কলকাতা, 27 মার্চ: শহর উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম সব মিলিয়ে কয়েকলাখ হকার । সন্ধ্যে হলেই জ্বলে ওঠে আলো, চলে পাখা । কিন্তু কারও কাছে নেই আইনি বিদ্যুৎ সংযোগ বা নিজস্ব মিটার। একটা বড় অংশ চলে হুকিং করে। একাংশ টাকার বিনিময়ে হকারদের বেআইনি ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করে। কোথাও এই টাকা রোজ হিসেবে নেওয়া হয়, তো কোথাও মাসিক। এসবের অবসান ঘটাতে কলকাতা কর্পোরেশনের পরিকল্পনা হকারদের বিকল্প পথে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া। সেটা হলো সৌর বিদ্যুৎ (Solar Power in Kolkata)। শীঘ্রই কলকাতার হকার জোনগুলোতে কলকাতা কর্পোরেশনের তরফে বসানো হবে সোলার প্যানেল ।
ইতিমধ্যেই শহরের হকার্স জোন লোহার কাঠামো ও টিনের শেড দিয়ে তৈরি করতে অনুমোদন দিয়েছে টাউন ভেন্ডিং কমিটি বা টিভিসি । সেই কাঠামোর উপরেই বসানো হবে সোলার প্যানেল । আর মডেল হিসেবে সূচনা হবে গড়িয়াহাট থেকেই । এই গোটা প্রকল্প কীভাবে বাস্তবায়িত হবে, তার প্রাথমিক পর্যায়ে সমীক্ষাও হয়ে গিয়েছে। তবে স্টলের কাঠামো ঝড়-জলের সময় সোলার প্যানেল কতটা ধরে রাখা যাবে, তা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়েছে। সে বিষয়ে সোলার প্যানেল বসানোর কাজে নিযুক্ত পৌরনিগমের আলোক বিভাগের ইঞ্জিনিয়রদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
গড়িয়াহাট মোড়ে বছর তিনেক আগে একটি খ্যাতনামা বস্ত্র বিপনি বিধ্বংসী আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছিল। হকারদের বহু দোকান ক্ষতিগ্রস্থ হয় । অভিযোগ উঠেছিল হকাদের দিকে ৷ হুকিং করে বিদ্যুৎ নেওয়ার ফলে শর্টসার্কিট হয়ে সেই ঘটনা ঘটেছিল বলে জানা য়ায়। তারপর থেকে সতর্ক হয় পৌরনিগম ৷ সেখানে হকারদের কিয়স্ক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পৌর প্রশাসন। তবে নানা কারণে সেটা হয়ে ওঠেনি। এই দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রুখতে বাল্ক মিটার লাগানোর কথাও বলা হয়েছিল। প্রত্যেক হকারকে নিজস্ব মিটার দেওয়া হবে বলেও উল্লেখ করা হয়। তবে আইনি জটিলতার কারণে তা সম্ভব হয়নি। অবশেষে এলাকার স্থানীয় বিধায়ক ও কলকাতা কর্পোরেশনের হকার পুনর্বাসন সংক্রান্ত বিভাগের মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার এই বিকল্প পথের সন্ধান দেন ।
আরও পড়ুন : চলতি মাসেই শুরু হাম ও রুবেলা টিকাকরণ, অসহযোগিতার অভিযোগ বেসরকারি স্কুলের বিরুদ্ধে
এপ্রসঙ্গে দেবাশিস কুমার জানান, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। গড়িয়াহাটে এই ব্যবস্থা সফল ভাবে করা গেলে আগামিদিনে শহরের অন্যান্য হকার জোনেও এমনটা হবে। গড়িয়াহাটে কলকাতার প্রথম টিভিসি সমীক্ষা অনুসারে হকার পুনর্বাসনের কাজ শুরু হয়েছে। প্লাস্টিকের ছাউনি খুলে লোহার কাঠামোর স্টল করা হচ্ছে । এমনটা ইতিমধ্যেই আছে হাতিবাগান, শ্যামবাজার এলাকায়। এই স্টলের লম্বা ছাদে সোলার প্যানেল বসানোর চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। পৌর কর্তৃপক্ষের তরফে ইতিমধ্যে এলাকা ঘুরে দেখা হয়েছে।