কলকাতা, 21 এপ্রিল : লকডাউনের পর থেকে ক্রমশ বাড়ছে বেকারত্বের সংখ্যা ৷ বহু মানুষ ইতিমধ্যে কর্মহীন হয়ে পড়েছে ৷ লকডাউন উঠে যাওয়ার পর আরও মানুষ কাজ হারাবে ৷ এই আশঙ্কার কথা বলেছিলেন CPI(M)-র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সীতারাম ইয়েচুরি ৷ লকডাউনের এক মাস পূর্ণ হবে চলতি সপ্তাহে ৷ সীতারাম ইয়েচুরির কথার রেশ ধরে রাজ্যে CITU নেতৃত্ব জানিয়েছে, 25 মার্চ দেশে লকডাউন ঘোষণার দিন বেকারত্বের হার ছিল 7.55 শতাংশ ৷ ঠিক 25 দিন বাদে 18 এপ্রিল সেই বেকারত্বের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে 20.34 শতাংশ । দেশের বেকারত্বের হার বেড়েছে অসংগঠিত ক্ষেত্রে বেশি । দেশের অসংগঠিত শ্রমিকদের বেশিরভাগেরই কোনও সামাজিক সুরক্ষা নেই । লকডাউনের 25 দিনে দেশে বেকারত্ব তিনগুণ হারে বেড়েছে । সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমি (CMIE) প্রকাশিত সমীক্ষা রিপোর্টের এই তথ্য তুলে ধরে উদ্বিগ্ন এ রাজ্যের শ্রমিক সংগঠনগুলি ।
লকডাউন ঘোষণার আগে শ্রমিকদের জীবিকার সুরক্ষায় কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় লকডাউনের মেয়াদ যত বৃদ্ধি পেয়েছে, বেকারত্বও বেড়েছে, মানুষের দুর্দশা আরও তীব্র হয়েছে । CITU-র রাজ্য সম্পাদক অনাদি সাহু বলেন, "লকডাউনের প্রথম তিন সপ্তাহে দেখা যাচ্ছে বেকারির হার 7.55 শতাংশ থেকে দ্বিগুণ বেড়ে 15 শতাংশ হয়েছে । বাকি চারদিনে সেই বেকারত্বের হার তিনগুণ বেড়ে হয়েছে 20.34 শতাংশ । বেকারত্ব বেশি বেড়েছে শহরাঞ্চলে । বেকারত্বের হার বেড়ে হয়েছে 21.75 শতাংশ । গ্রামাঞ্চলে বেড়ে হয়েছে 19.71 শতাংশ । কাজ হারিয়ে বেকার হয়েছেন দিন মজুরির কাজ করা শ্রমিকরা । দেশের অর্থনীতির অবস্থা ভয়ংকর । দ্রুত ঘুরে দাঁড়ানোর কোনও সম্ভাবনাই নেই । সরকারকেই অর্থনীতি চাঙ্গা করার উদ্যোগ নিতে হবে ।"
ভারতে বেকারত্ব এই ভয়াবহ আকার নেবে তা এক সপ্তাহ আগে আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংগঠন জানিয়েছিল বলে মন্তব্য করেন CITU-র সভাপতি সুভাষ মুখোপাধ্যায় । তিনি জানান, দেশের সিংহ ভাগ শ্রমিক রয়েছেন অসংগঠিত ক্ষেত্রে । বর্তমানে এই অসংগঠিত শ্রমিকের সংখ্যা 40 কোটি । কোরোনা বিপর্যয়ে সবচেয়ে দুর্দশায় পড়বেন তারাই । এই অসংগঠিত শ্রমিকদের বেশিরভাগ কাজ হারিয়ে চরম দারিদ্র্যে তলিয়ে যাবে । এই বিপর্যয়ে অসংগঠিত শ্রমিকদের 23 শতাংশ হারে বেকারত্ব বাড়বে । শহরে এই বেকারত্বের হার বেড়ে হবে 31 শতাংশ । কেবল অসংগঠিত দিনমজুরের কাজ যাবে তা নয়, স্থায়ী চাকরি হারাবেন শ্রমিকরা । দেখা যাচ্ছে আনুমানিক 19.50 কোটি স্থায়ী শ্রমিক তাদের কাজ হারাবেন ।