কলকাতা, 10 অগস্ট: দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব ছিলেন বরাবরই ৷ আগামীতেও থাকবেন বলে আদালতে বসেই ঘোষণা করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় । তিনি বলেন, "দুর্নীতির বিরুদ্ধে হুইসলব্লোয়ারের কাজ কারওকে তো করতে হবে, সেটা আমি করে যাব ৷"
বৃহস্পতিবার একটি মামলার শুনানির সময় হঠাৎই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "পিএসসি নিয়োগের কী অবস্থা দাঁড়াল ? আমিও পিএসসি-র একটা বড় পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলাম । আমি দুটো সরকারি চাকরি করেছি । খালি পরীক্ষা ছাড়া আর কারওকে কিছু দিতে হয়নি । আদালতের নিয়োগেও বেনিয়ম হচ্ছে । আমি শুনেছি । আমায় একজন জানাল । আমি বিস্তারিত চেয়েছি । কিছু না হোক, আমি অন্তত হুইসলব্লোয়ারের কাজটা করে যাব । কারওকে তো একটা হুইসলব্লোয়ারের কাজ করতে হবে ।"
উল্লেখ্য, রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগে কী পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে, তা বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে ইতিমধ্যেই জেনেছে গোটা দেশবাসী । শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগে দুর্নীতিকে কেন্দ্র করে রাজ্যের একের পর এক মন্ত্রী, বিধায়ক থেকে শুরু করে ছোট, মেজো তৃণমূল নেতা এখন সংশোধনাগারে । শুধুমাত্র শিক্ষক নিয়োগের অন্তত 12টি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় । পাশাপাশি সম্প্রতি পৌরসভায় নিয়োগেও দুর্নীতি সামনে আসায় তিনি সিবিআইকে আলাদা এফআইআর দায়ের করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন । এ বার পিএসসি-সহ আদালতের নিয়োগ নিয়েও মুখ খুললেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ।
আরও পড়ুন: 'আদানিকে বেচে দিন', বেতন না দেওয়ায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের রোষের মুখে ইস্টার্ন কোলফিল্ড
পাবলিক সার্ভিস কমিশনের নিয়োগেও অস্বচ্ছতা ধরা পড়েছে । হাইকোর্টে সেই নিয়ে একাধিক মামলা বিচারাধীন । এই পরিস্থিতিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এই মন্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ । তিনি একটা সময় পরীক্ষা দিয়ে ডব্লিউবিসিএস অফিসার হিসাবে চাকরি পেয়েছেন । সেই প্রসঙ্গ তুলেই এ দিন সরব হলেন বিচারপতি ।
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য, "এখন পিএসসি-র অবস্থা দেখলে খারাপ লাগে। চোখের সামনে একটা সিস্টেম খারাপ হয়ে গেল । আমিও এক সময় পিএসসি পরীক্ষা দিয়ে সরকারি চাকরি করেছি । আমি দুটো সরকারি চাকরি করেছি । কারওকে এক টাকাও দিতে হয়নি । তখন অত্যন্ত স্বচ্ছ ছিল ।"
প্রাথমিকের একটি মামলায় এখন শিক্ষক ও ছাত্রদের সম্পর্কের কথা বলতে গিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় পিএসসি নিয়ে মন্তব্য করেন । তাঁর কথায়, "পিএসসি-তে 28 নম্বর 82 নম্বর হয়ে গেল । ভাবা যায় ! খারাপ লাগে ।"