ETV Bharat / state

Panchayat Election 2023: মনোনয়ন জমাকে কেন্দ্র করে বলি পাঁচ, মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে সরব বিরোধীরা

বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন জমা নেওয়া শেষ হয়েছে ৷ তবে এবারের মনোনয়ন শুরুর দিন ও শেষের দিন রক্ত ঝরল রাজ্যে ৷ প্রাণ হারালেন পাঁচজন ৷ কিন্তু এই ঘটনাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ বৃহস্পতিবার তাঁর বক্তব্যে যেন সেই বার্তাই ধরা পড়েছে ৷ এমনটাই মত বিরোধী শিবিরের ৷

author img

By

Published : Jun 15, 2023, 11:00 PM IST

Updated : Jun 15, 2023, 11:07 PM IST

Etv Bharat
মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে সরব বিরোধীরা

কলকাতা, 15 জুন: 2023 এর পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন প্রক্রিয়া শেষ। বৃহস্পতিবার তিনটে পর্যন্ত মনোনয়ন জমা দেওয়ার সুযোগ ছিল। আদালতের তরফ থেকে আগে থেকেই সতর্ক করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল স্পর্শকাতর জেলাগুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য নিতে ৷ কিন্তু এর ফল যা হওয়ার তাই হল। দিনের শেষে বোমা, গুলি আর রক্তপাতে যুদ্ধক্ষেত্রের চেহারা নিল বাংলার একাধিক জায়গা। একদিনেই মৃত্যু হল পাঁচ জনের। অথচ আইনশৃঙ্খলা যার হাতে তিনি অর্থাৎ রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান ঘটনায় বিশেষ উদ্বিগ্ন নন। অন্তত তাঁর কথা শুনে তো তেমনটাই মনে হয়েছে বিরোধীদের ৷ এদিনের মৃত্যু নিয়ে বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী টেনে আনেন স্থানীয় ঘটনার কথা।

প্রসঙ্গত, তৃণমূল কংগ্রেসের নব জোয়ার কর্মসূচি আগামীকাল অর্থাৎ শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হতে চলেছে। শেষ দিনের কর্মসূচিতে কাকদ্বীপে একই মঞ্চে দেখা যাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তার আগে আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন ডায়মণ্ড হারবারে। সেখানে প্রশাসনিক বৈঠক করেন তিনি। প্রশাসনিক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এদিনের ঘটনাবলি সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া দেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এই পরিস্থিতিতে মমতার গলায় যা শোনা গেল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন রাজনৈতিক মহলের অনেকেই।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে যেদিন দক্ষিণ 24 পরগণায়, সেদিনই ভাঙড়ে প্রাণ গেল তিনজনের। অথচ যার হাতে স্বরাষ্ট্র দফতরের মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতর রয়েছে তিনি অর্থাৎ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এই ঘটনায় বড় কিছু দেখতে পেলেন না। জেলায় দাঁড়িয়ে তিনি বললেন, প্রায় 74 হাজার বুথ ৷ সেখানে মাত্র তিন থেকে চারটে অঞ্চলে গণ্ডগোল হয়েছে। সেটাও স্থানীয় ব্যাপার। তৃণমূল কংগ্রেস কোনওভাবেই এর সঙ্গে যুক্ত নয়।

আরও পড়ুন: স্বামীর বাঁধা গানই জয়ের হাতিয়ার, অন্যভাবে মনোনয়ন জমা দিলেন তৃণমূল প্রার্থী নূরজাহান

এদিন বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরই প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী মহল। আসলেই কি বিষয়ের গুরুত্ব বুঝতে পারছেন না মুখ্যমন্ত্রী ? নাকি সব দেখেও না দেখা করছেন তিনি? রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "যেখানে তৃণমূল কর্মীদের দেখা যাচ্ছে বাঁশ-বন্দুক নিয়ে আইএসএফ কর্মীদের মারতে, সেখানে মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের হয়ে সাফাই গাইছেন। তিনি তো লেডি কিম। আজ যেখানে বিরোধীরা মনোনয়ন জমা দিতে পারল না, 24 এর লোকসভা নির্বাচনে সেখানে তৃণমূলের হার নিশ্চিত।"

এদিন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু এই ঘটনায় পালটা প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী যদি জানেন, এই ঘটনাগুলোর সঙ্গে তৃণমূল যুক্ত নয়, তাহলে কে যুক্ত তার নাম কেন বলে দিচ্ছেন না মুখ্যমন্ত্রী।" এদিন রাজ্য সরকার এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে কাঠগড়ায় তুলে বিমান বসু বলেন, "চোখে কেউ যদি ঠুলি পড়ে থাকেন আর কানে তুলো দিয়ে থাকেন তাহলে দেখতে-শুনতে অসুবিধা হয় বৈকি।"

এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবি তুলেছেন সিপিএম নেতা বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, "আদালতের নির্দেশে যারা মনোনয়ন দিতে পারছেন না তাঁদের মনোনয়ন দিতে নিয়ে যাওয়ার কথা পুলিশের ৷ সেই জায়গায় পুলিশের সামনেই বিরোধীদলের কর্মীদের উপরে আক্রমণ হয়েছে ৷ গুলি করে তাঁদের খুন করা হয়েছে ৷ এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত। মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনের মাথায় থেকে খুনিদের প্রশ্রয় দিচ্ছেন। তাঁর প্রশ্রয়েই এসব হচ্ছে।"

আরও পড়ুন: 'শাসকের রক্তচক্ষু ডরাই না', 7 মাসের সন্তানকে কোলে নিয়ে বিজেপির হয়ে মনোনয়ন দম্পতির

এই ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে কংগ্রেসও। কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ তথা প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য এই প্রসঙ্গে বলেন, "আমি জানি না কিসের ভিত্তিতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এবং পুলিশ মন্ত্রী এ ধরনের মন্তব্য করেছেন। এগুলি সবই যদি আঞ্চলিক ঘটনা হয়, তাহলে সার্বিক ঘটনা কোনটা! পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণা হয়েছে সবে ৷ ইতিমধ্যেই পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাহলে নির্বাচন চলাকালীন আর কতজন মানুষের মৃত্যু দেখতে হবে? কতগুলি আঞ্চলিক ঘটনা ঘটবে? সেটাই ভাবতে অবাক লাগছে ।"

কলকাতা, 15 জুন: 2023 এর পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন প্রক্রিয়া শেষ। বৃহস্পতিবার তিনটে পর্যন্ত মনোনয়ন জমা দেওয়ার সুযোগ ছিল। আদালতের তরফ থেকে আগে থেকেই সতর্ক করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল স্পর্শকাতর জেলাগুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য নিতে ৷ কিন্তু এর ফল যা হওয়ার তাই হল। দিনের শেষে বোমা, গুলি আর রক্তপাতে যুদ্ধক্ষেত্রের চেহারা নিল বাংলার একাধিক জায়গা। একদিনেই মৃত্যু হল পাঁচ জনের। অথচ আইনশৃঙ্খলা যার হাতে তিনি অর্থাৎ রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান ঘটনায় বিশেষ উদ্বিগ্ন নন। অন্তত তাঁর কথা শুনে তো তেমনটাই মনে হয়েছে বিরোধীদের ৷ এদিনের মৃত্যু নিয়ে বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী টেনে আনেন স্থানীয় ঘটনার কথা।

প্রসঙ্গত, তৃণমূল কংগ্রেসের নব জোয়ার কর্মসূচি আগামীকাল অর্থাৎ শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হতে চলেছে। শেষ দিনের কর্মসূচিতে কাকদ্বীপে একই মঞ্চে দেখা যাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তার আগে আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন ডায়মণ্ড হারবারে। সেখানে প্রশাসনিক বৈঠক করেন তিনি। প্রশাসনিক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এদিনের ঘটনাবলি সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া দেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এই পরিস্থিতিতে মমতার গলায় যা শোনা গেল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন রাজনৈতিক মহলের অনেকেই।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে যেদিন দক্ষিণ 24 পরগণায়, সেদিনই ভাঙড়ে প্রাণ গেল তিনজনের। অথচ যার হাতে স্বরাষ্ট্র দফতরের মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতর রয়েছে তিনি অর্থাৎ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এই ঘটনায় বড় কিছু দেখতে পেলেন না। জেলায় দাঁড়িয়ে তিনি বললেন, প্রায় 74 হাজার বুথ ৷ সেখানে মাত্র তিন থেকে চারটে অঞ্চলে গণ্ডগোল হয়েছে। সেটাও স্থানীয় ব্যাপার। তৃণমূল কংগ্রেস কোনওভাবেই এর সঙ্গে যুক্ত নয়।

আরও পড়ুন: স্বামীর বাঁধা গানই জয়ের হাতিয়ার, অন্যভাবে মনোনয়ন জমা দিলেন তৃণমূল প্রার্থী নূরজাহান

এদিন বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরই প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী মহল। আসলেই কি বিষয়ের গুরুত্ব বুঝতে পারছেন না মুখ্যমন্ত্রী ? নাকি সব দেখেও না দেখা করছেন তিনি? রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "যেখানে তৃণমূল কর্মীদের দেখা যাচ্ছে বাঁশ-বন্দুক নিয়ে আইএসএফ কর্মীদের মারতে, সেখানে মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের হয়ে সাফাই গাইছেন। তিনি তো লেডি কিম। আজ যেখানে বিরোধীরা মনোনয়ন জমা দিতে পারল না, 24 এর লোকসভা নির্বাচনে সেখানে তৃণমূলের হার নিশ্চিত।"

এদিন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু এই ঘটনায় পালটা প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী যদি জানেন, এই ঘটনাগুলোর সঙ্গে তৃণমূল যুক্ত নয়, তাহলে কে যুক্ত তার নাম কেন বলে দিচ্ছেন না মুখ্যমন্ত্রী।" এদিন রাজ্য সরকার এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে কাঠগড়ায় তুলে বিমান বসু বলেন, "চোখে কেউ যদি ঠুলি পড়ে থাকেন আর কানে তুলো দিয়ে থাকেন তাহলে দেখতে-শুনতে অসুবিধা হয় বৈকি।"

এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবি তুলেছেন সিপিএম নেতা বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, "আদালতের নির্দেশে যারা মনোনয়ন দিতে পারছেন না তাঁদের মনোনয়ন দিতে নিয়ে যাওয়ার কথা পুলিশের ৷ সেই জায়গায় পুলিশের সামনেই বিরোধীদলের কর্মীদের উপরে আক্রমণ হয়েছে ৷ গুলি করে তাঁদের খুন করা হয়েছে ৷ এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত। মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনের মাথায় থেকে খুনিদের প্রশ্রয় দিচ্ছেন। তাঁর প্রশ্রয়েই এসব হচ্ছে।"

আরও পড়ুন: 'শাসকের রক্তচক্ষু ডরাই না', 7 মাসের সন্তানকে কোলে নিয়ে বিজেপির হয়ে মনোনয়ন দম্পতির

এই ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে কংগ্রেসও। কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ তথা প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য এই প্রসঙ্গে বলেন, "আমি জানি না কিসের ভিত্তিতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এবং পুলিশ মন্ত্রী এ ধরনের মন্তব্য করেছেন। এগুলি সবই যদি আঞ্চলিক ঘটনা হয়, তাহলে সার্বিক ঘটনা কোনটা! পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণা হয়েছে সবে ৷ ইতিমধ্যেই পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাহলে নির্বাচন চলাকালীন আর কতজন মানুষের মৃত্যু দেখতে হবে? কতগুলি আঞ্চলিক ঘটনা ঘটবে? সেটাই ভাবতে অবাক লাগছে ।"

Last Updated : Jun 15, 2023, 11:07 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.