কলকাতা, 17 মার্চ : মালদা বন্যাত্রাণে দুর্নীতির ঘটনায় সিএজি (কন্ট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেল অফ ইন্ডিয়া)কে তদন্ত করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট (High Court Directs CAG Probe into Corruption Case in Malda Flood) । 20 জুনের মধ্যে তদন্ত করে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষী ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ ।
এর আগে শুনানিতে মামলাকারীদের প্রকৃত প্রাপকদের একটি তালিকা রাজ্যের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট । সেই নির্দেশ মতো রাজ্যকে তালিকা দেওয়া হলেও সেই তালিকা এখনও খতিয়ে দেখতে পারেনি রাজ্য বলে আদালতে জানানো হয় । তারপরই প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ সিএজিকে সমস্ত আর্থিক লেনদেন খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন ।
আরও পড়ুন : HS Examination 2022 : বদলাল উচ্চমাধ্যমিকের সূচি, 6 থেকে 15 এপ্রিল থাকছে না কোনও পরীক্ষা
প্রসঙ্গত, মালদা জেলায় 2017 সালের অগস্ট মাসে বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় হরিশ্চন্দ্রপুর ব্লকের বড়ই গ্রাম পঞ্চায়েত । ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করতে একটি বিশেষ প্রকল্প আনে রাজ্য সরকার । প্রকল্প অনুযায়ী বন্যায় যাঁদের ঘর-বাড়ি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গিয়েছে, তাঁদের 70000 আর যাঁদের অল্প ক্ষতি হয়েছে তাঁদের 3300 টাকা করে দেওয়ার কথা জানানো হয় । কিন্তু পরে দেখা যায় এই টাকা খুব কমই প্রকৃত প্রাপকদের হাতে গেছে । বেশি টাকাই চলে গিয়েছে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের হাতে ।
পঞ্চায়েত প্রধান থেকে শুরু করে এলাকার নেতা-নেত্রীরা নিজেদের পছন্দমতো ব্যক্তিদের নাম তুলে দিয়েছেন তালিকায় বলে অভিযোগ ওঠে । এক এক জনের নামে একাধিক বার টাকা ঢোকারও অভিযোগ ছিল । তার বিরুদ্ধেই কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন এলাকারই বাসিন্দা আবদুল মান্নান নামে এক ব্যাক্তি ।
মামলা দায়ের হওয়ার পর দফায় দফায় রাজ্য রিপোর্ট দিয়ে জানায় যে, প্রথম দফায় 315 জনের অ্যাকাউন্টে ভুল করে টাকা চলে গিয়েছিল । তার একটি তালিকাও দেওয়া হয় আদালতে ৷ যার জেরে ফেরত আসে প্রায় 10 লক্ষ 40 হাজার টাকা । পরে ফের প্রায় 10 লাখ 50 হাজার টাকা ফেরত দেন আরও 15 জন।
মামলাকারীর তরফে আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী ও অনিন্দ্য ঘোষ প্রশ্ন তোলেন, রাজ্য কেন প্রকৃত সংখ্যা আদালতের সামনে প্রকাশ করছে না । তারপরই হাইকোর্ট মামলাকারীকে প্রকৃত প্রাপকদের তালিকা স্থানীয় ব্লক উন্নয়ন আধিকারিকের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল । কিন্তু প্রায় 1200 জনের সেই তালিকা এখনও খতিয়ে দেখা হয়নি বলেই আদালতে জানানো হয় ৷ তারপরই সিএজি তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের ।