কলকাতা, 11 ডিসেম্বর: কামদুনি গণধর্ষণ মামলার দ্রুত শুনানির আবেদন নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন সেখানকার প্রাথমিক স্কুলের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক ও নির্যাতিতার ভাই । আজ তাঁরা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনেরালের সঙ্গে দেখা করেন ।
2013 সালের 7 জুন কামদুনি গণধর্ষণ ঘটে । এরপর 2016 সালের 31 জানুয়ারি নগর দায়রা আদালত আট অভিযুক্তের মধ্যে তিনজনের ফাঁসির সাজা শোনায় ৷ তিনজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয় ৷ দু'জনকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দেয় আদালত । এরপর নির্যাতিতার ভাই ও কামদুনির বাসিন্দাদের তরফে কলকাতা হাইকোর্টে এই রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করা হয় । দোষীদের সবাইকে যাতে ফাঁসির সাজা দেওয়া হয় সেই আবেদন জানিয়েছিলেন তাঁরা । দীর্ঘদিন ধরে সেই মামলার হাইকোর্টের একাধিক বেঞ্চে শুনানি হওয়ার পর সেটি বর্তমানে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে বিচারাধীন । আবেদনকারীরা চান, দ্রুত মামলার শুনানি করে নিষ্পত্তি করুক হাইকোর্ট । আজ তাঁরা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনেরালের সঙ্গে দেখা করেন । রেজিস্টার জেনেরাল আবেদনকারীদের চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানাতে বলেছেন ।
শিক্ষক প্রদীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, "দীর্ঘদিন ধরে হাইকোর্টে পড়ে রয়েছে মামলাটি । অভিযুক্তরা বহাল তবিয়তে রয়েছে ৷ এই সমস্ত ব্যাপারে আমরা আজ রেজিস্ট্রার জেনেরালের সঙ্গে দেখা করেছি । তিনি বলেছেন, চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানাতে । দ্রুত শুনানির বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি । "
নির্যাতিতার ভাই বলেন, "আমরা চাইছি সমস্ত অভিযুক্তদের ফাঁসি হোক ৷ কিন্তু এতদিন হয়ে গেলেও এই মামলার কোনও শুনানি হচ্ছে না ৷ বর্তমানে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে বিচারাধীন মামলাটি । আমরা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি চাই ।" আবেদনকারীদের তরফে আইনজীবী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, "ছয় বছর কেটে গেলেও মামলার নিষ্পত্তি হয়নি । 2 জন অভিযুক্ত নিম্ন আদালত থেকে বেকসুর খালাস পেয়েছিল ৷ তাদের বিরুদ্ধে আপিল করা হয় । 3 জনকে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়েছিল । নির্যাতিতার পরিবার এবং কামদুনিবাসীর তরফে যাদের যাবজ্জীবন সাজা হয়েছিল তাদেরও ফাঁসির দাবি করা হয় । যে তিনজনের ফাঁসির নির্দেশ দিয়েছিল নিম্ন আদালত তাদের ফাঁসির সাজা যাতে বহাল থাকে সেই আবেদনও জানানো হয় । সাধারণ মানুষের মনে আদালতের তরফে একটা আস্থা জাগিয়ে তোলা খুবই প্রয়োজন । প্রচুর মানুষ প্রশ্ন তুলছেন কেন বিচার ব্যবস্থায় এত দেরি হয় ? বহু মানুষ এনকাউন্টারের পক্ষে ঝুঁকে পড়ছেন । আমরা চাইছি দ্রুত কামদুনি গণধর্ষণ মামলার নিষ্পত্তি হোক ।"