কলকাতা, 21 ডিসেম্বর: বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের উপর ক্ষেপে গিয়ে তাঁর এজলাস বয়কটের ডাক দিয়েছেন বার অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবীরা ৷ তাঁদের মান ভাঙাতে আবেগী আবেদন রাখলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ৷ আইনজীবীদের প্রতি তাঁর আবেদন, "নতুন বছরের দিকে তাকিয়ে মান অভিমান ভুলে যান, সবাই আসুন এজলাসে ৷"
মামলার সওয়াল করতে গিয়ে হেসে ফেলেছিলেন আইনজীবী । ক্ষুব্ধ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁকে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন । পরে অবশ্য সেই নির্দেশ প্র্যত্যাহারও করে নেন তিনি । কিন্তু জল গড়িয়ে যায় অনেকটা । বার অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবীরা ঠিক করেন, আজ সকাল থেকেই বয়কট করবেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস । তাই সমস্যা মেটাতে নিজেই বারের আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বললেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ।
তবে বারের দাবি মতো সরাসরি ক্ষমা চাননি তিনি । তিনি হাইকোর্টের দুই নম্বর বারে, যেখানে আইনজীবী প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বসেন, সেখানে গিয়ে বলেন, "আমি ওই প্রসেনজিৎকে খুব ভালোবাসি । আমায় ও খুবই ভালোবাসে । তাই হেসে ফেলেছিল । নতুন বছরের দিকে তাকিয়ে মান অভিমান ভুলে আমরা এগিয়ে যাই । সবাই এজলাসে আসুন । সকলের মঙ্গল কামনা করে ।"
এ দিন সকালেই কলকাতা হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস বয়কট করেন আইনজীবীরা । তাই আজ অধিকাংশ আইনজীবী সওয়ালের সময় অনুপস্থিত ছিলেন তাঁর এজলাসে । তবে আবেদনকারীরা নিজে সওয়াল করলে সে ক্ষেত্রে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সেই মামলার শুনানি গ্রহণ করেছেন ।
বিচারপতি জানান, সব পক্ষ উপস্থিত না থাকলে তিনি কোনও মামলার নির্দেশিকা জারি করবেন না । বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এজলাসে জানান, আজ বেলা দেড়টা নাগাদ তিনি কলকাতা হাইকোর্টের দুই নম্বর বারে যাবেন আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলতে । তিনি আইনজীবীদের অনুরোধ করবেন, সব আইনজীবীরা তাঁর এজলাসে যেন আসেন মামলা করতে । তবে তিনি কোনও দুঃখ প্রকাশ করবেন না । আইনজীবীদের বুঝিয়ে বলবেন । সেই মতোই বারে গিয়ে সব মিটিয়ে নেওয়ার আর্জি জানালেন তিনি ।
উল্লেখ্য, গত 18 ডিসেম্বর মামলার শুনানির সময় কথা বলতে বলতে হেসে ফেলেছিলেন আইনজীবী প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তাতে বেজায় চটে গিয়ে রাগে ফেটে পড়েন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় । তিনি এতটাই ক্ষুব্ধ হন যে, ওই আইনজীবীকে শেষ পর্যন্ত হাইকোর্টের শেরিফের জেল হেফাজতে পাঠিয়ে দেন ।
আরও পড়ুন: