কলকাতা, 4জুলাই : লকডাউনে শহরে বাড়ছে দুই চাকার যানের ব্যবহার । বেড়েছে সাইকেল, স্কুটি এবং মোটর বাইকের চাহিদা । একইভাবে বাজারে নতুন করে জায়গা করে নিচ্ছে ই-সাইকেলও । এই ব্যাটারিচালিত সাইকেল একবার চার্জ দিলে বিনা প্যাডেলিং-এ এই সাইকেল যাবে প্রায় 30কিলোমিটার । আবার মোটামুটি পকেট ফ্রেন্ডলিও । লকডাউনে গণপরিবহন এড়াতে অনেকেই ঝুঁকছেন ই-সাইকেলে, জানাচ্ছেন সাইকেল বিক্রেতারা ।
অনেকেই সাইকেলে প্যাডেল করার ধকল নিতে পারেন না । তাই তাঁদের জন্য এই বৈদ্যুতিন সাইকেল আদর্শ বলেই মনে করছেন বিক্রেতারা । চিকিৎসকরা বারবার বলছেন যে, সংক্রমণ রুখতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে । তাই গণপরিবহন এড়িয়ে যেতে চাইছেন অনেকেই । ইলেকট্রিক সাইকেলে চেপে অফিসে বা নিজের গন্তব্যে পৌঁছতে এখন অনেকেই কিনে ফেলছেন এই ই-সাইকেল । বিক্রেতারা জানিয়েছেন, শুধু কম বয়সীরাই নয় প্রবীণরাও ই-সাইকেল কিনছেন ।
বেশ কয়েক বছর হল, সাইকেল বাজারে প্রবেশ করেছিল ই-সাইকেল । তবে চাহিদা ছিল না একেবারেই, তাই এখনও শহরের বেশিরভাগ দোকানে রাখা হয় না ই-সাইকেল । একবার চার্জ করে নিলে এই সাইকেল 30 কিলোমিটার পর্যন্ত যায় । পাশাপাশি, কোনও কোনও ক্ষেত্রে 16-20 হাজার টাকায় এই সাইকেল পাওয়া যায় । আবার কিছুক্ষেত্রে, 21 হাজার থেকে শুরু করে এক লাখ টাকা পর্যন্ত বাজেটের সাইকেলও পাওয়া যায় । তবে যে যেমন টাকা বিনিয়োগ করতে চান, তার উপর নির্ভর করে । যেখানে গিয়ার সাইকেল নিতে গেলেই 20হাজারের বেশি দাম দিতে হয়, সেখানে এই ই-সাইকেলের দাম অনেকটাই সুবিধা করে বলে জানালেন সাইকেল বিক্রেতা ।
বেন্টিং স্ট্রিটের এক ই-সাইকেল বিক্রেতা আশিসকুমার গুপ্তা বলেন যে, "লকডাউনের আগে ইলেকট্রিক সাইকেলের বাজার ছিল না । তখন ই-সাইকেলগুলি এত অত্যাধুনিক মডেলের ছিল না । ভারতীয় একটি সাইকেল নির্মাতা সংস্থা অনেক কম দামেই সাইকেলের অত্যাধুনিক চার থেকে পাঁচটি মডেল বাজারে নামিয়েছে । আগে মাসে আট থেকে 10টি ই-সাইকেল বিক্রি হত । লকডাউনে গত এক মাসেই 80টি ই-সাইকেল বিক্রি করেছি । বিক্রি বেড়েছে অনেকটাই । এছাড়াও হোয়াটসঅ্যাপ এবং ফোনে অনেকেই ফোন করে প্রশ্ন করছেন । "
ই-সাইকেলের ব্যাটারিকে 500 বার পর্যন্ত চার্জ করা যায় । একটি ব্যাটারি চলে প্রায় তিন বছর । ব্যাটারি খারাপ হয়ে গেলে সেই ব্যাটারি আবার পরিবর্তন করে নেওয়া যায় । আর অন্যতম বিষয়, কোনও চিনা কম্পানির উপর নির্ভর করার প্রয়োজন নেই । ভারতীয় কম্পানি অনেক কমদামেই এই সাইকেল তৈরি করছে । বেন্টিং স্ট্রিটের আর এক ই-সাইকেল বিক্রেতা বলেন , "আগে ই-সাইকেলের তেমন একটা বিক্রি ছিল না । কেউ হয়তো শখে কিনতেন আবার কেউ হয়তো রেস করার জন্য কিনতেন । তবে এখন এই সাইকেলগুলি মানুষ প্রয়োজনেই কিনছেন । এখন প্রতিদিন বহু মানুষ এসে দেখে যাচ্ছেন, ফোন করছেন এবং কিনছেনও । বর্তমানে যাঁরা কাজের সূত্রে প্রতিদিন অনেকটা পথ যাতায়াত করেন তেমন মানুষই এই সাইকেল কিনছেন অনেক বেশি ।"
সাইকেলের দোকানে ভিড় বেশ । শুধুই বাই-সাইকেল নয় । পাল্লা দিয়ে চলছে ই-সাইকেলের রমরমাও । ক্রেতারা জানাচ্ছেন, ইচ্ছেমতো প্যাডেল করতে পারি । আবার অনেকক্ষেত্রে ব্যাটারি অনেকটা রাস্তাই ব্যাক-আপ দেয় । স্কুটির মতো ব্যবহার করা যায়, ব্যবহার করা যায় সাইকেলের মতো । আবার স্কুটি-সাইকেল দুইয়ের কাজই করে । বিলালী রায় নামের এক বিক্রেতা বলেন, "পেট্রলের দাম যা বেড়েছে । সেক্ষেত্রে ই-সাইকেলই ঠিক আছে । 30 হাজার টাকায় পাওয়া যায়, বাইকের মতো কাজও করে ।"