কলকাতা, 21 অগাস্ট : অবশেষে জাগুয়ার গাড়ি থেকে মিলল তথ্যের 'বাক্স' ৷ আদতে সেটি EDR (ইভেন্ট ডেটা রেকর্ডার) । জাগুয়ার কর্তৃপক্ষের তরফে দিল্লি থেকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ এলেন । কিন্তু তাতেও জট খুলল না । কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, যে বিশেষজ্ঞ পাঠিয়েছে জাগুয়ার কর্তৃপক্ষ তিনি EDR এনকোড করতে পারেন । কিন্তু ডিকোড যিনি করতে পারেন, তিনি আসেননি । ফলে শেক্সপিয়ার সরণিতে জাগুয়ার দুর্ঘটনায় ধোঁয়াশা এখনও অব্যাহত ।
শেক্সপিয়র সরণি থানা এলাকার দুর্ঘটনা কী ভাবে ঘটল? কত স্পিডে চলছিল গাড়ি? দুর্ঘটনার আগে ঠিক কোথায় কোথায় গেছিলেন আরসালান পারভেজ? গোয়েন্দা বিভাগ তদন্তভার হাতে নেওয়ার পরে এগুলোই জানতে চাইছে এখন । সেই সূত্রে গাড়িটির EDR গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে পারে বলে মনে করছে কলকাতা পুলিশ । গাড়িটি অত্যন্ত আধুনিক । গাড়িতে বসানো আছে EDR । যা থেকে গাড়িটির কত গতিবেগে ছিল, সিট বেল্ট বাঁধা ছিল কি না অথবা গাড়িটির কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছিল কি না সমস্ত তথ্যই পাওয়া যাবে । এই সব তথ্য বিশ্লেষণ করলে পাওয়া যাবে অনেক কিছুই । কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, আজ EDR ডিকোডার বিশেষজ্ঞ শহরে আসতে পারেন । তারপরই পরিষ্কার হবে অনেক কিছু ।
তবে এ বিষয়ে তদন্তের কাজে অনেকটাই এগিয়েছেন গোয়েন্দারা । জাগুয়ার যে মার্সিডিজ়ে ধাক্কা মেরেছিল, তদন্তকারীরা সেই মার্সিডিজ় গাড়িকে ছাড়পত্র দিয়েছেন । সেটিকে ঘাতক গাড়ি হিসেবে বিবেচনা করছেন না তাঁরা । CCTV ফুটেজ বলছে, ওই গাড়িটি 40-50 কিলোমিটার গতিবেগে ছিল । তবে ওই ফুটেজ দেখে বোঝা সম্ভব হচ্ছে না জাগুয়ারটির গতিবেগ কত ছিল । তবে কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে নেতাজিনগর খুনে ব্যবহৃত অত্যাধুনিক থ্রি ডি স্ক্যানার ক্যামেরা দিয়ে আশপাশের বাড়ি, রাস্তা, দোকান, পুলিশ কিয়স্ক, এমন কী দুর্ঘটনাস্থানের ছবি তোলা হয় । এই ছবি তদন্তের কাজে অনেকটাই সাহায্য করবে বলে মনে করছে পুলিশ ।
শনিবার রাতে লওডন স্ট্রিটে জাগুয়ার গাড়িটি প্রথমে ধাক্কা মারে মার্সিডিজ় গাড়িকে । তারপর ধাক্কা মারে 3 পথচারীকে । তার মধ্যে দু'জন বাংলাদেশের নাগরিক । তাঁদের SSKM হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন । ঘটনার জেরে গ্রেপ্তার করা হয় আরসালান রেস্তরাঁ চেনের মালিকের ছেলে আরসালানকে ।
পুলিশ সূত্রে জানা যায় , মৃত দু'জনের নাম মইনুল আলম এবং ফারহানা ইসলাম তানিয়া । মইনুলের বয়স 36 । বাড়ি বাংলাদেশের ঝিনাইদহে । আর তানিয়ার বয়স তিরিশ । বাড়ি ঢাকায় । তৃতীয় ব্যক্তির অবশ্য তেমন বড় চোট লাগেনি । তাঁকে SSKM-এ প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয় । তিনিও বাংলাদেশের নাগরিক । নাম কাজি মহম্মদ সফি রহমত উল্লাহ । বয়স ৩৬ । দুর্ঘটনাগ্রস্ত মার্সিডিজ় গাড়িতে থাকা চালক, যাত্রীরাও আহত হয়েছেন । তাঁদের নাম অমিত কাজারিয়া এবং কণিকা কাজারিয়া । পরিবারের লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে নিয়ে যায় । পরে তাঁদের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করা হয় ।