কলকাতা, 23 অগস্ট : বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই কোভিড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তৎপর রাজ্য ৷ এখনও পর্যন্ত লোকাল ট্রেন চালু করা হয়নি ৷ নাইট কার্ফু চলছে ৷ টিকার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে ৷ এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে সাত কেন্দ্রে উপনির্বাচন করতে চাইছে রাজ্য সরকার ৷ তার প্রস্তুতি দুই মাস আগে থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে ৷ নবান্নে আজ মমতা জানান, বাংলায় কোভিড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৷ সেক্ষেত্রে উপনির্বাচন করা যাবে ৷ এদিকে, উপনির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ৷ বলেন, লোকাল ট্রেনই যদি চালু না হয়, তাহলে কীভাবে বাংলায় উপনির্বাচন হবে ?
উপনির্বাচন নিয়ে প্রস্তুতি প্রায় মাস দুই থেকে শুরু হয়ে গিয়েছে ৷ উপনির্বাচন যাতে দ্রুত করা হয়, তার জন্য বারবার নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন জানিয়েছে তৃণমূল ৷ সম্প্রতি, নির্বাচনের কমিশনের তরফে রাজনৈতিক দলগুলির কাছে মতামত চাওয়া হয়েছে ৷ করোনা পরিস্থিতিতে উপনির্বাচন করাটা উচিত কি না সেই বিষয়ে মতামত চাওয়া হয়েছে ৷ 30 অগস্টের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলিকে মতামত জানাতে হবে ৷ সেই মতামত নিয়ে প্রয়োজন পড়লে নির্বাচন সংক্রান্ত নতুন নির্দেশিকা প্রকাশ করবে কমিশন ৷
সেক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশ্বাস খুব তাড়াতাড়ি নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে ৷ উপনির্বাচন নিয়ে জানতে চাওয়া হলে আজ নবান্নে তিনি বলেন, " চার মাস কেটে গিয়েছে ৷ আমাদের রাজ্যেও কোভিড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৷ যে সাত কেন্দ্রে ভোট হবে সেখানেও করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ৷ নিজের ভোট দেওয়ার অধিকার রয়েছে মানুষের ৷ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার লঙ্ঘন করা উচিত নয় ৷ আমার বিশ্বাস খুব তাড়াতাড়ি নির্বাচন কমিশন তারিখ ঘোষণা করবে ৷ "
এদিকে, উপনির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক তরজা অনেক আগে থেকেই শুরু গিয়েছে ৷ করোনা আবহে উপনির্বাচন হোক তা চাইছে না বিজেপি ৷ আজও দিলীপ ঘোষের গলায় শোনা গেল একই সুর ৷ পুরসভা ভোটের উপর জোর দিচ্ছে বিজেপি ৷ তবে উপনির্বাচন নিয়ে তাঁর প্রশ্ন, করোনা পরিস্থিতির জন্য লোকাল ট্রেনই চালু করা হচ্ছে না ৷ তাহলে উপনির্বাচন কীভাবে সম্ভব ? মানুষের কথা ভেবে পুরভোট করা উচিত ৷
উল্লেখ্য, ভবানীপুর, খড়দা, জঙ্গিপুর, সামসেরগঞ্জ, শান্তিপুর, দিনহাটা ও গোসাবা-এই সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন রয়েছে ৷ এর মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হল ভবানীপুর ৷ ভবানীপুরের প্রার্থী হয়েছিলেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ৷ জিতেওছিলেন ৷ কিন্তু, বিধায়কের পদ থেকে তিনি ইস্তফা দেন ৷ ওই কেন্দ্র থেকে সরে দাঁড়ান ৷ কারণ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রাম থেকে জিততে পারেননি ৷ কিন্তু তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী থাকতে গেলে ছয় মাসের মধ্যে কোনও একটি কেন্দ্র থেকে জিতে আসতে হবে ৷ তাই শোভনদেবের ছেড়ে দেওয়া ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে উপনির্বাচনে দাঁড়াচ্ছেন মমতা ৷
আরও পড়ুন, By-elections : সেপ্টেম্বরে রাজ্যে হতে পারে উপনির্বাচন
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, সেই কারণে উপনির্বাচন দ্রুত করানোর বিষয়ে আগ্রহী তৃণমূল কংগ্রেস ৷ তা না হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে হবে ৷ দলের অন্য কাউকে মুখ্যমন্ত্রী করতে হবে ৷ তাই বিজেপিও নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবে ৷ যাতে মমতাকে পদত্যাগ করতে হয় ৷
উপনির্বাচন হবে কি হবে না, সেই বিষয়ে জানতে এখন সবাইকে পরের মাসের জন্য অপেক্ষা করতে হবে ৷ শোনা যাচ্ছে, পরেই মাসেই রাজ্যে উপনির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে নির্বাচন কমিশন ৷