কলকাতা, 17 এপ্রিল: নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত জীবনকৃষ্ণ সাহাকে চারদিনের জন্য সিবিআই হেফাজতে পাঠাল আলিপুর আদালত ৷ সোমবার তাঁকে আদালতে পেশ করা হয় সিবিআইয়ের তরফে ৷ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী ব্যুরো পাঁচদিনের হেফাজতে নিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের এই বিধায়ককে ৷ কিন্তু আদালত তাঁকে চারদিনের জন্য সিবিআইয়ের হেফাজতে পাঠিয়েছে ৷
এদিন আদালতে সিবিআইয়ের তরফে দাবি করা হয়, মুর্শিদাবাদের বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার অ্যাকাউন্টে বেশ কয়েক কোটি টাকার হদিশ মিলেছে । যার হিসাব এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি ৷ তল্লাশি অভিযান চলার সময় দু’টি মূল্যবান মোবাইল ফোন জলে ফেলে নষ্ট করে ফেলার চেষ্টা করেন অভিযুক্ত । তিনি ডিজিটাল তথ্য প্রমাণ নষ্ট করেছেন । এছাড়াও জীবনকৃষ্ণ সাহার বিরুদ্ধে যে একাধিক তথ্যপ্রমাণ মিলেছে, তার বেশিরভাগ প্রশ্নের এখনও পর্যন্ত উত্তর পাওয়া যায়নি ৷
আদালতে সিবিআইয়ের তরফে বলা হয়েছে, জীবনকৃষ্ণ সাহা মূলত একজন এজেন্ট হিসেবে কাজ করতেন । কোটি কোটি টাকা তিনি পেয়েছেন এবং কোটি কোটি টাকা তুলে বিভিন্ন প্রভাবশালীদের কাছে তিনি পাঠিয়েছেন । ফলে সিবিআই জানতে চায় যে জীবনকৃষ্ণ সাহা বাজার থেকে কোটি কোটি টাকা তুলে কোন কোন প্রভাবশালীকে আর্থিকভাবে সাহায্য করেছিলেন ?
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার সকালে বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়িতে সিবিআই হানা দেয় ৷ প্রায় 65 ঘণ্টা পর তাঁকে রবিবার গভীর রাতে গ্রেফতার করা হয় ৷ মাঝের সময়ে পুকুরে ফেলে দেওয়া তাঁর দু’টো মোবাইল উদ্ধারেই সবচেয়ে বেশি নজর ছিল সিবিআইয়ের ৷ সূত্রের খবর, রবিবার রাত 2টো 22 মিনিটে এসপি, ডিএসপি-সহ প্রতিনিধি দল জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়িতে চলে যান । তাঁরা প্রত্যকেই কলকাতা থেকে যান ৷ বেশ কিছু নথি তারা খতিয়ে দেখেন । কথা বলেন জীবনকৃষ্ণ সাহার সঙ্গে । এরপরেই ভোর 5টা 20 মিনিট নাগাদ জীবনকৃষ্ণকে নিয়ে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেন সিবিআইয়ের শীর্ষকর্তারা । তাঁর স্ত্রী ও নিকট আত্মীয়রা বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন ।
প্রথমে তাঁকে নিজাম প্যালেসে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ সেখান থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে ৷ তার পর তাঁকে আলিপুর আদালতে পেশ করা হয় ৷ আদালতের থেকে হেফাজতে নিয়ে তাঁকে আবার সিবিআই নিজাম প্যালেসে নিয়ে আসে ৷
আরও পড়ুন: প্রায় 72 ঘণ্টা পর অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার জীবনকৃষ্ণের দ্বিতীয় মোবাইল