কলকাতা, 14 অগাস্ট: "উপাচার্য থাকলে আমাদের এই ধরণের সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হয়, নইলে সবটা তো আমাদের উপর চলে আসে ৷ উপাচার্য ছাড়া অনুমতি দেওয়া তো কঠিন ৷" বর্তমানে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে উপার্য না থাকায় কর্তৃপক্ষ কি সিদ্ধান্ত হীনতায় ভুগছে ? এই প্রশ্নের উত্তরে সোমবার এই মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু ৷ গত বুধবার রাতে যাদবপুরে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনার পর এদিনই প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ে যান রেজিস্ট্রার ৷ এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে সংবাদমাধ্যমের সামনে কেঁদে ফেলেন তিনি । পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি । এদিন রেজিস্ট্রারের এই মন্তব্যের পর প্রশ্ন উঠছে, তিনি কি ঘুরিয়ে রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুললেন ? কারণ সম্প্রতি এখানকার অস্থায়ী উপাচার্যকে রাজভবনের নির্দেশেই পদত্যাগ করতে হয় ৷
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেল বিল্ডিং থেকে পড়ে গিয়ে স্নাতক স্তরের প্রথম বর্ষের বাংলা বিভাগের এক পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় বর্তমানে রাজ্যজুড়ে আলোচনা শুরু হয়েছে ৷ যাদবপুরের মতো ঐতিহ্যবাহী, দেশের অন্যতম সেরা এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব়্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে ৷ বুধবারের ঘটনার তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই 3 জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ৷ তাদের মধ্যে 2 জন যাদবপুরের বর্তমান পড়ুয়া, একজন প্রাক্তনী ৷ এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে কর্তৃপক্ষের ভূমিকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির ভূমিকা নিয়ে ৷ এই প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের এই মন্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ৷ উপাচার্য না থাকায় অ্যান্টি ব়্যাগিং কমিটির বৈঠক, ইসি বৈঠকের মতো বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে যে সমস্যা হচ্ছে তা রেজিস্ট্রারের বক্তব্যেই পরিষ্কার ৷
তবে কি যাদবপুরকাণ্ডের দায় পরোক্ষভাবে রাজ্যপালের উপরই চাপিয়েছেন রেজিস্ট্রার, বিতর্ক শুরু হয়েছে বিষয়টি নিয়ে । ঘটনা হল, অধ্যাপক সুরঞ্জন দাস যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি পদ থেকে অব্যাহতি নেওয়ার পর অধ্যাপক অমিতাভ দত্ত অন্তর্বর্তীকালীন ভিসির দায়িত্ব দেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস । কিন্তু দিন কয়েক আগেই অমিতাভ দত্তকে ভিসি পদ থেকে সরিয়ে দেন তিনি ৷ তারপরে আর নতুন করে কোনও উপাচার্য নিয়োগ হয়নি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে । আর এই পরিস্থিতির মধ্যেই ছাত্র মৃত্যুর ঘটনা অন্যমাত্রা পেয়েছে ৷ আন্টি র্যাগিং কমিটির ব্যর্থতার কারণেই ওই ছাত্রের মৃত্যু হল কি না সেই প্রশ্ন উঠছে ৷
আরও পড়ুন: 'ছুটিতে ছিলাম, ফোন বন্ধ ছিল'; যাদবপুরকাণ্ডের চারদিন পর বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে মন্তব্য রেজিস্ট্রারের
অমিতাভ দত্তের ইস্তফা দেওয়া নিয়েও মুখ খুলেছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু । তিনি বলেছিলেন, "যিনি নিয়োগ করছেন, তিনি আবার ইস্তফা দিতে বলছেন ।" বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন সিসিটিভি নেই, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে ৷ এই বিষয়ে স্নেহমঞ্জু বসু বলেন, "2014 সালে সিসিটিভি লাগানো হয়েছিল । তারপর কী ঘটনা ঘটেছিল, কেন তা সরিয়ে নেওয়া হল তা দেখতে হবে ৷ নিশ্চিয়ই কিছু হয়েছিল ৷ সবাই যদি চাইত তাহলে তো বসেই যেত ৷"