আসানসোল, 9 ডিসেম্বর: গরুপাচার মামলায় শুক্রবার অনুব্রত মণ্ডলের শুনানি থাকলেও তাঁর আইনজীবী এদিন আর জামিনের জন্য আবেদন করেননি । বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী আগামী 22 ডিসেম্বর পর্যন্ত অনুব্রত মণ্ডলকে জেল হেফাজতে পাঠান । এদিন শুনানির সময় কেস ডায়েরি পড়তে পড়তে হঠাৎই থমকে যান বিচারক (Judge Surprised to See the Case Diary of Anubrata Mondal)। বলেন, "আমার 20 বছরের সার্ভিস লাইফে এ জিনিস শুনিনি, দেখা তো দূরের কথা ।"
শুক্রবার অনুব্রত মণ্ডলের শুনানিতে আরেকবার ভোলেবোম রাইস মিলের অ্যাকাউন্ট ডি-ফ্রিজের আবেদন করা হয় । যদিও সেই বিষয়ে শুনানি 22 ডিসেম্বরেই হবে বলে জানান বিচারক । অনুব্রত মণ্ডলের যে দু'টি মোবাইল ফোন ফরেনসিকে রয়েছে তা ফেরত পাওয়ার জন্য এদিন আদালতে আবেদন করেন অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবী সোমনাথ চট্টরাজ । সে বিষয়েও কোর্টে এদিন শুনানি হয়নি ।
তবে গরুপাচার মামলার সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসার কোর্টে জানান, ফরেনসিক বিভাগ থেকে ফিরে আসার পর সিবিআই মালখানায় রয়েছে মোবাইল দু'টি । কিন্তু তদন্তের স্বার্থেই ওগুলো এখনই দেওয়া যাবে না । তদন্ত চলছে । ওগুলোর কাজ আছে । বিচারক অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবীকে বলেন, "মোবাইল ফেরত পেতে লিখিত আবেদন করুন ।"
আরও পড়ুন : ফের 14 দিনের জেল হেফাজত অনুব্রতর, আজও জামিনের আবেদন করলেন না আইনজীবী
শুক্রবারের শুনানিতে 14 দিনের তদন্তের আপডেট বিচারকের কাছে জমা করেন সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসার সুশান্ত ভট্টাচার্য । আপডেট ফাইল দেখতে চোখ আটকে যায় বিচারকের । তদন্তকারী অফিসারকে ডেকে একটি কাগজে আঙুল দেখিয়ে ফিস ফিস করে বেশ কিছু কথা বলেন বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী । তার মধ্যে বিচারক যে কথাটি তদন্তকারী অফিসারকে বলেন সেটি হল, "আমার 20 বছরের সার্ভিস লাইফে এ জিনিস শুনিনি । দেখা তো দূরের কথা ।"
বিচারকের এই কথার পর থেকেই জল্পনা শুরু হয়েছে ৷ সিবিআই প্রদত্ত সেই সিডি বা কেস ডায়েরি এখন বিচারকের কাছে । অন্যান্য দিনের মতো এদিনও বীরভূম থেকে অনুব্রত'র বহু অনুগামী আসেন এবং এজলাসেও ঢোকেন । তাঁদের দেখে এদিন বিচারক জিজ্ঞেস করেন এনারা কারা ? এত লোক কেন এখানে ঢুকেছেন ? তিনি সেই সমস্ত বাড়তি লোকজনদেরকে এজলাস থেকে সরে যেতে বলেন ।
আদালত কক্ষের বাইরে এদিন বীরভূমের নেতা ও কর্মীদের সঙ্গে এক প্রস্থ ফিসফিস করে আলোচনাও সেরে নেন অনুব্রত মণ্ডল ৷ তবে কোনও কথা যাতে বাইরে না-যায় তাই নিচু স্বরে কথা বলছিলেন কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে ৷ এই বিষয়ে বীরভূম জেলার সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় জানান, দাদার অভাব আছেই । কিন্তু তাও আমরা কোনওভাবে সেই অভাব পূরণ করার চেষ্টা করছি । আজকে প্রচুর অনুগামী আসে দাদাকে দেখতে ।
আরও পড়ুন : সংশোধনাগারে বজরংবলী স্মরণে অনুব্রত ! ফুল-মিষ্টি পৌঁছল আদালত চত্বরে