কলকাতা ও জলপাইগুড়ি, ৯ মার্চ : রাজনীতির আবর্তে কলকাতা হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চের উদ্বোধন। বেঞ্চের উদ্বোধন নিয়ে শুরু হয়েছে BJP বনাম তৃণমূলের কাজিয়া। জলপাইগুড়ি জেলা সহ সমগ্র উত্তরবঙ্গের বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল সার্কিট বেঞ্চ। তাই বেঞ্চ চালুর কৃতিত্ব কার, তা নিয়ে আসন্ন লোকসভা ভোটের আগে কেন্দ্রের শাসক দলের সঙ্গে রাজ্যের শাসক দলের তথা মোদি বনাম মমতার দ্বৈরথ তুঙ্গে উঠেছে।
গতকালই ময়নাগুড়ির চূড়াভাণ্ডারে এক জনসভা থেকে জলপাইগুড়িতে সার্কিট বেঞ্চের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। জনসভায় সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে এই উদ্বোধন হয়। যদিও রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে বিষয়টির বিরোধিতা করা হয়। আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক প্রশ্ন তোলেন, "কীভাবে দলীয় জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী সার্কিট বেঞ্চের উদ্বোধন করেন?"
যদিও তৃণমূলের বিরোধিতাকে গুরুত্ব দেয়নি BJP। এদিকে শিয়রে লোকসভা ভোট। তাই রাজ্যের শাসকদলও বিষয়টিকে এত সহজে ছেড়ে দিতে নারাজ। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠমহলে বলেছেন, "জলপাইগুড়িতে সার্কিট বেঞ্চের জন্য জমি দিয়েছে রাজ্য সরকার। তা ছাড়া সার্কিট বেঞ্চের পরিকাঠামো তৈরি করতে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা খরচ করেছে রাজ্য। তাই রাজ্য সরকারই উদ্বোধন করবে সার্কিট বেঞ্চের। হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ হবে অথচ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে ডাকা হবে না, রাজ্য সরকারের কোনো প্রতিনিধিকে ডাকা হবে না, সেটা অসম্ভব ব্যাপার।"
প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ক্ষোভ উগরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "সস্তার রাজনীতি করছেন মোদি। কোনও কাজ কেন্দ্রীয় সরকার করেনি। সামনে নির্বাচন। তাই বিভিন্ন রাজ্যের তরফে যে কাজ করা হয়েছে, সেগুলোকে নিজের নাম দিয়ে চালানোর চেষ্টা করছেন মোদি।"
যদিও BJP-র জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, "প্রধানমন্ত্রী সার্কিট বেঞ্চের উদ্বোধন করে দিয়েছেন। আবার কীভাবে উদ্বোধন হবে? এখন ওনার (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) বাসনা হয়েছে তাই তিনি ফের উদ্বোধন করবেন। সার্কিট বেঞ্চ নিয়ে নোংরা রাজনীতি করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।"
এদিকে, রেজিস্ট্রার জেনেরাল ইন চার্জের তরফে গতকাল জারি করা এক নোটিফিকেশনে জানানো হয়েছে, আগামী ৯ মার্চ জলপাইগুড়িতে কলকাতা হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চের উদ্বোধন হবে এবং ১১ মার্চ থেকে বেঞ্চের কাজ শুরু হবে। সূত্রের খবর, ৯ মার্চ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ছাড়াও থাকতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে জলপাইগুড়ির জেলাশাসক শিল্পা গৌরীসারিয়া আজ জানান, জেলা প্রশাসনের কাছে এখনও উদ্বোধন সংক্রান্ত নির্দেশিকা এসে পৌঁছয়নি।