কলকাতা, ১০ মার্চ : বিয়ের মাস চারেক পরই ক্যানসার ধরা পড়ে। অস্ত্রোপচারে বাদ দিতে হয় ডিম্বাশয়। দিতে হয় কেমোথেরাপিও। এদিকে মা হতে চান মহিলা। প্রথমে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন চিকিৎসকরা। অবশেষ সাফল্য। কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন শেওড়াফুলির করবী হাম্বির। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মা ও সদ্যোজাত উভয়ই ভালো আছেন।
২০১৩ সালে শম্ভুনাথ হাম্বির সঙ্গে বিয়ে হয় করবীর। বিয়ের দু'মাস পর থেকেই করবীর পেটে অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হয়। সঙ্গে ধুম জ্বর। করবী স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে যান। ওই বছরের জুনে করবীর ডানদিকের ডিম্বাশয়ে টিউমার ধরে পড়ে। পরীক্ষা করে ক্যানসার ধরা পড়ে। এরপর মুকুন্দপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে যান কাবেরী। সেখানে চিকিৎসক এ পি মজুমদারের নেতৃত্বে অস্ত্রোপচারে বাদ দেওয়া হয় ডিম্বাশয়টি। এরপর ২০১৬ সালে হাম্বির দম্পতি সন্তান নেওয়ার কথা ভাবেন। চিকিৎসক এ পি মজুমদার তখন তাঁদের ওই হাসপাতালেরই চিকিৎসক বিশ্বজ্যোতি গুহর কাছে রেফার করেন।
বিশ্বজ্যোতি গুহ বলেন, "অস্ত্রোপচারে ডানদিকের ডিম্বাশয় বাদ দিতে হয়। করবীর তখন কোনও সন্তান ছিল না। ভবিষ্যতে তিনি যাতে মা হতে পারেন, তার জন্য বাম দিকের ডিম্বাশয়টি এবং জরায়ুকে রক্ষা করতে হয়। কেমোথেরাপিও দেওয়া হয়। পরে যখন দেখা যায় ক্যানসার ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই। তখন চিকিৎসক এ পি মজুমদার আমার কাছে করবীকে রেফার করেন। শুরু হয় চিকিৎসা, কিন্তু দু'বারের চেষ্টাতেও গর্ভপাত যায়। এরপর আমরা হাসপাতালের IVF(ইন ভিটরো ফার্টিলাইজ়েশন) সেন্টারের চিকিৎসক কৌশিকী রায় সরকারের কাছে করবীকে রেফার করি। বহু চিকিৎসার পর অবশেষ আসে সাফল্য। গর্ভধারণের ৩৬ সপ্তাহ পর একটি কন্যাসন্তান প্রসব করেন করবী।"
বিশ্বজ্যোতি আরও বলেন, "IVF প্রেগন্যান্সিতে সফল হলেও, এক্ষেত্রে অনেক সমস্যা দেখা যায়। করবীর ডায়াবেটিস ধরা পড়ে। এর জন্য কড়া ডোজ়ের ইনসুলিন দিতে হয়। এধরনের সমস্যায় গর্ভপাত হতে পারে। ডিম তৈরি নাও হতে পারে। তবে করবী ভাগ্যবতী। তাই সব সমস্যা কাটিয়ে তিনি মা হয়েছেন। সন্তানের নাম রাখা হয়েছে শ্রেয়সী।"