কলকাতা, 25 অক্টোবর: আর দু'মাস পরেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক সমাবর্তন সভা (Jadavpur University Convocation) অনুষ্ঠিত হবে । তবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় যে আর্থিক সংকটের (Extreme fund crunch) মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তাতে সভার আয়োজন নিয়ে মাথায় হাত পড়েছে কর্তৃপক্ষের । তাই এ বার রাজ্য সরকারকে চিঠি দিল কর্তৃপক্ষ ।
অতিমারির জেরে গত দু'বছর বন্ধ থাকার পর এ বছর ডিসেম্বর মাসে আবার হতে চলেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন । তবে ধাপে ধাপে কমেছে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বরাদ্দ । ব্যাপক আর্থিক সংকটের মধ্যে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় । এ বছরে বার্ষিক সমাবর্তন হলেও হবে না বিশেষ বা সাম্মানিক সমাবর্তন । এমনটাই জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ । প্রতিবারের মতো এ বারেও সমাবর্তন সভা বড় পরিসরে করা যাবে কি না, তা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে অধ্যাপকদের মনে ।
2017 সালের পর থেকেই ধাপে ধাপে কমেছে আর্থিক অনুদান । এরপর করোনা সংক্রমণের জেরে সেই আর্থিক অনুদানের পরিমাণ আরও হ্রাস পায় । এর ফলে থমকে গিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়নের কাজ । শুধু তাই নয়, করোনা কালে যখন একটানা দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল বিশ্ববিদ্যালয়, তখন আর্থিক অনুদান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যার সমুখীন হতে হয়েছিল গবেষণার সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থীদেরও ।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, "যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বেতন বাদ দিয়ে বার্ষিক খরচ হয় প্রায় 45 কোটি টাকা । চলতি বছরে দুই ধাপে 12 কোটি টাকা পেয়েছে কর্তৃপক্ষ । তৃতীয় ধাপের টাকা এলে এই সংখ্যাটা 18 কোটিতে গিয়ে দাঁড়াবে । তাই এই আর্থিক সংকটের মধ্যে কত ভালো ভাবে সমাবর্তন সভা করা যাবে, সেই বিষয়টা নিয়েও আমাদের মনে একটা আশংকা রয়েছে কারণ গত দুবছর করোনা কালের সমাবর্তন সভা করা যায়নি ৷ স্বাভাবিকভাবেই এই বছর যাতে খুব ভালো করে এই সমাবর্তন সভা করা যায় সেটাই আমাদের ইচ্ছা ।"
আরও পড়ুন: বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলির তালিকায় যাদবপুর-সহ দেশের 75টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
তিনি আরও বলেন, "যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোড রয়েছে, তাদের বৈঠকে উপাচার্য সুরঞ্জন দাসকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে রাজ্য সরকারকে যেন চিঠি দিয়ে আটকে থাকা বরাদ্দ টাকা দেওয়ার জন্য আবেদন করা হয় । বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত সমস্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার চূড়ান্ত বিভাগ হচ্ছে এই কোড যেখানে প্রতিটি দফতরের প্রধানরা থাকেন ।"
চলতি বছরে বেতন বাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজ্য সরকারি ব্যয় বরাদ্দ 23 শতাংশ কমেছে । গবেষণার খাতেও টাকা বন্ধ হয়েছে । ডিএসটির মতো প্রজেক্টের ক্ষেত্রে শর্ত চাপানো হয়েছে । জানানো হয়েছে যে, বাজেটের 25 ভাগ ব্যয়ভার বহন করতে হবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে । যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস বলেন, "যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারকে এই বিষয়টি জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে । আমরা আশা করছি খুব দ্রুতই আমাদের আবেদনে সাড়া দেবে সরকার ।"
প্রসঙ্গত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক সমাবর্তনের দুটি ভাগ থাকে । একটি হল স্পেশাল বা বিশেষ সমাবর্তন । আরেকটি হল সাধারণ সমাবর্তন । এ বছর বিশেষ সমাবর্তন করা হবে না বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ।