কলকাতা, 5 জুন: করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় আহতদের দেখতে এসএসকেএম হাসপাতালে এসে রেলের বিরুদ্ধে কার্যত দেহ লোপাটের অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার আহতদের সঙ্গে দেখা করে তাদের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়ে আশ্বস্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ আর এর সঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী জানান, চিহ্নিত করা যায়নি এমন অনেক দেহ ছিল ৷ দু'দিনেই কার্যত সব সাফ করে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি ৷ একই সঙ্গে, যাবতীয় প্রমাণ মুছে ফেলা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি ৷
সোমবার নবান্ন টোল প্লাজায় প্রথমে রেল দুর্ঘটনায় মৃতদের শ্রদ্ধা জানান মুখ্যমন্ত্রী ৷ এরপর সেখান থেকেই সরাসরি এসএসকেএম হাসপাতালে পৌঁছে যান তিনি ৷ বিকেল চারটে নাগাদ হাসপাতালের ভিতরে ঢোকেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ প্রায় একঘণ্টা এদিন হাসপাতালের ভিতরে আহতদের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ পাশাপাশি অন্যান্য রোগী যারা ভর্তি রয়েছেন ট্রমা কেয়ার বিভাগে তাদের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। বিকেল পাঁচটা নাগাদ হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে এসে আগামিকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার কটকে যাওয়ার কথাও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় আহত এবং নিহতের সংখ্যা নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷ সেই সঙ্গে হতাহতের হিসাবে গড়মিল আছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তিনি ৷ এদিনও তার ব্যতিক্রম হল না ৷ রাজ্যে মোট 206 জন আহত ব্যক্তির চিকিৎসা চলছে বলে স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে জানানো হয়েছিল ৷ এসএসকেএম হাসপাতালে তিনজনের চিকিৎসা চলছে ৷ এদিন আহতদের দেখে হাসপাতালের থেকে বেরিয়ে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "এখানে আমি সব রোগীর সঙ্গে দেখা করেছি। একজনের পা বাদ গিয়েছে, একজনের হাতের সমস্যা আছে। এখানে সব চিকিৎসকরাই খুব যত্ন নিয়ে চিকিৎসা করছেন ৷ সকলেই আপাতত স্থিতিশীল আছেন।"
আরও পড়ুন: আহতদের পরিবারের সদস্যদের হোমগার্ডের চাকরি, মঙ্গলে ফের ওড়িশা যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী
আগামিকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার কটকে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে ভুবনেশ্বর যাওয়ার কথা আছে তাঁর। আর সেই কথা বলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "এখনও পর্যন্ত প্রায় 120 জনের দেহ সনাক্ত করা যাচ্ছে না। যাদের দেহ চিহ্নিত করা যায় না, তাদের ডিএনএ টেস্ট করা হয়। কিন্তু ওরা তো দু'দিনের মধ্যেই প্রমাণ-সহ সব সাফ করে দিল। আমার মেদিনীপুর যাওয়ার ইচ্ছা আছে। সেখানে প্রায় 66 জন ভর্তি রয়েছেন।" হাসপাতালের বাইরে এসে মুখ্যমন্ত্রী কথা বলেন চিকিৎসার জন্য আসা অন্যান্যদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও। বাইক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ডানকুনি থেকে ভর্তি হয়েছেন অভিষেক দে নামে এক ভদ্রলোক। তার স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা দে বলেন, "আমার স্বামী ভর্তি আছে সেই কথা আমরা চিৎকার করে মুখ্যমন্ত্রীকে বলি ৷ উনি বললেন যে দেখে এসেছেন।" আচমকা মুখ্যমন্ত্রীকে সামনে থেকে দেখতে পেয়ে এবং তাঁর সঙ্গে কথা বলে অভিভূত অভিষেক দে'র বাড়ির লোক ৷