কলকাতা, 19 ফেব্রুয়ারি : তাপস পালের মৃত্যুর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে কার্যত দায়ি করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ ক্ষোভ উগরে দিলেন BJP পরিচালিত সরকার ও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা CBI-এর বিরুদ্ধে ৷ বললেন, "কেন্দ্রের প্রতিহিংসাপরায়ণ আচরণের শিকার হয়েছে কয়েকজন । এতদিন জেলের মধ্যে বন্দী করে রাখা হয়েছে ওকে । দিনের পর দিন লাঞ্চনা-গঞ্জনা সহ্য করতে হয়েছে ৷ এতেই মানুষটা শেষ হয়ে গিয়েছে ।" আজ রবীন্দ্রসদনে তাপস পালকে শেষশ্রদ্ধা জানাতে এসে একথা বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷
কৃষ্ণনগর থেকে দু'বারের তৃণমূল সাংসদ ছিলেন তাপস পাল । কিন্তু বিতর্কিত মন্তব্য, রোজ়ভ্যালিকাণ্ড তাঁকে কোণঠাসা করে দেয় । তাপস পালের ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, শেষের দিকে নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েছিলেন এই তারকা সাংসদ । একই কথা শোনা গেল তৃণমূল সুপ্রিমোর গলায় । তাঁর মতে, দীর্ঘদিন CBI-র জেরা, মানসিক চাপের জেরে তাপস অসুস্থ হয়ে পড়েছিল । বলেন, "কেন্দ্রের প্রতিহিংসাপরায়ণ পরিকল্পনা থেকে কেউ রেহাই পাচ্ছে না ।" সুলতান আহমেদের অকাল মৃত্যুর প্রসঙ্গও টেনে এনেছেন তিনি । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "তাপস, সুলতান এদের অকাল মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না । অসময়ে শিল্পীদের চলে যাওয়া আমি মেনে নিতে পারছি না ৷ কেউ অন্যায় করলে তাকে জেলে রাখা উচিত ৷ কিন্তু চার্জশিট ছাড়াই দিনের পর দিন তাঁদের আটকে রাখা হয়েছে । তবে যথাযথ বিচার হলে ঠিক আছে । অনেককেই ওরা ধরেছে ৷ শ্রীকান্ত মোহতার অবস্থাও ভালো নয় ৷ কোন পর্যায়ে কেসগুলি আছে আমি জানি না ৷ তবে, এতদিন ধরে জেলে ভরে রাখাটা একটা কৌশল৷"
শোকপ্রকাশ করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দায়ি করেন মমতা । BJP কে কটাক্ষ করে মমতার বক্তব্য, "মানুষের জীবন শেষ করে দিচ্ছে এরা৷ চার্জশিট ছাড়াই জেলবন্দী ছিল তাপস৷ কেন্দ্রীয় সংস্থার চাপে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে৷"
গতকাল মৃত্যুর অনেকক্ষণ পর টুইট করেন মমতা । এরপর থেকে আর একটিও কথা শোনা যায়নি মুখ্যমন্ত্রীর তরফে । ঠিক তারপরই গুঞ্জন উঠতে শুরু করেছিল, হয়ত তাপস পালকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে আসবেন না মুখ্যমন্ত্রী । নদিয়ায় সেই বিতর্কিত মন্তব্য ও রোজ়ভ্যালিকান্ডের পর যে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল সেটাই বজায় রাখতে চাইছেন তৃণমূল সুপ্রিমো । কিন্তু জল্পনার অবসান ঘটিয়ে আজ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে হাজির হন মমতা । তাপস পালের মৃত্যুতে কেন্দ্রকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন তিনি ।