ETV Bharat / state

সদস্য সংখ্যার অভাব, ধুঁকছে কো-অপারেটিভগুলি

2011-এর আগে পর্যন্ত এই সোসাইটির সভ্য সংখ্যা ছিল প্রায় 13 হাজার ৷ এখন সেই সংখ্যাটা ছয় থেকে সাড়ে ছয় হাজারে দাঁড়িয়েছে ৷ কো-অপারেটিভগুলি শেষ হয়ে যাওয়ার পিছনে সদস্য সংখ্যার ঘাটতি একটি বড় কারণ বলে মনে করা হচ্ছে ৷

সভ্য সংখ্যার অভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে কো-অপারেটিভ সোসাইটিগুলি
সভ্য সংখ্যার অভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে কো-অপারেটিভ সোসাইটিগুলি
author img

By

Published : Jul 22, 2020, 3:21 PM IST

কলকাতা, 22 জুলাই : সরকারি পরিবহনের সব ক'টি সংস্থা ও কর্পোরেশনের কর্মীদের কো-অপারেটিভ সোসাইটি তৈরি করা হয়েছিল ৷ কর্মীদের বিপদে আপদে সাহায্যের জন্যই তৈরি হয়েছিল এই সোসাইটি ৷ সেগুলির অস্তিত্ব এখন আর সেভাবে নেই ৷ অভিযোগ, ক্রেডিট সোসাইটির অ্যাকাউন্টে 2012 সাল থেকে টাকা পড়াও বন্ধ হয়ে গিয়েছে ৷ এই নিয়ে ইতিমধ্যে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা চলেছে ৷ 2012 সালের পর থেকে নিয়ম মেনে ভোটও হয়নি ৷ বোর্ডগুলির মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও সেগুলি আজও বেআইনিভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে ৷ এই সোসাইটির সঙ্গে জড়িত কর্মীদের বক্তব্য, আজ থেকে প্রায় 60 বছর আগে যে উদ্দেশ্যে ক্রেডিট সোসাইটিগুলি তৈরি হয়েছিল সেই জায়গাটা ক্রমশ সংকুচিত হয়ে আসছে ৷

কী এই কো-অপারেটিভ সোসাইটি ?

স্টেট ট্রান্সপোর্ট আন্ডারটেকিংগুলিতে (STU)-কর্মীদের নিজেদের উদ্যোগে কো-অপারেটিভ সোসাইটিগুলি তৈরি করা হয়েছিল ৷ পরিবহনের সব ক'টি শাখারই নিজস্ব ক্রেডিট সোসাইটি রয়েছে ৷ তবে, এগুলির মধ্যে সবচেয়ে পুরোনো হল CTC ও CSTC-র কো-অপারেটিভ সোসাইটি ৷ কর্মীরাই নিজেদের মাসিক বেতন থেকে টাকা কাটিয়ে কো-অপারেটিভ অ্যাকাউন্টে জমা দেন ৷ প্রয়োজনে সেই অ্যাকাউন্ট থেকে তাঁরা ঋণ নিতে পারেন ৷ পাশাপাশি, তাঁদের একটা ডিভিডেন্টও দেওয়া হয় ৷ কোনও কর্মী অবসর গ্রহণ করলে বা মারা গেলে তাঁর জমানো অর্থ সুদ-সহ ফেরত দেওয়া হয় ৷

রোড ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি সুভাষ মুখোপাধ্যায় বলেন, "কর্মীরা ব্যাঙ্কের থেকে কম সুদে এই সোসাইটি থেকে বিভিন্ন সময়ে ঋণ পান ৷ ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা, বিয়ে, অসুখ-বিসুখ ও অন্য অসুবিধাতে এই ঋণ পান তাঁরা ৷ কেউ কর্মরত অবস্থায় সদস্য থাকাকালীন যদি মারা যান, তাহলে পাঁচ বা সাত হাজার টাকা এককালীন সুবিধা তাঁদের পরিবারকে দেওয়া হয় ৷ তবে, বেসরকারি পরিবহনগুলিতে এরকম কোনও সুবিধা নেই ৷"

কতটা পরিবর্তন এসেছে কো-অপারেটিভ সোসাইটিতে ?

2011-এর আগে পর্যন্ত এই সোসাইটির সভ্য সংখ্যা ছিল প্রায় 13 হাজার ৷ 15 হাজার স্থায়ী শ্রমিক কর্মচারী ছিলেন এবং তাঁর প্রায় 90 শতাংশের কাছাকাছি শ্রমিক এই সোসাইটির সভ্য হতেন ৷ কিন্তু, বিগত 10 বছরে স্থায়ী শ্রমিকের সংখ্যা কমার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেডিট সোসাইটির সভ্য সংখ্যাও ক্রমশ পর্যায়ক্রমে কমে চলেছে ৷ আজ সেই সংখ্যাটা ছয় থেকে সাড়ে ছয় হাজারে এসে দাঁড়িয়েছে ৷ স্থায়ী শ্রমিক কর্মচারী এই 10 বছরে প্রায় 60 শতাংশ কমেছে ৷ তার প্রভাব পড়েছে ক্রেডিট সোসাইটির সভ্য সংখ্যার উপর ৷ ফলে বর্তমানে দুর্বল হয়ে পড়ছে ক্রেডিট সোসাইটিগুলি ৷

সভ্য সংখ্যার অভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে কো-অপারেটিভ সোসাইটিগুলি

কী পদ্ধতিতে টাকা নেওয়া হয় এই সোসাইটিতে ?

সংস্থাকে প্রতি মাসে সভ্য পদের জন্য ক্রেডিট সোসাইটিকে একটি চাঁদা দিতে হয় ৷ সেই চাঁদা কর্মীদের বেতন থেকে কেটে নেওয়া হয় ৷ তারপর তা সংস্থার তরফে সোসাইটিকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় ৷

তবে বিগত কয়েক বছরে এই পদ্ধতিতে দূর্নীতি দেখা দিয়েছে ৷ অভিযোগ, কর্মীদের বেতন থেকে টাকা কাটা হলেও তা জমা পড়ছে না সোসাইটির অ্যাকাউন্টে ৷ WBTC-র এক কর্মী তথা ওয়ার্কার্স অ্যান্ড এমপ্লয়িজ় ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সুবীর বসু বলেন, "বিগত সাত বছর ধরে ক্রেডিট সোসাইটির সভ্যদের থেকে যে মাসিক চাঁদার টাকা কাটা হয়েছিল সেই অর্থ সংস্থাগুলি ক্রেডিট সোসাইটির অ্যাকাউন্টে জমা দিচ্ছে না । অর্থের অঙ্কটি এক এক জায়গায় এক এক রকম । এরপর বাধ্য হয়ে শ্রমিক কর্মচারীর বোর্ড আদালতের দ্বারস্থ হয় । পরে আদালতের নির্দেশে সংস্থা কর্মীদের টাকা ফেরত দিলেও সুদের টাকা এখনও দেয়নি । এই বিষয়টি নিয়েও আদালতে আর একটি মামলা করা হয় । এর ফলে ক্রেডিট সোসাইটিগুলি আর্থিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে । এই ক্রেডিট সোসাইটিগুলিতে এখন নতুন করে কিছু ভুঁইফোড় তৈরি হয়েছে । কারণ আগে সোসাইটি থেকে যে সহজ পদ্ধতিতে ঋণ পাওয়া যেত এখন ঋণ পেতে হলে উৎকোচ দিতে হচ্ছে । অর্থাৎ যিনি ঋণ নেবেন তাঁকে দালালের সাহায্য নিতে হচ্ছে ৷"

এই প্রসঙ্গে নর্থ বেঙ্গল স্টেট ট্রান্সপোর্ট এমপ্লয়িজ় ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডেন্ট জগৎজ্যোতি দত্ত বলেন, "নর্থ বেঙ্গল স্টেট ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের ডিভিশনগুলির নিজস্ব ক্রেডিট সোসাইটি ছিল । তবে সেগুলি এখন শেষের পথে । কারণ, সরকারি পরিবহনের ক্ষেত্রে এখন স্থায়ী কর্মচারী প্রায় নেই বললেই চলে । এবং কন্ট্র্যাকচুয়াল ও এজেন্সির কর্মীরা এখানে সভ্য হতে পারেন না । তাই আগে ডিভিশনের যে ক্রেডিট সোসাইটিগুলো ছিল সেখানে এখন স্থায়ী কর্মচারীর অভাবে সভ্য সংখ্যা অনেক কমে এসেছে । এছাড়াও যাঁরা অবসর গ্রহণ করেন, তাঁরা কো-অপারেটিভে থাকতে পারবেন না । স্বাভাবিকভাবেই সভ্য সংখ্যা ধীরে ধীরে কমতে কমতে একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে । কোচবিহারের যে ক্রেডিট সোসাইটি রয়েছে সেটি এখনও ভালো অবস্থাতেই রয়েছে ।"

ক্রেডিট সোসাইটিগুলির এভাবে মুখ থুবড়ে পড়ার কারণ কী ? জগৎজ্যোতি দত্ত বলেন, "ঋণ বাবদ যে টাকা সংস্থাগুলির ক্রেডিট সোসাইটিতে জমা দেওয়ার কথা তাও অনেকদিন জমা পড়েনি । এর ফলে পরবর্তীকালে ব্যাঙ্কের তরফে আমাদের ঋণ দিতে অস্বীকার করা হয়েছিল । বর্তমানে এই কো-অপারেটিভ সোসাইটিগুলি যে সমস্যায় ভুগছে সেটি হল- অর্থনৈতিকভাবে সোসাইটিগুলি যেমন দুর্বল হয়ে পড়েছে, তেমনই সভ্যদের অভাবেও সোসাইটিগুলি দুর্বল হয়ে পড়েছে । এই মুহূর্তে NBSTC-র স্থায়ী কর্মচারী ও আধিকারিক মিলিয়ে প্রায় 1000 ।"

অন্যদিকে, অল ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ট্রান্সপোর্ট সংগ্রামী শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের রাজ্য সম্পাদক দিবাকর ভট্টাচার্য বলেন, "বিগত বেশ কয়েক বছর যাবৎ এই ক্রেডিট সোসাইটিগুলির ভোট বন্ধ রয়েছে । শেষবার যখন ভোট হয়েছিল তখন নির্বাচনের যে পথ অবলম্বন করা হয় তা এক কথায় অরাজনৈতিক ও বেআইনি । বেশ কয়েকটি বোর্ডের ক্ষেত্রে বেশ কয়েক মাস হল মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে ৷ কিন্তু তারপরও সেগুলি দিব্যি কাজ চালিয়ে যাচ্ছে ।"

বিষয়টি নিয়ে পরিবহন নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রঞ্জনবীর সিং কাপুরের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি উত্তর দেননি । পরে তিনি SMS-এ জানান, এই বিষয়টি তিনি জানেন না ৷ অন্যদিকে, বর্তমান পরিবহন সচিব প্রভাত মিশ্রকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি ।

কলকাতা, 22 জুলাই : সরকারি পরিবহনের সব ক'টি সংস্থা ও কর্পোরেশনের কর্মীদের কো-অপারেটিভ সোসাইটি তৈরি করা হয়েছিল ৷ কর্মীদের বিপদে আপদে সাহায্যের জন্যই তৈরি হয়েছিল এই সোসাইটি ৷ সেগুলির অস্তিত্ব এখন আর সেভাবে নেই ৷ অভিযোগ, ক্রেডিট সোসাইটির অ্যাকাউন্টে 2012 সাল থেকে টাকা পড়াও বন্ধ হয়ে গিয়েছে ৷ এই নিয়ে ইতিমধ্যে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা চলেছে ৷ 2012 সালের পর থেকে নিয়ম মেনে ভোটও হয়নি ৷ বোর্ডগুলির মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও সেগুলি আজও বেআইনিভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে ৷ এই সোসাইটির সঙ্গে জড়িত কর্মীদের বক্তব্য, আজ থেকে প্রায় 60 বছর আগে যে উদ্দেশ্যে ক্রেডিট সোসাইটিগুলি তৈরি হয়েছিল সেই জায়গাটা ক্রমশ সংকুচিত হয়ে আসছে ৷

কী এই কো-অপারেটিভ সোসাইটি ?

স্টেট ট্রান্সপোর্ট আন্ডারটেকিংগুলিতে (STU)-কর্মীদের নিজেদের উদ্যোগে কো-অপারেটিভ সোসাইটিগুলি তৈরি করা হয়েছিল ৷ পরিবহনের সব ক'টি শাখারই নিজস্ব ক্রেডিট সোসাইটি রয়েছে ৷ তবে, এগুলির মধ্যে সবচেয়ে পুরোনো হল CTC ও CSTC-র কো-অপারেটিভ সোসাইটি ৷ কর্মীরাই নিজেদের মাসিক বেতন থেকে টাকা কাটিয়ে কো-অপারেটিভ অ্যাকাউন্টে জমা দেন ৷ প্রয়োজনে সেই অ্যাকাউন্ট থেকে তাঁরা ঋণ নিতে পারেন ৷ পাশাপাশি, তাঁদের একটা ডিভিডেন্টও দেওয়া হয় ৷ কোনও কর্মী অবসর গ্রহণ করলে বা মারা গেলে তাঁর জমানো অর্থ সুদ-সহ ফেরত দেওয়া হয় ৷

রোড ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি সুভাষ মুখোপাধ্যায় বলেন, "কর্মীরা ব্যাঙ্কের থেকে কম সুদে এই সোসাইটি থেকে বিভিন্ন সময়ে ঋণ পান ৷ ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা, বিয়ে, অসুখ-বিসুখ ও অন্য অসুবিধাতে এই ঋণ পান তাঁরা ৷ কেউ কর্মরত অবস্থায় সদস্য থাকাকালীন যদি মারা যান, তাহলে পাঁচ বা সাত হাজার টাকা এককালীন সুবিধা তাঁদের পরিবারকে দেওয়া হয় ৷ তবে, বেসরকারি পরিবহনগুলিতে এরকম কোনও সুবিধা নেই ৷"

কতটা পরিবর্তন এসেছে কো-অপারেটিভ সোসাইটিতে ?

2011-এর আগে পর্যন্ত এই সোসাইটির সভ্য সংখ্যা ছিল প্রায় 13 হাজার ৷ 15 হাজার স্থায়ী শ্রমিক কর্মচারী ছিলেন এবং তাঁর প্রায় 90 শতাংশের কাছাকাছি শ্রমিক এই সোসাইটির সভ্য হতেন ৷ কিন্তু, বিগত 10 বছরে স্থায়ী শ্রমিকের সংখ্যা কমার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেডিট সোসাইটির সভ্য সংখ্যাও ক্রমশ পর্যায়ক্রমে কমে চলেছে ৷ আজ সেই সংখ্যাটা ছয় থেকে সাড়ে ছয় হাজারে এসে দাঁড়িয়েছে ৷ স্থায়ী শ্রমিক কর্মচারী এই 10 বছরে প্রায় 60 শতাংশ কমেছে ৷ তার প্রভাব পড়েছে ক্রেডিট সোসাইটির সভ্য সংখ্যার উপর ৷ ফলে বর্তমানে দুর্বল হয়ে পড়ছে ক্রেডিট সোসাইটিগুলি ৷

সভ্য সংখ্যার অভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে কো-অপারেটিভ সোসাইটিগুলি

কী পদ্ধতিতে টাকা নেওয়া হয় এই সোসাইটিতে ?

সংস্থাকে প্রতি মাসে সভ্য পদের জন্য ক্রেডিট সোসাইটিকে একটি চাঁদা দিতে হয় ৷ সেই চাঁদা কর্মীদের বেতন থেকে কেটে নেওয়া হয় ৷ তারপর তা সংস্থার তরফে সোসাইটিকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় ৷

তবে বিগত কয়েক বছরে এই পদ্ধতিতে দূর্নীতি দেখা দিয়েছে ৷ অভিযোগ, কর্মীদের বেতন থেকে টাকা কাটা হলেও তা জমা পড়ছে না সোসাইটির অ্যাকাউন্টে ৷ WBTC-র এক কর্মী তথা ওয়ার্কার্স অ্যান্ড এমপ্লয়িজ় ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সুবীর বসু বলেন, "বিগত সাত বছর ধরে ক্রেডিট সোসাইটির সভ্যদের থেকে যে মাসিক চাঁদার টাকা কাটা হয়েছিল সেই অর্থ সংস্থাগুলি ক্রেডিট সোসাইটির অ্যাকাউন্টে জমা দিচ্ছে না । অর্থের অঙ্কটি এক এক জায়গায় এক এক রকম । এরপর বাধ্য হয়ে শ্রমিক কর্মচারীর বোর্ড আদালতের দ্বারস্থ হয় । পরে আদালতের নির্দেশে সংস্থা কর্মীদের টাকা ফেরত দিলেও সুদের টাকা এখনও দেয়নি । এই বিষয়টি নিয়েও আদালতে আর একটি মামলা করা হয় । এর ফলে ক্রেডিট সোসাইটিগুলি আর্থিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে । এই ক্রেডিট সোসাইটিগুলিতে এখন নতুন করে কিছু ভুঁইফোড় তৈরি হয়েছে । কারণ আগে সোসাইটি থেকে যে সহজ পদ্ধতিতে ঋণ পাওয়া যেত এখন ঋণ পেতে হলে উৎকোচ দিতে হচ্ছে । অর্থাৎ যিনি ঋণ নেবেন তাঁকে দালালের সাহায্য নিতে হচ্ছে ৷"

এই প্রসঙ্গে নর্থ বেঙ্গল স্টেট ট্রান্সপোর্ট এমপ্লয়িজ় ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডেন্ট জগৎজ্যোতি দত্ত বলেন, "নর্থ বেঙ্গল স্টেট ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের ডিভিশনগুলির নিজস্ব ক্রেডিট সোসাইটি ছিল । তবে সেগুলি এখন শেষের পথে । কারণ, সরকারি পরিবহনের ক্ষেত্রে এখন স্থায়ী কর্মচারী প্রায় নেই বললেই চলে । এবং কন্ট্র্যাকচুয়াল ও এজেন্সির কর্মীরা এখানে সভ্য হতে পারেন না । তাই আগে ডিভিশনের যে ক্রেডিট সোসাইটিগুলো ছিল সেখানে এখন স্থায়ী কর্মচারীর অভাবে সভ্য সংখ্যা অনেক কমে এসেছে । এছাড়াও যাঁরা অবসর গ্রহণ করেন, তাঁরা কো-অপারেটিভে থাকতে পারবেন না । স্বাভাবিকভাবেই সভ্য সংখ্যা ধীরে ধীরে কমতে কমতে একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে । কোচবিহারের যে ক্রেডিট সোসাইটি রয়েছে সেটি এখনও ভালো অবস্থাতেই রয়েছে ।"

ক্রেডিট সোসাইটিগুলির এভাবে মুখ থুবড়ে পড়ার কারণ কী ? জগৎজ্যোতি দত্ত বলেন, "ঋণ বাবদ যে টাকা সংস্থাগুলির ক্রেডিট সোসাইটিতে জমা দেওয়ার কথা তাও অনেকদিন জমা পড়েনি । এর ফলে পরবর্তীকালে ব্যাঙ্কের তরফে আমাদের ঋণ দিতে অস্বীকার করা হয়েছিল । বর্তমানে এই কো-অপারেটিভ সোসাইটিগুলি যে সমস্যায় ভুগছে সেটি হল- অর্থনৈতিকভাবে সোসাইটিগুলি যেমন দুর্বল হয়ে পড়েছে, তেমনই সভ্যদের অভাবেও সোসাইটিগুলি দুর্বল হয়ে পড়েছে । এই মুহূর্তে NBSTC-র স্থায়ী কর্মচারী ও আধিকারিক মিলিয়ে প্রায় 1000 ।"

অন্যদিকে, অল ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ট্রান্সপোর্ট সংগ্রামী শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের রাজ্য সম্পাদক দিবাকর ভট্টাচার্য বলেন, "বিগত বেশ কয়েক বছর যাবৎ এই ক্রেডিট সোসাইটিগুলির ভোট বন্ধ রয়েছে । শেষবার যখন ভোট হয়েছিল তখন নির্বাচনের যে পথ অবলম্বন করা হয় তা এক কথায় অরাজনৈতিক ও বেআইনি । বেশ কয়েকটি বোর্ডের ক্ষেত্রে বেশ কয়েক মাস হল মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে ৷ কিন্তু তারপরও সেগুলি দিব্যি কাজ চালিয়ে যাচ্ছে ।"

বিষয়টি নিয়ে পরিবহন নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রঞ্জনবীর সিং কাপুরের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি উত্তর দেননি । পরে তিনি SMS-এ জানান, এই বিষয়টি তিনি জানেন না ৷ অন্যদিকে, বর্তমান পরিবহন সচিব প্রভাত মিশ্রকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.