কলকাতা, 19 নভেম্বর: বয়স মাত্র 9 বছর ৷ আর তাতেই সারা বিশ্বে পরিচিতি পাওয়া হয়ে গিয়েছে শ্লোক মুখোপাধ্য়ায়ের (Shlok Mukherjee) ৷ এখন গুগলের হোম পেজে গিয়ে 'ডুডল ফর গুগল উইনার 2022' (Doodle for Google 2022 Winner) টাইপ করলেই গোটা গোটা অক্ষরে ভেসে ওঠে তার নাম ৷ কারণ, চলতি বছর গুগলের ডুডল আঁকার প্রতিযোগিতায় বাকি সকলকে পিছনে ফেলে দিয়েছে কলকাতার কাঁকুরগাছির বাসিন্দা শ্লোক ৷ জিতে নিয়েছে সেরার পুরস্কার ৷ ইতিমধ্য়েই বিজয়ীর স্মারক আর শংসাপত্র পৌঁছে গিয়েছে শ্লোকের হাতে ৷ পরিবারের খুদে সদস্যের এমন সাফল্যে খুশি বাকিরাও ৷
মুখোপাধ্যায়দের কাঁকুরগাছির ফ্ল্যাটে পৌঁছে গিয়েছিলেন ইটিভি ভারতের প্রতিনিধিরাও ৷ শ্লোক আর তার পরিবারের বাকিদের সঙ্গে ভালোই সময় কাটল তাঁদের ৷ শ্লোক শুধু সুন্দর ছবি আঁকতেই পারেন না, খুব ভালো গিটারও বাজায় সে ৷ শ্লোকের মা পারমিতা চট্টোপাধ্যায় জানালেন, আঁকার বিষয় হিসাবে শ্লোক যা কিছু বেছে নেয়, সেগুলো তার বয়সের তুলনায় বেশ ব্যতিক্রমী এবং 'ম্যাচিওর' ৷ গুগলের জন্য শ্লোকের আঁকা ডুডলেও তার পরিচয় মিলেছে ৷ ভবিষ্যতের পৃথিবী কীভাবে সুন্দর হয়ে উঠতে পারে, তার আঁকা ডুডলে সেই বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছে শ্লোক ৷
আরও পড়ুন: ডুডল ফর গুগল 2022 প্রতিযোগিতায় বাঙালির রাজ, জিতল কলকাতার ছাত্র
খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, যে ছেলের এত প্রতিভা, সে বড় হয়ে কী হতে চায় ? এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে শ্লোক জানায়, একটি নয়, বরং একাধিক পরিচয় গড়ে তুলতে চায় সে ! সেটা কেমন ? শ্লোকের বক্তব্য, সে ছবি আঁকতে এবং গিটার বাজাতে ভালোবাসে ৷ তাই ভবিষ্যতে শিল্পী হিসাবে পোক্ত হতে চায় শ্লোক ৷ আর উচ্চশিক্ষা এবং পেশার জন্য বেছে নিতে চায় বিজ্ঞানকে ৷ হতে চায় বিজ্ঞানী ৷ তবে, সেটা যদি সম্ভব নাও হয়, তাহলে গিটার কিংবা রং-তুলিকেই পেশার জন্য হাতে তুলে নিতে কোনও আপত্তি নেই শ্লোকের ৷
এদিকে, গুগলের স্বীকৃতি পাওয়ার পর থেকেই স্কুলে রীতিমতো সেলেব্রিটি হয়ে উঠেছে শ্লোক ৷ ডুডল তৈরির জন্য বিষয় ছিল, 25 বছর পরের ভারতবর্ষ ৷ আঁকার মাধ্যমে নিজের ভাবনা ফুটিয়ে তুলতে যথেষ্ট কসরত করতে হয়েছিল তাকে ৷ সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে শ্লোক জানায়, "আমি একটা নোটবুক নিয়ে বসে যাই ৷ আয়ুর্বেদ, মহাকাশ ভ্রমণ এবং প্রকৃতিকে সহজে আঁকতে চেয়েছিলাম আমি ৷ সেগুলোর একটা তালিকা তৈরি করি ৷ ভারতকে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরতে চেয়েছিলাম ৷ যাতে সকলে আমাদের দেশের প্রশংসা করে ৷"
শ্লোকের বাবা একজন পেশাদার ফোটোগ্রাফার ৷ কাকা ইলাস্ট্রেটর এবং মা পেশাদার জ্যোতিষী ৷ অন্যদিকে, শ্লোকের ঠাকুমা ভালোবাসেন বাগান করতে ৷ শ্লোকের মা, কাকারা মনে করেন, এই সবকিছুরই প্রভাব পড়েছে শ্লোকের মধ্যে ৷ আর সেই কারণেই হয়তো তার বয়সী আরও পাঁচটা বাচ্চার থেকে অনেকটাই ব্যতিক্রমী ভাবনা ভাবতে পারে শ্লোক ৷