কলকাতা, 18 জানুয়ারি: রাজ্যপাল হলেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে ভাষা সমস্যা সাংবিধানিক প্রধান পদে থাকা মানুষটিকে বোঝার ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে যায়। তবে বাংলার নয়া রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (CV Ananda Bose) একটু ব্যতিক্রমী, প্রথমদিন থেকেই বোঝা গিয়েছিল তা। মুখের কথায় নয়, কাজে করে দেখানোতেই বিশ্বাসী। যেদিন এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মেঘের দেশে প্রচারে গিয়ে বললেন, "পরেরবার আসলে আপনাদের ভাষাতেই কথা বলব।" ঠিক সেদিনই বাংলার রাজ্যপাল সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি বাংলা লেখা এবং বাংলা ভাষায় কথা বলা শিখবেন। আর সরস্বতী পুজোর দিন হাতেখড়ি অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে হবে তার শিক্ষার শুরু। বুধবার রাজভবন সূত্রে জানা গেল তেমনটাই ৷
রাজভবন তরফে খবর, 26 জানুয়ারি অর্থাৎ সরস্বতী পুজোর দিন রাজভবনের ইস্ট লনে বিকেল পাঁচটায় আয়োজিত হবে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের হাতেখড়ি অনুষ্ঠান (Hate Khori ceremony of Governor CV Ananda Bose)। অ-আ, ক-খ লেখা শিখবেন তিনি ৷ সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে সব তদারকি করবেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বাংলার ইতিহাসে বহুভাষিক রাজ্যপালের অভাব নেই। কিন্তু বাংলার সংস্কৃতিকে এভাবে আত্মস্থ করার চেষ্টা করেছেন এমন রাজ্যপাল অবশ্যই হাতেগোনা ৷ আর সিভি আনন্দ বোসকে সেই তালিকাভুক্তই করছে ওয়াকিবহাল মহল।
তাঁর পরিবারের নেতাজি প্রেম সর্বজনবিদিত। এই নেতাজি প্রেম থেকেই নিজের পদবিতে বোস যুক্ত হয়েছে বাংলার রাজ্যপালের ৷ বুধবার প্রমাণিত হলো শুধু দেখানোর জন্য নয়, বাস্তবে বাংলার রাজ্যপাল হিসাবে তার এ রাজ্যের প্রতি কতোটা আবেগ রয়েছে। রাজ্যপাল হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে তিনি বারংবার বাংলার ভূয়ংসী প্রশংসা করেছেন সিভি আনন্দ বোস ৷ কিন্তু এই প্রশংসা যে নিছক নয়, বুধবার তিনি কাজেও প্রমাণ করে দিলেন ৷
আরও পড়ুন: তৃণমূল ছাড়া কোনও রাজনৈতিক বিকল্প নেই ! মেঘালয়বাসীকে বার্তা মমতার
বিভিন্ন সময়ে এই রাজ্যপালকে বলতে শোনা গিয়েছে তিনি বাংলার দত্তক পুত্র। আগামীতে তিনি বাংলায় একটা বইও লিখতে চান। ওয়াকিবহাল মহল বলছে এই শিক্ষা কি শুধুমাত্র বই লেখার জন্যই? নাকি প্রশাসনিক কাজকর্মে বহু ক্ষেত্রে যে বাংলা তার বাস্তব পরিস্থিতি বোঝার জন্য অন্তরায় হয়ে যায় এই ভাষা শিক্ষার মাধ্যমে সেই সীমাবদ্ধতা দূর করতে চাইছেন রাজ্যপাল। সেক্ষেত্রে রাজ্যপালের এই শিক্ষা আগামিদিনে সরকারের জন্য সিঁদুরে মেঘ ডেকে আনছে না তো! প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে ইতিউতি ৷