দিল্লি, 4 জুলাই : এতদিন পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে মামলার রায় পাওয়া যেত শুধুমাত্র ইংরেজিতে । তবে চলতি মাসের শেষ থেকে সাতটি আঞ্চলিক ভাষাতে পাওয়া যাবে মামলার রায় । সেগুলি হল অহমিয়া, হিন্দি, কন্নড়, মরাঠি, ওড়িয়া, তেলুগু ও তামিল । তবে এই ভাষার মধ্যে বাংলাকে অন্তর্ভুক্ত না করায় অখুশি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান ও বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী । বাংলাতেও যেন মামলার রায় তর্জমা করা হয়, এই আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে চিঠি পাঠালেন তাঁরা ।
বাদী ও বিবাদী দুই পক্ষই মামলার স্টেটাস সম্পর্কে যাতে ওয়াকিবহাল থাকতে পারে ও তাদের যেন আইনজীবীদের উপর ভরসা করতে না হয়, এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে আঞ্চলিক ভাষায় মামলার রায় তর্জমার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় । সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রি বিভাগের আধিকারিকরা জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ এই কাজের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ ইতিমধ্যেই দিয়েছেন ।
মামলার রায় বাংলায় তর্জমায় করা হবে না জেনে দুঃখ প্রকাশ করেছেন আবদুল মান্নান । তিনি বলেন, "বাংলা ভাষাকে গুরুত্ব না দেওয়ার বিষয়টি দুঃখের । দুঃখের সঙ্গে বলতে বাধ্য হচ্ছি, বাংলা ভাষাকে এক্ষেত্রে বাদ দেওয়ার পিছনে কোনও যুক্তি আমরা খুঁজে পাইনি । বাংলা ভাষাকে বাদ দেওয়ার প্রতিবাদ করছি।"
একই সুর শোনা যায় সুজন চক্রবর্তীর গলাতেও । তাঁর কথায়, "ভারতবর্ষের সংবিধানে স্বীকৃত ভাষাগুলির মধ্যে সব থেকে সমৃদ্ধ বাংলা । জাতীয় সংগীত বাংলা ভাষায় রচিত । দেশের প্রধান দেশাত্মবোধক সংগীত বন্দেমাতরমও বাংলা ভাষাতেই লেখা । বাংলা ভাষা দিবসকেই আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে রাষ্ট্রসংঘ । আমাদের দেশে বাংলাই একমাত্র ভাষা, যে ভাষায় রচিত সাহিত্য নোবেল পেয়েছে । হিন্দির পরই সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা বাংলা । ফলে বাংলা ভাষাকে বাদ দেওয়ার কোনও যুক্তিগ্রাহ্য কারণ আমরা খুঁজে পাচ্ছি না ।"
আবদুল মান্নান ও সুজন চক্রবর্তী জানান, বাম ও কংগ্রেস যৌথভাবে দেশের শীর্ষ আদালতের পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্ট ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকেও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে চিঠি দিয়েছে ।