তা হবে না। উৎসে জঞ্জাল পৃথকীকরণ আগামী মাস দুয়েকের মধ্যে শহরজুড়ে সফলভাবে চালু করতে চাইছে কর্পোরেশন।" গতকাল সেই কথা জানিয়ে কাউন্সিলরদের সদর্থক পদক্ষেপ নিতে বলেন দেবব্রত মজুমদার। তিনি জানান, আগামী দু-তিন মাস ওয়ার্ডে অটো মাইকিং, লিফলেট বিলি, পাড়ায় পাড়ায় ব্যানার লাগিয়ে জঞ্জাল পৃথকীকরণ নিয়ে জনমানসে প্রচার করুন।