কলকাতা, 13 অগাস্ট : প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর থেকে আগেই স্থগিতাদেশ তুলে নিয়েছিল সুপ্রিমকোর্ট ৷ এবার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের আর্জি খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ বিচারপতি সম্বুদ্ধ চক্রবর্তী ও হিরণ্ময় ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চ আজ এই সিদ্ধান্ত জানান ৷
2014 সালে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ৷ জানানো হয় 2015-র 11 অক্টোবর হবে TET-এর লিখিত পরীক্ষা ৷ পরীক্ষায় বসেন প্রায় 23 লাখ প্রার্থী ৷ পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর কয়েকজন প্রার্থী RTI করেন ৷ তাঁরা জানতে পারেন, 11 টি প্রশ্নের মাল্টিপল প্রশ্নের সম্ভাব্য উত্তর হিসেবে যে চারটি অপশন ছিল তার সবকটিই ছিল ভুল ৷ এরপর শতাধিক TET-এ অসফল প্রার্থী সঠিক তদন্তের জন্য হাইকোর্টে মামলা করেন ৷
বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় এই মামলার জন্য বিশ্বভারতীর উপাচার্যর কাছে এক্সপার্ট ওপিনিয়ন চেয়েছিলেন ৷ তার জন্য বিচারপতি উপাচার্যকে এক্সপার্ট কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেন ৷ যদি সেই কমিটি জানায় প্রশ্নপত্র ভুল তাহলে সেই অনুযায়ী রাজ্য সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে ৷ এই রিপোর্ট বিশ্বভারতীকে খামবন্দী করে দিতে বলে হাইকোর্ট ৷ সেইমতো রিপোর্ট দেয় বিশ্বভারতী ৷ জানা যায়, 6 টি প্রশ্নের উত্তর ভুল ছিল ৷ এরপরই 3 মাসের মধ্যে সমস্ত পদ্ধতি মেনে মামলাকারীদের নিয়োগের নির্দেশ দেন বিচারপতি ।
বসির আহমেদ নামে এক চাকরিপ্রার্থী এরপর হাইকোর্টের বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন জানান । বসির দাবি করেন, যেহেতু 2014-এ তিনিও পরীক্ষা দিয়েছেন তাই 6 টি প্রশ্নের উত্তর ভুল থাকায় তাঁর নম্বর বাড়বে ৷ কিন্তু সিঙ্গল বেঞ্চে না গিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করার কারণ জানতে চেয়ে আদালত তাঁকে প্রশ্ন করে ৷ এরপর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে বসির আহমেদ নিয়োগের দাবিতে সুপ্রিমকোর্টে মামলা করেন ৷
সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও হেমন্ত গুপ্তার ডিভিশন বেঞ্চ ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর স্থগিতাদেশ জারি করেন । পরে 1 এপ্রিল পুরো বিষয় শোনার পর সুপ্রিমকোর্ট জানায়, যেহেতু মূল মামলাটি হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে বিচারাধীন তাই সেখানেই মামলাটির নিস্পত্তি করতে হবে । পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর যে স্থগিতাদেশ ছিল সেটাও তুলে নেয় সুপ্রিমকোর্ট ।
প্রাইমারি শিক্ষা পর্ষদের তরফে বিচরপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন জানানো হয় ৷ তার পরিপ্রেক্ষিতেই আজ আবার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের মামলাটি বিচারপতি সম্বুদ্ধ চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চে ওঠে । প্রাইমারি শিক্ষা পর্ষদের সেই আবেদন আজ খারিজ করে দিল ডিভিশন বেঞ্চ ।